আইসিসি-র নয়া নিয়মে আরও কতটা বড়লোক হতে চলেছে বিসিসিআই, হিসেব জানলে চোখ ছানাবড়া হবে
চিরাচরিত হোম-অ্যাওয়ে ফর্মাটের খেলায় নতুন আঙ্গিকের ভাবনা। বদলে যাবে পুরনো ধরণ। ফের বিপুলভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভবনা বিসিসিআইয়ের।
খুশির খবর বিসিসিআইয়ের জন্য। যদিও এখনই সিলমোহর পড়েনি, তবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ভাবনায় বড়সড় রদবদল আনতে চলেছে আইসিসি। হোম ও অ্যাওয়ের ভিত্তিতে এতদিন যেভাবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন হত এবার থেকে সম্ভবত সেভাবে আর সিরিজ আয়োজিত হবে না। এখন থেকে বিভিন্ন বোর্ডের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের।
অর্থাৎ বিভিন্ন বোর্ড নিজেরা নিজেদের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের সব বন্দোবস্ত করবে। ফলে আইসিসি-র অধীনস্থ বিভিন্ন বোর্ডরা নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ বাছাই থেকে ভ্যেনু সবকিছুই করতে পারবে। এক্ষেত্র ভারতীয় বোর্ড ফের নিজেদের আয় বৃদ্ধির সম্ভবনা উজ্জ্বল দেখতে পাচ্ছে।
এর কারণ বুঝতে গেলে একটা ধারণা পরিষ্কার করে নেওয়া আবশ্যিক। ভারতীয় ক্রিকেট দলের সারা বিশ্বে বাজার রয়েছে। সমস্ত বোর্ডই ভারতের সঙ্গে ম্যাচ খেলার জন্য আগ্রহ ভরে বসে থাকে। সেক্ষেত্র ফের একবার গেম চেঞ্জারের ভূমিকায় ক্রিকেট বাজারে আসবে বিসিসিআই। তবে সর্বপ্রথম বিসিসিআইয়ের প্রশাসনিক কাঠামোর গন্ডগোল কাটিয়ে একটা স্থায়ী ফর্মাটে আসতে হবে।
কিছুদিন আগে এপ্রিল মাসে আইসিসি-র বৈঠকে চিরাচরিত বিগ থ্রি মডেল ভেঙে দেওয়া হয়। যার জেরে ভারত- অস্ট্রেলিয়া- ইংল্যান্ড তিনজনেরই আয় বরাদ্দে অনেকটাই কোপ পড়ে। আট বছরে যেখানে ভারতীয় বোর্ডের আয় ৫৭০ মিলিয়ন ডলার হওয়ার কথা ছিল । বিগ থ্রি কাঠামো ভেঙে দিয়ে এপ্রিল মাসে প্রাথমিকভাবে ১৯০০ কোটি টাকা আয়বরাদ্দ করেছিল আইসিসি। সেখানে অন্য পন্থা ঘুরে আয় দাঁড়াল ৪০৫ মিলিয়ন। যা ভারতীয় মুদ্রায় ২৬১২ কোটি টাকা। এবার বিসিসিআইয়ের সামনে সুযোগ থাকবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাছাই করে খেলে নিজেদের আয় বাড়িয়ে নেওয়ার।
আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর এপ্রিলের বৈঠকে বিসিসিআইয়ের জন্য যে বরাদ্দ ধার্য করেছিলেন এই মুহূর্তে তার থেকে ১১৫ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৭৪১ কোটি টাকা বেশি রোজগার করবে বিসিসিআই। আইসিসি-র এপ্রিল মাসের মেগা বৈঠকে বিসিসিআইয়ের বরাদ্দ ২৯০ মিলিয়ন ডলার ধার্য করেছিলেন শশাঙ্কমনোহর। পরবর্তী পর্যায়ে অবশ্য তা বাড়িয়ে ৩৯০ মিলিয়ন করেন। পাশাপাশি ভারতকে হুমকি দেন টেক ইট অর লিভ ইট। সোজা কথায় নিতে হলে নাও নাহলে ছেড়ে দাও। এরইসঙ্গে ঠিক কী যুক্তিতে এই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে তারও কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি গভর্নিং কাউন্সিল। এবারের বৈঠকে পরিবর্তিত আয়বরাদ্দ পেয়েছে ভারতীয় বোর্ড। আইসিসি-র আয়ের ২২. ৮ শতাংশ বরাদ্দ হয়েছে বিসিসিআইয়ের জন্য। যারফলে ৪০৫ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২৬১২ কোটি টাকা পাবে বিসিসিআই। যেহেতু দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারতের চাহিদা বেশি, তাই আয়বরাদ্দও বাড়বে।
আইসিসি-র বার্ষিক সাধারণ বৈঠকে আরও একটি বিষয়ও স্থির হয়েছে। প্রশাসনিক পরিকাঠামো পর্যালোচনাকারী কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে বিসিসিআই সচিব অমিতাভ চৌধুরী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ভারতীয় বোর্ডের জন্য আরও একটি সুসমাচার। পাক বোর্ডের সঙ্গে বিসিসিআই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু দুই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য এই সিরিজ খেলতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের সবুজ সংকেত পায়নি। কিন্তু এই দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মউ ভাঙার জন্য বিসিসিআইকে কোনওরকম খেসরাত বা আর্থিক জরিমানা দিতে হবেনা।
সব মিলিয়ে এপ্রিলের বৈঠকে যেভাবে বিপাকে পড়েছিল ভারতীয় বোর্ড। এবারের বৈঠকে তার চেয়ে অনেক বেশি ভাল খবর নিয়ে এল এবারের আইসিসি বৈঠক।