ফিরে দেখা ১৯৯৯ - মাঠে ও মাঠের বাইরে ঐতিহাসিক যুদ্ধ! পাকিস্তানকে কী ভাবে দুরমুশ করেছিল ভারত
১৯৯৯ সালে, কার্গিল যুদ্ধ চলাকালীন, ভারত বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক ম্যাচ খেলেছিল। ফিরে দেখা যাক সেই ম্যাচ।
১৯৯৯ আর ২০১৯। মাঝে ২০টা বছরের ফারাক, কিন্তু আশ্চর্য মিল দুই সময়ের। আবারও সেই ইংল্যান্ডের মাটিতে বসছে ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর। ম্যাঞ্চেস্টারেই মুখোমুখি হওয়ার কথা ভারত ও পাকিস্তানের। আর ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের মতো এই বারেও পুলওয়ার সন্ত্রাসবাদী হামলার পর গনগনে হয়ে রয়েছে দুই দেশের রাজনৈতিক-কূটনৈতিক সম্পর্ক।
১৯৯৯ সালের মে মাসে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছিল পাক সেনা। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের মুখোমুখি হওয়ার পরই শুরু হয়েছিল যুদ্ধ। যা শেষ হয়েছিল ২৬ জুন ভারতীয় সেনা টাইগার হিল পুলর্দখলের পরে। আর আইসিসি বিশ্বকাপ ১৯৯৯ শুরু হয়েছিল ১৪ মে, চলেছিল ২০ জুন পর্যন্ত। এরই মধ্যে ৮ জুন সুপার সিক্সের ম্য়াচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান।
সেই সময়ও ভারতে সরকারে ছিল এনডিএ। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। কার্গিলে যখন দেশের অখণ্ডতা রক্ষা করতে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা লড়াই করছেন, সেই সময়ও কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ম্য়াচ বাতিল হয়নি, বরং মাঠের বাইরের মতো মাঠের ভিতরেও পাকিস্তানকে দুরমুশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাজপেয়ী-সরকার।
কাজেই কার্গিল থেকে প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার দূরে ২২ গজের যুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিল মহম্মদ আজহারউদ্দিন ও ওয়াসিম আক্রমের দল। শুক্রবারই আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯-এ ভারত-পাক ম্য়াচ খেলা না খেলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসছে বিসিসিআই-এর প্রশাসনিক কমিটি। এদিনই কংগ্রেস নেতা শশী থারুর কার্গিল যুদ্ধের সময়ের এই ম্যাচের প্রসঙ্গ টেনে ম্যাচ খেলার সপক্ষে বার্তা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে একবার ফিরে দেখা যাক মাঠের ভিতরের সেই লড়াইয়ে কী ঘটেছিল।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক আজহারউদ্দিন। চোটের জন্য খেলেননি নিয়মিত ওপেনার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতের শুরুটা কিন্তু মোটেই ভাল হয়নি। তবে তখনরকার বেশিরভাগ ম্য়াচের মতোই মূল্যবান ৪৫ রান যোগ করে ভারতের ইনিংসের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকার।
তারপর মিডল অর্ডারে রাহুল দ্রাবিড় ও মহম্মদ আজহারউদ্দিন যথাক্রমে ৬১ ও ৫৯ রান করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। সব মিলিয়ে ভারত ৫০ ওভারে ৬ উউইকেট হারিয়ে ২২৭ রান করেছিল। তখবনকার দিনেও রানটা মোটেই বড় ছিল না।
জবাবে সইদ আনোয়ার (৩৬), ইনজামাম (৪১) ও মইন খান (৩৪) রান পেলেও শাহিদ আফ্রিদি, ইজাজ আহমেদ সেলিম মালিক-সহ বাকি ব্যাটিং ব্যর্থ হওয়ায় পাকিস্তান ৪৫.৩ ওভারে মাত্র ১৮০ রানই গুটিয়ে গিয়েছিল। ২৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন বেঙ্কটেশ প্রসাদ। ৩ উইকেট নেন জাভাগাল শ্রীনাথ, আর ২টি উইকেট নিয়েছিলেন অনিল কুম্বলে।
যুদ্ধের আবহেও এই ম্যাচ প্রমাণ করে দিয়েছিল, চাইলেই রাজনীতি ও ক্রীড়া জগতকে আলাদা রাখা যায়।