এশিয়া কাপ, রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ হাসি হাসল পাকিস্তান, জেতালেন ভারতের জামাই
এশিয়া কাপ ২০১৮-র সুপার ফোর পর্বে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান জয় পেল ৩ উইকেটে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন শোয়েব মালিক।
আফগান ক্রিকেটের আরও এক নতুন অধ্যায় লেখা হতে হতেও হল না। এই প্রথম এশিয়া কাপে একটি রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ দেখার সুযোগ হল ক্রিকেট দর্শকদের। বাবর আজম ও ইমাম উল-হকের তৈরি মঞ্চে শেষ ওভারে একটি ৬ ও একটি ৪ মেরে দলকে জয় এনে দিলেন শোয়েব মালিক (৪৩ বলে ৫১)। পাকিস্তান জিতল ৩ উইকেটে।
এদিন আফগানিস্তানের ২৫৭ রানের জবাবে পাক ইনিংসের শুরুতেই ওপেনার ফখর জামানের উইকেট পড়ে যায়। কোনও রান না করে মুজিব উর রহমানের প্রথম ওভারেই তিনি আউট হয়ে যান।
তারপর
দীর্ঘ
সময়
দায়িত্ব
নিয়ে
পাক
ইনিংসকে
এগিয়ে
নিয়ে
গিয়েছিলেন
ইমামুল
হক
(১০৪
বলে
৮০)
ও
বাবর
আজম
(৯৪
বলে
৬৬)।
তাদের
দ্বিতীয়
উইকেটে
জুটিতে
৩৩
ওভারে
১৫০
রান
তুলে
দিয়েছিল
পাকিস্তান।
আগের
ম্যাচ
থেকে
শিক্ষা
নিয়ে
এদিন
এই
দুই
ব্যাটসম্যান
কোনও
রকম
তাড়াহুড়ো
করতে
যাননি।
মারার
বল
পেলে
মেরেছেন,
তা
ছাড়া
সিঙ্গলস-এর
উপরই
নির্ভর
করেছিলেন
এই
দুই
ব্যাটসম্যান।
কিন্তু এরপরই হঠাত পাক ইনিংসে কাঁপুনি শুরু হয়ে যায়। ৩৪ তম ওভারে রশিদ খানের বলে ঝুঁকি নিয়ে সিঙ্গলস নিতে যান পাক ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু নাজিবুল্লা অসাধারণ একটি ডাইরেক্ট থ্রোতে রান আউট করেন ইমাম উল-হক'কে। অদ্ভুতভাবে তার ১ ওভার পরেই রশিদ খানের বলে স্টাম্পড হন বাবরও। ক্রিজে আসেন শোয়েব মালিক।
এরপর হ্যারিস সোহেল (২১ বলে ১৩) -ও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাঁকে তুলে নেন মুজিব উর রহমান। এদিন আবারও ব্যর্থ হন অধিনায়ক সরফরাজ (১২ বলে ৮)ও। এরপর পাকিস্তানের একমাত্র ভরসা ছিলেন বহু যুদ্ধের নায়ক শোয়েব মালিক। টেল এন্ডারদের নিয়ে তিনিই পাকিস্তানকে ফিনিশিং লাইন পার করে দেন।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১০ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। প্রথম বলটি শোয়োব পাঠিয়েছিলেন কভার অঞ্চলে। একটি রান হতে পারত। কিন্তু নিজের উপর ভরসা রেখেছিলেন শোয়েব। সিঙ্গলস না নিয়ে স্ট্রাইক নিজের হাতে রেখে দিয়েছিলেন।
এরপর অনেকটা ভারতের বিরুদ্ধে আফ্রিদি যেমন শেষ ওভারে দুটি ৬ মেরে জিতিয়েছিলেন, সেরকমই পর পর একটি ৬ ও একটি ৪ মেরে পাকিস্তানকে কাঙ্খিত জয় এনে দেন ভারতের জামাই।
এদিনও ভাল পারফরম্যান্সের ছাপ রেখে গেলেন আফগান ক্রিকেটাররা। এশিয় ক্রিকেটে তাঁরা কিন্তু বড় শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। এদিনও রশিদ খান ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। নবি অবশ্য উইকেটহীন থাকেন। এছাড়া দুই উইকেট নেন মুজিবুর রহমান ও ১ ইউকেট নেন গুলবদিন।
তার আগেহাশমতুল্লা শাহিদি অপরাজিত ৯৭ রানের জোরে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। বড় রান পেয়েছেন রহমত শাহ (৩৬) ও পরে অধিনায়ক আসগর আফগান (৬৭)-ও।
এদিনও বাংলাদেশ ম্যাচের মতোই ধৈর্য ধরে উইকেটে পড়ে থেকে শেষ দশ ওভারে মেরে রানটা ২৫০-র উপর তুলে দেন আফগান ব্যাটসম্যানরা। এদিনও শেষ ১০ ওভারে তারা ৩ উইকেট হারিয়ে ৮৭ রান তুলেছে। এখনও পর্যন্ত কিন্তু টুর্নামেন্টে ভারতের পরই সবচেয়ে ধারাবাহিক দল আফগানিস্তান। পর পর তিন ম্যাচে তারা ২৫০ রান করেছে (শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ২৪৯)।
পাক বোলারদের মধ্য়ে এশিয়া কাপে প্রথম ম্যাচে নেমেই ৫৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মহম্মদ নওয়াজ। এদিনের ম্য়াচে পাকিস্তান মহম্মদ আমিরকে খেলায়নি। তাঁর বদলে এদিন অভিষেক হয় শাহিন আফ্রিদির। তিনি ৩৮ রান দিয়ে ২টি উইকেট পান। এছাড়া ১টি উইকেট পান উসমান খান। পাক বোলাররা ভাল বল করলেও আফগান ইনিংসের শেষ ওভারগুলিতে কিন্তু তারা রান তোলার গতিতে লাগাম লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন।