ওডিআইয়ে সেরা বোলিং গড়ের মালিক এক তাবড় ব্যাটসম্যান! জানুন অবিশ্বাস্য কয়েকটি রেকর্ডের কথা
সাম্প্রতিক কালে ক্রিকেট অনেকটাই ব্যটসম্যানদের খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। অবশ্য টি-২০-র জমানায় মারকুটে ব্যাটিং ও ছোটো বাউন্ডারির দৌলতে সেই অভিযোগ কতকটা হলেও সত্যি। তবে ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে দেখা যায় এমন কয়েকজন ব্যাটসম্যান আছেন যারা বল হাতেও নিজেদের ক্ষমতা জাহির করে নিজেদের দলকে জিতিয়েছেন। এমনই কয়েকটি পারফরম্যান্সের দিকে চোখ রাখা যাক।
মাইকেল ডাইগটন
আদতে অস্ট্রেলিয়ান হলেও আন্তর্জাতিক স্তরে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এই ক্রিকেটার। যদিও নেদারল্যান্ডসের হয়েও কোনও আইসিসি অনুমোদিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য হয়নি তাঁর। তবে এহেন ডাইগটনই টি-২০-তে নিজের অভিষেকে এক অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেন। ২০০৬-০৭ মরশুমের কেএফসি বিগ ব্যাশ লিগে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামেন ডাইগটন। তাসম্যানিয়ার হয়ে খেলা ডাইগটনকে অধিনায়ক যখন বল করতে ডাকেন তখন স্কোরবোর্ডে ১০০-র বেশি রানের পার্টারশিপ করে ফেলেছেন কুইনসল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যান। সেই অবস্থায় ম্যাচ ঘোরানো উইকেট নেন ডাইগটন। তাও আবার মাত্র তিন ওভার বল করে ২৫ রানের বদলে।
উইলফ বার্বার
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৭৩টি ম্যাচ খেলে এই ইংরেজ ক্রিকেটারটি করেছিলেন ১৬৪০২ রান। তবে ইংল্যান্ডের হয়ে মাত্র দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য হয় উইলফের। ১৯৩৫ সালে এই টেস্ট ম্যাচগুলি খেলেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র দুটি বল করেছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেই দুটি বলেই তুলে নিয়েছিলেন একটি উইকেট। কোনও রান না দিয়ে। এর জেরে তাঁর বোলিং স্টাইক রেট দাঁড়ায় ২-এ। এবং বোলিং গড় ০। এটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের রেকর্ড। বিশ্ব ক্রিকেটে ০ বোলিং গড় রয়েছে আরও দুই জনের। তবে এই স্ট্রাইক রেটের ধারের কাছে নেই কেউ।
মহম্মদ ইউসুফ
মিডল অর্ডারের এইপাক ক্রিকেটারকে সবাই জানে তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং স্কিলের জন্য। ২৮৮টি ওডিআই খেলে ইউসুফ করেছেন প্রচুর রান। তবে এই দীর্ঘ কেরিয়ারে দুটি বলও করেন ইউসফ। ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি বল করে দিয়েছিল এক রান। এর তিন বছর পর জিম্বাবওয়ের বিরুদ্ধে আরও একটি বল করেছিলেন ইউসুফ। আর তাতে তুলে নিয়েছিলেন নিজের কেরিয়রের প্রথম এবং একমাত্র উইকেটটি। এর ফলে তাঁর বোলিং গড় দাঁড়ায় ১-এ। এবং স্ট্রাইক রেট ২-তে। যা ওডিআই ক্রিকেটে রেকর্ড।
সচিন তেন্ডুলকর
শেষ ওভারে দাঁড়িয়ে থেকে ম্যাচ শেষ করার জন্য সচিনের উপর ভরসা করেন? অধিকাংশ ক্রিকেট প্রেমী এই প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ বলবেন। তবে বল হাতে শেষ ওভারে ৬ বা তার কম রান ডিফেন্ড করতে হবে, সেই ক্ষেত্রে সচিনের উপর ভরসা কতজন দেখাবেন? সন্দেহ আছে। তবে এই কাজটি একবার নয় বরং দুইবার করেছেন সচিন। হিরো কাপ ফাইনালের কথা নিশ্চিই সব ক্রিকেট প্রেমীরই মনে থাকবে। এছাড়া ১৯৯৬ সালে টাইটান কাপের একটি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই কৃতিত্ব দেখান সচিন। শেষ ওভারে বল করতে এসে সচিন ভারতকে সেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন পাঁচ রানে। কারণ ওভারের প্রথম বলেই ব্র্যাড হগ রান আউট হয়ে গেলে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
ফ্যাফ ডুপ্লেসি
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন এই অধিনায়ককে অনেকেই এবি ডিভিলয়র্সের সঙ্গে তুলনা করেন। ব্যাট হাতে তুখোড় ফাফ ফিল্ডিংয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্যান্ডার্ড মেইন্টেন করেন। তবে বল হাতে সেরকম সফল নন তিনি। ওডিআইতে মাত্র দুটি উইকেট তাঁর ঝুলিতে। অবশ্য প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪১টি, লিস্ট এ-তে ৫৪টি ও টি-২০তে ৫০টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এই টি-২০ তেই ফাফের এক অনবদ্য বোলিং রেকর্ড আছে। ২০১১-১২ মরশুমে প্রপর দুটি টি-২০ ম্যাচে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। পরপর দুটি টি-২০ ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জনকারী প্রথম ক্রিকেটার তিনি।