ভারতের বিরুদ্ধেই অভিষেক, আর ভারতের বিরুদ্ধেই শেষ টেস্ট খেলবেন কুক
ভারতের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে টেস্টে অভিষেক ঘটেছিল অ্যালিস্টার কুকের। মার্চ মাসের ১ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত চলা সেই টেস্টে কুকের পারফরম্যান্সে বুদ হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব।
ভারতের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে টেস্টে অভিষেক ঘটেছিল অ্যালিস্টার কুকের। মার্চ মাসের ১ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত চলা সেই টেস্টে কুকের পারফরম্যান্সে বুদ হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। ক্রিকেট আঙিনায় ইংল্যান্ডের জার্সি পরে এক নতুন কিংবদন্তির যে আগমন ঘটেছে তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তাবড় ক্রিকেট বোদ্ধাদের।
প্রথম ইনিংসে ১৬০ বল খেলে ৬০ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন কুক। মেরেছিলেন ৭টি চার। দ্বিতীয় ইনিংসে করেন অপরাজিত শতরান। দ্বিতীয় ইনিংসে এই শতরানের ইনিংস খেলতে ২৪৩টি বল নিয়েছিলেন তিনি। অ্য়ালিস্টার কুক যে সময় ইংল্য়ান্ডের জাতীয় ক্রিকেট দলে অভিষেক ঘটান সে সময় একটা সঙ্কট চলছিল। ইংল্য়ান্ড ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্স ক্রমশই খারাপ হচ্ছিল। দলে সেভাবে প্রতিভাবান প্লেয়ার ছিলেন না যারা ভবিষ্যতে ইংল্য়ান্ড ক্রিকেটের পুরনো গৌরব ফিরিয়ে দিতে পারতেন। এককালে যে লর্ডস টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম দিন থেকে খচাখচ ভরে থাকত সেখানে একের পর এক ফাঁকা আসনগুলো যেন ক্রিকেট বিশ্বে হাহাকার তৈরি করেছিল।
কুকে বাঁ-হাতের শৈল্পিক ব্যাটিং যেন নতুন এক আশার আলো সঞ্চার করেছিল ইংল্য়ান্ডের ক্রিকেট আঙিনায়। শুধুমাত্র কুকের ব্যাটিং দেখতে আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলিতে ফের ভিড় জমতে থাকে ইংল্য়ান্ডের ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলিতে।
কুকের পিছন পিছন-ই ইংল্য়ান্ড ক্রিকেট টিম পেতে থাকে একের পর এক প্রতিভা। ইংল্যান্ডের অধিনাক হিসাবে ব্রিটিশ ক্রিকেট-কে তাঁর পুরনো উচ্চতায় ফিরিয়ে আনেন কুক। ক্রিকেট কেরিয়ারে এখন পর্যন্ত ১৬০টি টেস্ট খেলেছেন। রান করেছেন ১২,২৫৪। সর্বোচ্চ ২৯৪ রান ভারতের বিরুদ্ধে। গড় ৪৪.৮৮। স্ট্রাইক রেট ৪৬.৯৭। একদিনের ম্যাচ খেলেছেন ৯২টি। রান ৩২০৪। সর্বোচ্চ ১৩৭ রান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রহ করেছিলেন কুক। টি-২০ ক্রিকেটে ৪টি ম্যাচ খেলেছিলেন কুক। সর্বোচ্চ রান ২৬। বলও করেন কুক। ১টি মাত্র উইকেট পেয়েছেন তিনি।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ২২৮টি ম্যাচ খেলেছেন কুক। করেছেন ২২,৩৮৬রান। ভারতের বিরুদ্ধে শেষ চারটি টেস্টে কুকের পারফরম্যান্স তেমন কিছু নয়। বহুদিন থেকেই কুকের পরতি ফর্ম নিয়ে বিতর্ক চলছিল। প্রায় ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যাটিং ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছেন কুক। যার জেরে অধিনায়কত্ব থেকেও ইস্তফা দিতে হয় তাঁকে। ২০১৬ সালে ভারতের কাছে ৪-০ ফলে টেস্ট সিরিজে হারের পরই কুক অধিনায়ক পদ থেকে এই ইস্তফা দিয়েছিলেন। কুকের ক্রিকেট কেরিয়ারে ভারত নামটা বরাবরই একটা গুরুত্ব পেয়ে এসেছে। অভিষেকে যেমন ভারতের বুকে দুরন্ত পারফরম্য়ান্স করেছিলেন। তেমনি অধিনায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার ক্ষেত্রেও ভারতের সঙ্গে হওয়া টেস্ট সিরিজ তাঁকে সাহায্য করেছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে সেই ভারতের কাছে টেস্ট সিরিজ খোয়ান তিনি।
[আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর অ্যালিস্টার কুকের, দিলেন এক অসামান্য বার্তা]
ইংল্যান্ডের সর্বকালের অন্য়তম সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় রয়েছেন গ্রাহাম গুচ। তাঁর শিষ্য অ্যালিস্টার কুকও কিন্তু এই তালিকায় ঢুকে পড়েছেন। সন্দেহ নেই অ্য়ালিস্টার কুকের মতো এক উচু জাতের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের অভাব ক্রিকেট বিশ্ব ভালোভাবেই অনুভব করবে।