এশিয়া কাপ ২০১৮, ভেঙে গেল আফগান স্বপ্ন, মরণ কামড় বসালো বেঙ্গল টাইগাররা
এশিয়া কাপ ২০১৮ সুপার ফোর পর্বের আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে মাত্র ৩ রানে জিতল বাংলাদেশ। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লা রিয়াধ।
দুর্ভাগ্য। এছাড়া আফগানদের সম্পর্কে কিছু বলা যায় না। আরও একটি ম্যাচে ফিনিশিং লাইন দেখতে পেয়েও ছুঁতে পারল না তারা। হারতে হল সেই শেষ ওভারে এসে। বাংলাদেশের ২৪৯ রান তাড়া করে ৫০ ওভারে তাদের ইনিংস থমকে গেল ৭ উইকেটে ২৪৬ রানে। মাত্র তিন রানে জয় পেল বাংলাদেশ। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন অলরাউন্ড পারফর্ম করা মাহমদুল্লা রিয়াধ।
সবাই আশা করেছিলেন তীব্র উত্তেজনার ম্যাচ হবে দুবাইয়ে। কিন্তু বাস্তবে সেটা হল আবুধাবির মাঠে। একেবারে উত্তেজনায় হৃৎস্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার মতো একটি ম্যাচের সাক্ষি রইলেন দর্শকরা। এদিন আবু ধাবিতে ছিল মরণ-বাঁচন ম্যাচ। সেই ম্যাচ গড়ালো একেবারে শেষ বল পর্যন্ত। সত্যি বলতে পাকিস্তান ম্যাচে যেমন আফগানরা পাকিস্তান দল নয়, হেরেছিলেন শোয়েব মালিকের কাছে, তেমনই এদিনের ম্যাচে হারলেন মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে।
ব্যাটে ৮১ বলে ৭৪ রান ও পরে বল করে ৫ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ১ উইকেট সঙ্গে আশগর আফগানের দুরন্ত ক্যাচ - ম্যান অব দ্য ম্যাচ নিশ্চিতভাবেই প্রাপ্য মাহমদুল্লার। কিন্তু বাংলাদেশকে জেতালেন মুস্তাফিজুর রহমান।
এতদিন ম্যাচের পর ম্যাচ যেভাবে ইনিংস গড়েছেন আফগানরা, ঠিক সেভাবেই এদিন রানটা তাড়া করেছিলেন তাঁরা। ওপেনার শাহজাদ ৮১ বলে ৫৩ করে যান। মিডল অর্ডারের হাল ধরেছিলেন সেই হাশমতুল্লা শহিদি (৯৯ বলে ৭১) ও অধিনায়ক আশগর আফগান (৪৭ বলে ৩৯)।
শহিদি আউট হন ৪৪তম ওভারে। সেইসময় আফগানিস্তানের রান ছিল ১৯২। অর্থাত আর ৬ ওভারে জেতার জন্য দরকার ছিল ৫৮ রান। এরপরই মারতে শুরু করেছিলেন দুই আফগান ব্যাটসম্যান মহম্মদ নবি ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। ২টি ৪ ও ২টি ৬-এর সাহায্যে নবি মাত্র ২৮ বলে ৩৮ রান করে যান।
৪৮ তম ওভারের তৃতীয় বলে নবি আউট হন। আফগানিস্তান পৌঁছে গিয়েছিল ২৩৮ রানে। কিন্তু এদিন পারেননি রশিদ খান। শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৮ রান। রশিদই ছিলেন স্ট্রাইকে। বল ছিল মুস্তাফিজের হাতে। প্রথম বলে ২ রান হয়। আর তার পরের বলেই রশিদকে দুরন্ত কট অ্যান্ড বোল্ড করেন তিনি। শেষ বলে রান দরকার ছিল ৪। কিন্তু মুস্তাফিজের বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি সামিউল্লা। সেষ অবধি তিনি ১৯ বলে ২৩ করে অপরাজিত থাকেন। কিন্তু আফগানিস্তান পরাজিত হয় ৩ রানে।
মুস্তাফিজের ওই জাদু ওভার না হলে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত ছিল। সব মিলিয়ে তিনি ৪৪ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। অভিষেককারি নাজমূল ইসলাম (৮ ওভারে ২৯ রান) ভাল বল করলেও উইকেট পাননি। মাশরাফে (৬২-২) ২টি এবং সাকিব (৫৫-১) ও মাহমুল্লা (১৭-১) ১টি করে উইকেট পেয়েছেন।
তার আগে ফের কাঁপুনি ধরেছিল বাংলাদেশি ব্যাটিংয়ে। এক সময় ৮৭ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল তাদের। কিন্তু দেশ থেকে উড়ে এসে দলে সুযোগ পেয়েই ইমরুল কায়েস (৮৯ বলে ৭২*) পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন মাহমদুল্লা (৮১ বলে ৭৪)। তাঁদের ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে ১২৮ রান যোগ হয়।
এছাড়া ওপেনার লিটন দাসও (৪৩ বলে ৪১) এতদিনে রান পেয়েছেন। বাল রান করেন মুশফিকুর রহিমও (৫২ বলে ৩৩)। এদিন মুশফিকুর একদিনের ক্রিকেটে তাঁর ৫০০০ রান পূর্ণ করেন।