গর্হিত ভুলে ৩০ বছর পরেও রঞ্জি হাতছাড়া বাংলার, ঘরের মাঠে ট্রফি জয় সৌরাষ্ট্রের
গর্হিত ভুলে ৩০ বছর পরেও রঞ্জি হাতছাড়া বাংলার, ঘরের মাঠে ট্রফি জয় সৌরাষ্ট্রের
ছোট অথচ গর্হিত কিছু ভুলে রঞ্জি ট্রফি হাতছা়ড়া হল বাংলার। তিরিশ বছর পরেও হল না স্বপ্নপূরণ। প্রথম ইনিংসে বাংলার থেকে রানে এগিয়ে থাকার সুবাদে ঘরের মাঠে রঞ্জি জিতে নিল সৌরাষ্ট্র। হোম টিম দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামলে পঞ্চম দিন শেষ হওয়ার আগেই খেলা শেষ বলে ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। খাতায়-কলমে ড্র হয় ম্যাচ।
সৌরাষ্ট্রের প্রথম ইনিংস
রাজকোটের মন্থর পিচে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় সৌরাষ্ট্র। প্রথম ইনিংসে ৪২৫ রান তোলে জয়দেব উনাদকাটের দল। হোম টিমের হয়ে সর্বাধিক ১০৬ রান করেন অর্পিত ভাসাভাড়া। ৬৬ রান করেন চেতেশ্বর পূজারা। ৫৪ রান করেন অভি বারট ও বিশ্বরাজ জাদেজা। বাংলার হয়ে ৪ উইকেট নেন ফাস্ট বোলার আকাশ দীপ। ৩ উইকেট নেন স্পিনার শাহবাজ আহমেদ।
বাংলার প্রথম ইনিংস
৪২৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩৮১ রানে অল আউট হয়ে যায় বাংলা। অ্য়াওয়ে দলের হয়ে সর্বাধিক ৮১ রান করেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। ৬৪ ও ৬৩ রান করেন যথাক্রমে উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা ও অনুষ্টুপ মজুমদার। লড়াকু ৪০ রান করেন অর্নব নন্দী। সৌরাষ্ট্রের হয়ে ৩ উইকেট নেন ধর্মেন্দ্রাশিষ জাদেজা। ২টি করে উইকেট নেন জয়দেব উনাদকাট ও প্রিরাক মানকাদ।
শেষ দিনে ব্যাটিং বিপর্যয়
মন্থর উইকেটে তৃতীয় ও চতু্র্থ দিনে ৬ উইকেট হারালেও পিচ কামড়ে পড়েছিলেন বাংলার ব্যাটসম্য়ানরা। চতু্র্থ দিনের শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৫৪ রানে অবস্থান করছিল বাংলা। ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার। ২৮ রানে খেলছিলেন অর্নব নন্দী। পঞ্চম দিনে তাঁরাই বাংলাকে জয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাবে বলে মনে করেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে দিনের শুরুতেই আউট হয়ে যান অনুষ্টুপ মজুমদার। সৌরাষ্ট্রের অধিনায়ক জয়দেব উনাদকাটের বলে লেগ বিফোর উইকেট হন তিনি। এরপর বাংলার ব্যাটিং-এ ধস নামে। মাত্র ২০ রানে চার উইকেট হারায় অরুণ লালের দল।
গর্হিত ভুল
১) রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে বাংলার হারের জন্য কয়েকটি গর্হিত ভুলকে দায়ী করছেন ক্রিকেট প্রেমীরা। অনুষ্টুপ মজুমদার আউট হয়ে যাওয়ার পর পিচে আসেন আকাশ দীপ। মাত্র দুই বল খেলে তিনি যেভাবে আউট হন, তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাংলার ক্রিকেট প্রেমীরা। পপিং ক্রিজ থেকে কিছুটা এগিয়েই ব্যাট করছিলেন আকাশ দীপ। উনাদকাটের বল তিনি বিট হন। বল সৌরাষ্ট্রের উইকেটরক্ষকের কাছে পৌঁছতেই আকাশ দীপকে এগিয়ে থাকতে দেখে তিনি স্ট্যাম্প লক্ষ্য করে থ্রো করেন। বল উইকেট না ছুঁয়ে বোলিং এন্ডে দাঁড়িয়ে থাকা সৌরাষ্ট্রের অধিনায়কের হাতে গিয়ে পৌঁছয়। পরিস্থিতির কোনও আঁচ না পেয়ে তখনও পপিং ক্রিজের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকেন বাংলার ব্যাটসম্যান আকাশ। স্কোয়ার লেগ ও স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারদের কাছ থেকে তা জানতে পেরে বল থ্রো করে উইকেট উড়িয়ে দেন উনাদকাট। আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন আকাশ দীপ।
২) অন্যদিকে বাংলার ৯ উইকেট পরে যাওয়ার পর সেট ব্যাটসম্যান অর্নব নন্দীর উচিত ছিল ম্যাচ বাঁচাতে নিজেকে যতটা সম্ভব স্ট্রাইকে রাখতে। তা না করে জয়দেব উনাদকাটের ওভারের দ্বিতীয় বলে কেন তিনি সিঙ্গলস নিয়ে নড়বড় ঈশান পোড়েলকে ব্যাট করার জন্য ঠেলে দিলেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না বাংলার ক্রিকেট প্রেমীরা।
জঘন্য পিচ
রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে বাংলার হারের জন্য মন্থর এবং ভেঙে যাওয়া সৌরাষ্ট্রের পিচকেই দায়ী করছেন বাংলার ক্রিকেট প্রেমীদের একটা অংশ। ম্যাচ চলাকালীন পিচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলার কোচ অরুণ লালও। বল পিচে পড়ার পর দুই বার মাটি ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের কাছে পৌঁছেছ, এমন ঘটনাও এই ম্যাচে ঘটেছে।
সৌরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ইনিংস
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান তোলে সৌরাষ্ট্র। বাংলার হয়ে ২ উইকেট নেন বাঁ-হাতি স্পিনার শাহবাজ আহমেদ।