২০০০-র ম্য়াচ ফিক্সিং কাণ্ডেও কি দাউদের হাত? কী বলছে দিল্লি পুলিশ
২০০০-র ম্য়াচ ফিক্সিং কাণ্ডেও কি দাউদের হাত? কী বলছে দিল্লি পুলিশ
২০০০-র কুখ্যাত ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতেও নাকি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন তথা মোস্ট ওয়ান্টেড দাউদ ইব্রাহিমের হাত থাকতে পারে বলে মনে করে দিল্লি পুলিশ। অন্যদিকে, ইংল্য়ান্ড থেকে ভারতে আনা ঘটনার মূল চক্রী সঞ্জীব চাওলাকে তারা ম্যাচ ফিক্সিং-র একাধিক বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বলে জানিয়েছে বিসিসিআই-র দুর্নীতি বিরোধী শাখা।
২০০০-র ম্যাচ ফিক্সিং
ভারতে ক্রিকেট খেলতে এসেছিল হ্যান্সি ক্রোনিয়ে নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সেই টেস্ট সিরিজে ম্যাচ ফিক্সিং-র অভিযোগ তোলে দিল্লি পুলিশ। অভিযুক্ত হন ভারতীয় ক্রিকেট দলের তৎকালীন অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন, দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার অজয় জাদেজা, মনোজ প্রভাকর। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ে, সে দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার নিকি বোয়ে, হার্শাল গিবসও এই মামলায় অভিযুক্ত হন। শাস্তির মুখে পড়তে হয় এই ক্রিকেটারদের। মহম্মদ আজহারউদ্দিন, হ্যান্সি ক্রোনিয়ে, অজয় জাদেজা, মনোজ প্রভাকরকে আজীবন নির্বাসনে পাঠানো হয়।
গ্রেফতার
ঘটনার মূল অভিযুক্ত তথা বুকি সঞ্জীব চাওলাকে লন্ডনে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে ভারতে প্রত্যার্পণের জন্য ইংল্যান্ড সরকারের কাছে আবেদন করা হচ্ছিল। অবশেষে সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে ব্রিটেনের আদালত।
আইনি প্রক্রিয়া
২০০০-র ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জীব চাওলার জামিনের আবেদন নাকচ করে দেয় মানবাধিকার কমিশনের ইউরোপিয়ান আদালত। গত ১৬ জানুয়ারি হওয়া শুনানিতে এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতেও অস্বীকার করে ওই আদালত। ফলে ২৩ জানুয়ারি ব্রিটেনের আদালতের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী সঞ্জীব চাওলাকে ২৮ দিনের মধ্যে ভারতে প্রত্যার্পণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রথম প্রত্যার্পণ
১৯৯২ সালে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে বন্দি প্রত্যার্পণ সংক্রান্ত এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তারপর থেকে সঞ্জীব চাওলাই প্রথম ব্যক্তি, যাঁকে সফলভাবে ব্রিটেন থেকে ভারতে আনা হল। এর আগে ২০০২-র গুজরাত দাঙ্গার অন্যতম মাস্টার মাইন্ড সমীরভাই ভিনুভাই প্য়াটেলের ইংল্যান্ড থেকে ভারতে প্রত্যার্পণ ঘটেছিল ২০১৬ সালে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত স্বেচ্ছায় ভারতে ফিরেছিল বলে জানানো হয়। সঞ্জীবকে ১২ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে দিল্লির পাতিয়ালা হাউজ কোর্ট।
কী বলছে দিল্লি পুলিশ
২০০০-র ম্য়াচ ফিক্সিং কাণ্ডে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন তথা মোস্ট ওয়ান্টেড দাউদ ইব্রাহিমের হাত থাকতে পারে বলে দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। দিল্লি পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার তথা ওই ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডের অন্যতম তদন্তকারী ইশ্বর সিং জানিয়েছেন যে ২০০০-এ রাজধানীর তাজ মানসিং হোটেলে তিনি সঞ্জীবকে প্রথমবার দেখেন। তিনি ধৃত বুকিকে দক্ষিণ আফ্রিকার তৎকালীন অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে শুনেছেন বলেও দাবি ওই পুলিশ কর্তার। ইশ্বর সিং-র কথায়, তদন্তের সময় তাঁর হাতে আসা তথ্য এবং শোনা কথা থেকে ধারণা যে এর পিছনে দাউদ ইব্রাহিমের হাত থাকলেও থাকতে পারে।
বিসিসিআই
ইংল্য়ান্ড থেকে ভারতে আনা ২০০০-র ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত সঞ্জীব চাওলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান বিসিসিআই-র দুর্নীতি বিরোধী শাখার প্রধান অজিত সিং। এই ঘটনায় ভারতের আর কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটারের নাম জড়িয়ে রয়েছে কিনা, তা তাঁদের জানা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন অজিত সিং। পুরো ঘটনাটি কীভাবে সাজানো হয়েছিল, কীভাবে পরিকল্পনা কার্যকর করা হয়েছিল, তাও সঞ্জীবের কাছ থেকে জানতে চায় বিসিসিআই।