পৃথ্বী একাই নন, বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের এই বিস্ময়-বালকদের প্রত্যেকের মধ্যে আছে তারকা হওয়ার মশলা
বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের ৪ জন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বিস্ময়বালক।
মাত্র ১৮ বছর ৩২৯ দিন বয়সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন পৃথ্বী শ। আর প্রথম ইনিংসেই দুর্দান্ত শতরান করে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন ক্রিকেটে বয়সে কিছু এসে যায় না। খেলায় কে কতটা পরিণতি দেখাতে পারছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
পৃথ্বীর ভবিষ্যত যে অত্যন্ত উজ্জ্বল এ নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর হল এই মুহূর্তে ক্রিকেট বিশ্বে কিন্তু পৃথ্বী একাই নন, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অতি অল্প বয়সেই দাপট দেখাচ্ছেন বেশ কয়েকজন টিনএজ ক্রিকেটার। অদ্ভুতভাবে তাঁরা প্রত্যেকেই এশিয়ারই ক্রিকেটার। শুরুতে যে প্রতিশ্রুতি তাঁরা দেখিয়েছেন তা তাঁরা পরবর্তীকালে ধরে রাখতে পারবেন কিনা তা ভবিষ্যত বলতে। আপাতত এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই উত্তেজক তরুণ ক্রিকেটারদের।
শাহিন আফ্রিদি
একেক সময় মনে হয় পাকিস্তানে বোধহয় জোরে বোলারের কারখানা আছে। একের পর এক বিশ্বমানের জোরে বোলার তাঁরা উপহার দিয়ে যায় বিশ্ব ক্রিকেটকে। তার নবতম সংযোজন শাহিন আফ্রিদি।
অতি দ্রুতই তিনি নিজেকে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল প্রতিভা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচেই তিনি ৩৯ রানে ৮ উইকেট দখল করে প্রথম প্রচারের আলোয় এসেছিলেন। তারপর থেকে তাঁর খ্যাতি ক্রমেই বেড়েছে। পিএসএল-এ তিনি টি২০ ম্যাচে ৫ রানে ৪ উইকেট নেন।
সেখান থেকে পাকিস্তান জাতীয় দলেও জায়গা পেয়ে গিয়েছেন। এখনও হাতে গোনা ম্যাচে খেলার সুযোগ পেলেও তার মধ্যেই তাঁর বলের গতি, তার আগ্রাসন সবার নজর কেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপেও তিনি পাকিস্তান দলে ছিলেন।
সন্দীপ লামিছানে
সন্দীপকে ভারতীয়রা হয়তো চেনেন আইপিএল-এর দৌলতে। হয়ত বিশ্ব ক্রিকেটে কোনওদিনই তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা পাওযা হবে না। কারণ তিনি নেপালের ক্রিকেটার। বস্তুত নেপাল ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে এই তরুণের হাত ধরেই।
নেপালের
হয়ে
অ্যাসোসিয়েট
দেশগুলির
বিরুদ্ধে
দারুণ
সাফল্য
পেয়েছেন
তিনি।
লিস্ট
এ
ক্রিকেটে
মাত্র
২৪
ম্যাচে
তিনি
৫০
উইকেট
দখল
করেছেন।
পাশাপাশি
বিভিন্ন
দেশের
টি২০
লিগেও
সফল
তিনি।
আইপিএল-এ
দিল্লি
ডেয়ারডেভিলস
দলের
হয়ে
খেলেন
তিনি।
গতবার
মাত্র
৩টি
ম্যাচে
খেলার
সুযোগ
পেয়েছিলেন।
তাতে
৬.৮৩
ইরোনমি
রেটে
৫
উইকেট
নেন।
এরপর
ক্যারিবিয়ান
লিগেও
সেন্ট
কিটস
ও
নেভিস
প্যাট্রিয়টসদের
হয়ে
৫
ম্যাচে
৬.২৩
ইকোনমিতে
৭
উইকেট
দখল
করেন।
পৃথ্বী শ
পৃথ্বী শ-এর উত্থানই এই লেখার অনুপ্রেরণা। কাজেই নতুন করে তাঁর স্পর্কে বলার কিছু নেই। মুম্বইবাসী তাঁর খেলা দেখেছে একেবারে স্কুল ক্রিকেট থেকে। ভারতবাসী তাঁকে চিনেছিল ২০১৬ সালে রঞ্জি অভিষেক থেকে। তবে ক্রিকেট বিশ্ব তাঁকে চিনেছে এই বছরের শুরু থেকে।
সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এই বছরের শুরুতে তিনি ভারতের অনুর্ধ ১৯ দলকে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ জেতান। তারপর আইপিএল-এ দেখা গিয়েছিল তাঁর দুর্দান্ত স্ট্রোকপ্লের ঝলক। আর তারপর আজ থেকে ৪ দিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেকে তিনি বিশ্বকে তাঁর আবির্ভাবের জানান দিয়ে দিয়েছেন।
মুজিব উর রহমান
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতেই এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রতিভাবান টিনএজ ক্রিকেটার আফগানিস্তানের এই ১৭ বছরের রহস্য স্পিনার। তাঁর উত্থান ঘটেছিল কয়েক মাস আগের অনুর্ধ ১৯ এশিয়া ও বিশ্বকাপে। গাদা গাদা উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। আর তার কয়েক মাস যেতে না যেতেই তিনি এখন বিশ্ব ক্রিকেটের এই মুহূর্তের অন্যতম সেরা স্পিনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন।
এশিয়া কাপ চলাকালীনই বয়স ২০ হয়ে যাওয়ায় আরেক আফগান স্পিনার রশিদ খানকে এই তালিকায় রাখা যায়নি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে মুজিব আফগান দলকে এমন আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন যে বিশ্ব ক্রিকেটে আর কোনও দলকেই ভয় পাচ্ছে না আফগানিস্তান।
আইপিএল-এও তিনি যথেষ্ঠ প্রভাবিত করেছেন। ১১ ম্যাচে ৬.৯৯ ইকোনমি নিয়ে পেয়েছিলেন ১৪ উইকেট। আর ইংল্যআন্ডের টি২০ ব্লাস্টে তিনি ১২ ম্যাচে পান ৯ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও মাত্র ২৩টি একদিনের ম্যাচে তিনি ৪৪ উইকেট দখল করেছেন। ৭টি আন্তর্জাতিক টি২০তে পেয়েছেন ৯ উইকেট।