মুস্তাফিকুর রহিমের লড়াকু শতরান, তামিমের অনন্য দেশপ্রেমে মালিঙ্গা ঝড় সামলাল বাংলাদেশ
এশিয়া কাপ ২০১৮ শ্রীলঙ্কার বনাম বাংলাদেশ ম্যাচে বাংলাদেশ ৪৯.৩ ওভারে ২৬১ রানে তাদের ইনিংস শেষ করল।
প্রথম ইনিংস থেকেই জমে উঠল এশিয়া কাপ। একদিকে মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে মালিঙ্গা বিশ্বকে জানান দিলেন তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। অপরদিকে ভাঙা হাত নিয়েও ব্যাট করতে নেমে অসাধারণ দেশপ্রেমের সাক্ষর রাখলেন তামিম ইকবাল। আর একক লড়াইতে বাংলাদেশ ইনিংসকে ২৬৬ রানে পৌঁছে দিলেন মুস্তাফিকুর রহিম।
দিনের শুরুটা অবশ্য বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত হতাশা জনক ছিল। প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানের উইকেট ফেলে মাত্র ১ রানে বাংলাদেশের দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ভয়ঙ্কর মালিঙ্গা। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তখনও আরও বড় ধাক্কা অপেক্ষা করে ছিল।
পরের ওভারেই সুরঙ্গা লাকমলের একটি বল পুল করতে গিয়ে হাতে আঘাত পান বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের প্রধান ভরসা তামিম ইকবাল। মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। পরে জানা যায় তাঁর কবজির হার ভেঙে গিয়েছে। টুর্নামেন্টেরই বাইরে চলে গেলেন তিনি।
প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে পর পর উইকেট নেওয়ায় মালিঙ্গার সামনে হ্যাট্রিকের সুযোগ ছিল। তা প্রায় করেও ফেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার ফাস্ট বোলার। তাঁর বল মহম্মদ মিঠুনের ব্যাটের টপ এজে লেগে গিয়েছিল অধিনায়ক অ্যাঞঅজেলো ম্যাথুসের কাছে। কিন্তু সামনে ধাঁপিয়ে পডেও ম্যাথুস তা তালুবন্দী করতে পারেননি।
প্রথম কয়েক ওভার বাংলাদেশকে একেবারে বোতলবন্দী করে রেখেছিলেন মালিঙ্গা ও লাকমল। রান প্রায় করতেই পারছিলেন না রহিম ও মিঠুন। বাংলাদেশ ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি আসে ইনিংসের ৪৮তম বলে।
এরপরেই মুস্তাফিকুর রহিমকে তুলে নেওয়ার সুযোগ এসেছিল শ্রীলঙ্কার সামনে। কিন্তু স্কোয়্যার লেগে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন দিলরুয়ান পেরেরা। মুস্তাফিকুরই কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান। ওই সময় তাঁকে ফুরুযে দিতে পারলে বাংলাদেশের সামনে আর ম্যাচে ফেরার সুযোগ তাকত না।
এরপর শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা আক্রমণে আসতেই বাংলাদেশের ব্য়াটসম্য়ানরা খেলাটা ধরে নিয়েছিলেন। আস্তে আস্তে তারা খোলস ছেড়ে বের হন। দিলরুয়ান পেরেরার প্রথম ওভারেই পর পর একটি ৬ ও দুটি ৪ সহ ১৪ রান নেন মহম্মদ মিঠুন। রহিম ও মিঠুনের জুটি বাংলাদেশকে ১০০ রানের গণ্ডি পার করে দেয়। ১ রানে ২ উইকেট থেকে বাংলাদেশের রান ২৫ ওভারে ১৩৪/২ অবধি পৌঁছে দিয়েছিলেন এই দুই অভিজ্ঞ ব্য়াটসম্যান।
কিন্তু এরপরই আবার আক্রমণে ফেরেন মালিঙ্গা। আর তারপরই আবার ধস নামে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে। ভুল শট বাছাই করে নিজের উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন মিঠুন। ভয়ঙ্কর মালিঙ্গার বলে তিনি ছয় মারতে গিয়েছিলেন। কুসল পেরেরার হাতে সহজ ক্যাচ আসে।
এর
পরের
ওভারেই
আপোন্সোর
বলে
১
রান
করেই
ফিরে
যান
মাহমুদুল্লা।
তার
পরের
ওভারেই
ফের
উইকেট
নেন
মালিঙ্গা।
এবারে
তাঁর
শিকার
মোসাদ্দাক
হোসেন।
তিনিও
১
রানের
বেশি
জুড়তে
পারেননি।
মালিঙ্গার
আক্রমণে
ফেরার
পরই
আবার
বাংলাদেশের
রান
তোলার
গতি
পড়ে
যায়।
দমবদ্ধ
অবস্থাটা
পাল্টাতে
চেয়ে
মারতে
গিয়েছিলেন
মেহিদি
হাসান।
কিন্তু
অসাধারণ
রিটার্ন
ক্যাচে
তাঁকে
ফেরান
লাকমল।
২১টি
বল
খেলে
হাসান
করেন
মাত্র
১৫।
৩৪
ওভারে
বাংলাদেশের
রান
দাঁড়ায়
১৭৫-৬।
বেশিক্ষণ
টিকতে
পারেননি
বাংলাদেশী
অধিনায়ক
মাশরাফে
মোর্তাজাও।
ধনঞ্জয়
ডিসিলভার
বলে
১১
রানে
তিনি
ধরা
পড়েন
উপুল
থরঙ্গার
হাতে।
এই যাওয়া-আসার লাইন চললেও উল্টোদিকে একা কুম্ভ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মুস্তাফিকুর রহিম। ৪৪তম ওভারে লাকমলের বল গ্লান্স করে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে একদিনের ক্রিকেটে নিজের ষষ্ঠ শতরান পূরণ করেন বাংলাদেশের উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান।
রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান অবশ্য বেশিক্ষণ প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। ধনঞ্জয় ডিসিলভার বলে ২ রান করে এলবিডব্লু হন রুবেল। তার আগের ওভারেই তাঁর বিরুদ্ধে একটি এলবিডব্লুর আবেদন উঠেছিল। মাঠের আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউতে দেখা যায় বল তাঁর ব্যাটে লেগেছে। কিন্তু ধনঞ্জয়ের বলে ঠিক উল্টো হয়। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউতে তাঁকে আউট দেওয়া হয়।
মুস্তাফিজুর রান আউট হন ১০ রানে। তখন বাংলাদেশের রান ছিল ৪৬.৫ ওভারে ২২৯-৯। বাংলাদেশ ইনিংসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অধ্যায় শুরু হয় এরপরই। সবাই ধরেই নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ইনিংস ২২৯ রানেই শেষ হল। কারণ ভাঙা হাতে তামিম ইকবালের পক্ষে মাঠে নামা সম্ভব ছিল না। কিন্তু সবাইকে বিস্মিত করে ক্রিজে নামেন তামিম। একহাতেই স্টান্স নেন তিনি। ওবারের শেষ বলটি একহাতেই খেলে অসাধারণ দেশপ্রেমের নজির গড়েন তিনি।
বাকি
তিন
ওভার
তামিমকে
আড়াল
করে
মাঠে
রীতিমতো
ধুন্ধুমার
ব্য়াট
করেন
মুস্তাফিকুর
রহিম।
২২৯
থেকে
সেষ
তিন
ওভারে
৩২
রান
তুলে
বাংলাদেশকে
২৬১
রানে
পৌঁছে
দেন
তিনি।
শেষ
পর্যন্ত
১৪৪
রানে
থিসারা
পেরেরার
বলে
৬
মারতে
গিয়ে
কুসল
মেন্ডিসের
হাতে
ধরা
পড়েন
তিনি।
তাঁর
এই
একক
লড়াই
এব
ভাঙা
হাত
নিয়ে
তামিম
ইকবালের
মাঠে
নামা
আগামী
দিনে
ক্রিকেট
রোমান্টিকদের
আলোচনার
বিষয়
হতে
চলেছে।
সেই
সময়
তিনি
মাঠে
না
নামলে
বাংলাদেশ
ইনিংস
থেকে
বাদ
পড়ত
৩২টি
মূল্যূাবান
রান।
এই
রানটাই
ম্যাচের
শেষে
গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে
দাঁড়ায়
কিনা
সেটাই
দেখার।