বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল অস্ট্রেলিয়া; স্মিথ, ওয়ার্নার ফিরলেও অবাক করেছে হ্যান্ডসকম্বের বাদ পড়া
সোমবার, ১৫ এপ্রিল, দ্বিতীয় দল হিসেবে আসন্ন আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৫ জনের সদস্যের নাম ঘোষণা করল অস্ট্রেলিয়া।
সোমবার, ১৫ এপ্রিল, দ্বিতীয় দল হিসেবে আসন্ন আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৫ জনের সদস্যের নাম ঘোষণা করল অস্ট্রেলিয়া। গতবারের চ্যাম্পিয়নরা এবারের লড়াইতে তাঁদের দলনেতা হিসেবে পছন্দ করেছে অ্যারন ফিঞ্চকে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের মাটিতে হতে চলা মহারণের জন্যে ফিরিয়ে এনেছে স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নারকে। এই দুই ক্রিকেটার গতবছর মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একটি টেস্ট ম্যাচে বল বিকৃতি করার অভিযোগে এক বছরের জন্যে নির্বাসিত হন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। ওই ঘটনার সময়ে স্মিথ অধিনায়ক এবং ওয়ার্নার সহ-অধিনায়ক ছিলেন। এবারে তাঁরা অবশ্য ফিরে এসেছেন দলের সাধারণ সদস্য হিসেবেই।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ম্যাচ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে
এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার অভিযান শুরু হচ্ছে পয়লা জুন, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে, ব্রিস্টলে। তারপর তারা একে একে বাকি আটটি প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলবে। লীগ পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার অন্তিম ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে, ৬ জুলাই। অস্ট্রেলিয়া এর আগে পাঁচবার বিশ্বকাপ মুকুট জিতেছে (১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ এবং ২০১৫)। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যারা জিতেছে দু'বার করে।
তবে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দলে পিটার হ্যান্ডসকম্ব জায়গা না পাওয়ায় বিস্মিত হয়েছেন অনেকে। এই সাতাশ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে রান পেলেও এবং তাঁর উইকেটকিপিং-এর হাতটি খারাপ না হলেও নির্বাচকদের চোখে তিনি উপেক্ষিতই থেকে গিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার আরেক ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান ওসমান খোয়াজা অবশ্য জায়গা পেয়েছেন যদিও তাঁর, ফিঞ্চ এবং ওয়ার্নারের উপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার এবারে অনেকগুলি ওপেনের দলে। এবারে বাদ পড়েছেন মিচেল মার্শ যদিও জায়গা পেয়েছেন তাঁর ভাই শন।
বোলিং-এ বাদ পড়লেন জোশ হেজেলউড
বোলিং-এর ক্ষেত্রে বাদ পড়েছেন জোশ হেজেলউড যদিও চোট পুরোপুরি সারিয়ে না উঠলেও ডাক পেয়েছেন মিচেল স্টার্ক এবং ঝাই রিচার্ডসন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মেডিক্যাল দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে ওই দুই পেসার দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং ফের কোনও অঘটন না ঘটলে তাঁদের আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে না খেলার কোনও কারণ নেই। অস্ট্রেলিয়া দুই স্পিনারকে দলে নিয়েছে, যথাক্রমে অ্যাডাম জাম্প এবং নেথান লিওন। ২০১৫ যে দলটি ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জিতেছিল, এবারের দলের তার ছয় জন সদস্য রয়েছে।
ফিঞ্চ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার অষ্টম অধিনায়ক
ফিঞ্চ অষ্টম অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক যিনি বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। এর আগে যাঁরা এই গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন তাঁরা হলেন ইয়ান চ্যাপেল (১৯৭৫), কিম হিউজেস (১৯৭৯ এবং ১৯৮৩), আলান বর্ডার (১৯৮৭এবং ১৯৯২), মার্ক টেলর (১৯৯৬), স্টিভ ওয়া (১৯৯৯), রিকি পন্টিং (২০০৩, ২০০৭ এবং ২০১১) এবং মাইকেল ক্লার্ক (২০১৫)। এদের মধ্যে চারজন বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন এবং দু'জন রানার্স-আপ হয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার ফর্ম গত এক বছরে খুব হতাশাজনক হলেও সম্প্রতি ভারতকে ৩-২ এবং পাকিস্তানকে ৫-০ হারানোর পরে তাঁদের সমর্থকরা ফের নড়েচড়ে বসেছেন। পাশাপাশি, ওয়ার্নার এবং স্মিথের প্রত্যাবর্তনেও যে তাঁরা খুশি হবেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ওয়ার্নার তো চলতি আইপিএল-এ বিধ্বংসী ফর্মে রয়েছেন আর স্মিথ ততটা না হলেও তাঁকে হেলাফেলা করার কোনও কারণ নেই।
সব মিলিয়ে, অস্ট্রেলিয়ার ১৫-জনের দলটিকে দেখে ক্রিকেট পণ্ডিতরা খুব হতাশ নন।
অস্ট্রেলিয়ার ২০১৯ এর বিশ্বকাপের ১৫ জনের দল: অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, ঝাই রিচার্ডসন, অ্যালেক্স কেরি (উইকেটরক্ষক), নাথান কূলটার-নাইল, অ্যাডাম জাম্পা, নেথান লিওন, ওসমান খোয়াজা, শন মার্শ, জেসন বেরেনডর্ফ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মার্কস স্টোইনিস।