জাম্বোর পারফেক্ট ১০, ১৫ পেরিয়েও স্মৃতিতে অম্লান ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের
নয় নয় করে ১৫ টা বছর পেরিয়ে গেল সেই ঐতিহাসিক মাইলস্টোন। যেদিন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে পারফেক্ট টেনে-র বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন অনিল কুম্বলে।
নয় নয় করে ১৫ টা বছর পেরিয়ে গেল সেই ঐতিহাসিক মাইলস্টোন। যেদিন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে পারফেক্ট টেনে-র বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন অনিল কুম্বলে। কুম্বলের আগে একমাত্র ইংল্যান্ডের জিম লেকর টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন:খালিদ বলছেন যাই-যাই, ফাঁপড়ে ইস্ট কর্তারা, ময়দানের নয়া পালা ]
দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে দশ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন তিনি।তাঁর শেষ উইকেট ছিল পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম। ক্রিকেটে বোলিং করেন যাঁরা তাঁরা সবসময়েই এই স্বপ্ন নিয়ে মাঠে আসেন যদি ১০ উইকেট নিজের পকেটে পুড়ে নিতে পারেন। পারফেক্ট টেনের স্বপ্ন কুম্বলেও দেখেছিলেন। তবে তিনি তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবের সঙ্দে মিলিয়ে দিয়েছিলেন। যার জন্য আজও বিশ্ব ক্রিকেটে তাঁর পারফেক্ট টেন কে কুর্নিশ করা হয়।
যদিও কুম্বলে নিজের সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ -র এই বিরল কৃতিত্বকে অদৃষ্টের বিধিলিপি বলে মনে করেন। সেই ম্যাচে জয়ের জন্য ৪২০ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলেন, কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ৬০.৩ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। ২১২ রানে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। পাকিস্তানের হাতে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য দু দিনের সময় ছিল। উইকেট একটু একটু করে ভাঙছিল। টার্গেট যে বড় দেওয়া হয়েছে বুঝে গিয়েছিল ভারত। মধ্যাহ্ন ভোজের আগে অবধি সৈয়দ আনোয়ার ও শহিদ আফ্রিদির ওপেনিং পার্টনারশিপ ভাঙতে পারেনি ভারত। স্কোরবোর্ডে ছিল ১০০ -র ওপর রান। টার্গেট তখন অনেক দূর হলেও সেসময় টিম ইন্ডিয়ার মূল লক্ষ্য ছিল পার্টনারশিপ ভাঙা। আজ পনেরো বছর অতিক্রান্ত হলেও সেদিনের প্রতি মুহূর্তের স্মৃতি উজ্জ্বল জাম্বোর মনে। কুম্বলে জানিয়েছেন সে সময়ই তিনি স্থির করে দিয়েছিলেন নিজের খেলাটাকে অন্য় স্তরে নিয়ে যেতে হবে। পিচের যা অবস্থা তাতে একটা নতুন ব্যাটসম্যানের মানিয়ে নিতে খুবই অসুবিধা হবে। একটা উইকেট পড়লেই পুরো পাকিস্তান শিবিরের মেরুদন্ড কেঁপে যাবে এটা বোঝা যাচ্ছিল। এতে সামাণ্য তুকতাকের শুরু করেন সচিন তেন্ডুলকর। একটা ওভারের আগে আমার সোয়েটার ও টুপি ও আম্পায়ারের কাঁধে দিয়ে দেয়। এটা করলে উইকেট পড়ার চল ছিল। আর হয়ও তাই শহিদ আফ্রিদি আউট হয়ে যান।
কুম্বলে আজও মনে করতে পারেন কিভাবে তাঁর সতীর্থরা তাঁর নামের পাশে দশ উইকেট বসানোর জন্য উত্তেজিত হয়েছিলেন। যাতে পারফেক্ট ১০ হয়। চায়ের পর সপ্তম উইকটেটি পড়ে। আট ও ন নম্বর উইকেট দুটি পরপর দুটি বলে পড়ে যায়। তখন গোটা দলই যেন কুম্বলের দশ নম্বর উইকেটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। জাম্বো এও বলেছেন, জাভাগাল শ্রীনাথের মতো বোলার খারাপ ভাবে বল করছিলেন যাতে তিনি কোনও উইকেট না পেয়ে যান। কুম্বলে আরও বলেছেন, 'যে বলটা ম্যাচ শেষ করেছিল,সেটা পারফেক্ট লেংথে পড়েছিল, ওয়াসিমের ব্যাটের কানা লেগে বেরিয়ে যায়, লক্ষ্মণ শর্ট লেগে উইকেটে নিয়ে নেন। এরপর কী হয়েছিল আর মনে নেই। '
এদিকে কুম্বলের এই মাইলস্টোনকে কুর্নিশ জানিয়ে আইসিসি নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছাবার্তাও পোস্ট করেন।