সৌরভকেই বিসিসিআই সভাপতি রাখতে সংবিধান সংশোধন! অপমানিত হওয়ার আশঙ্কা সুপ্রিম কোর্টের লোধা প্যানেলের
সৌরভেকেই বিসিসিআই সভাপতি রাখতে সংবিধান সংশোধন! অপমানিত হওয়ার আশঙ্কা সুপ্রিম কোর্টের লোধা প্যানেলের
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র জয় শাহকে সচিব পদে তিন বছর বহাল রাখার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে চলেছে বিসিসিআই। সুপ্রিম কোর্ট মনোনিত বিচারপতি আরএম লোধা প্যানেলের তৈরি সংবিধান পরিবর্তনের তোরজোর শুরু করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ১ ডিসেম্বর বিসিসিআই-র সাধারণ সভায় এই ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। আর তেমনটা হলে বিসিসিআই দেশের শীর্ষ আদালতকে অপমান করবে বলেই মনে করেন লোধা প্যানেলের সম্পাদক।
সংবিধান সংশোধন নিয়ে আলোচনা
ম্যাচ ফিক্সিং, বেটিং সহ একাধিক ইস্যুতে জর্জরিত বিসিসিআই-কে স্বচ্ছ করতে বোর্ডের জন্য নতুন করে সংবিধান রচনা করে সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত বিচারপতি আর এম লোধা নেতৃত্বাধীন প্যানেল। পয়লা ডিসেম্বর বিসিসিআই-র সাধারণ সভায় সেই সংবিধান পরিবর্তন করা যায় কীভাবে, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
কেন পরিবর্তন
লোধা কমিটির লেখা সংবিধানে বলা হয়েছে, বিসিসিআই ও রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কোনও পদাধিকারি পরপর দুবার পদ অলকৃত করলে, এর পরের দফায় তিনি আর বোর্ডের কোনও ভোটে (একটা সময় পর্যন্ত) দাঁড়াতে পারবেন না। সে অনুযায়ী, বিসিসিআই সভাপতি পদে আর মাত্র ৯ মাস থাকতে পারবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কারণ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল বা সিএবি সভাপতি পদে দুই বার নির্বাচিত হয়েছেন মহারাজ। একই সঙ্গে এই পদে টানা পাঁচ বছরের বেশি দায়িত্ব সামলেছেন সৌরভ। সবমিলিয়ে ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে ছয় বছর (বিসিসিআই সভাপতি পদে ১০ মাস) কাটানোর পর সরে যেতেই হবে মহারাজকে। একই পরিণতি হতে পারে বিসিসিআই সচিব জয় শাহেরও।
সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও জয় শাহ নির্ধারিত তিন বছর নিজ নিজ পদে বহাল থাকুন, চায় বিসিসিআই। পয়লা ডিসেম্বরের সাধারণ সভায় তাই লোধা কমিটি রচিত সংবিধান সংশোধন নিয়ে আলোচনা হতে পারে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে পুরনো নিয়ম পরিবর্তন করে যে নতুন প্রস্তাব নিয়ে বিসিসিআই-র বৈঠকে আলোচনা হতে পারে তা হল, শুধু বোর্ডের (রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা নয়) কোনও পদাধিকারি পরপর দুবার একই চেয়ার অলকৃত করলে, পরের দফায় তিনি আর ভোটে (একটা সময় পর্যন্ত) দাঁড়াতে পারবেন না। একই সঙ্গে ৭০ বছর ও তার বেশি বয়সের কোনও ব্যক্তি বিসিসিআই-র পদাধিকারি হতে পারবেন না বলেও ওই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। তা হলে বিসিসিআই-তে এন শ্রীনিবাসন, নিরঞ্জন শাহ-র মতো ব্যক্তিত্বদের ভিড় কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ
সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত সংবিধান সংশোধনের জন্য আদালতের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। পয়লা ডিসেম্বরের সাধারণ সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব পাশ হলে এবং এ ব্যাপারে এথিক্স অফিসার ও কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সম্মতি মিললে, বিসিসিআই দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টকে অপমান!
বিসিসিআই-র সংবিধান পরিবর্তন সুপ্রিম কোর্টকে অপমান করা হবে বলে মনে করেন লোধা প্যানেলের সম্পাদক শঙ্করনারায়ণন। তাঁর কথায়, হতেই পারে ভারতীয় বোর্ড নিজেদের দমে সংবিধান পরিবর্তন করে নিল, কিংবা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে এই কাজ করল, হয়তো বা আদালত এ ব্যাপারে কিছুই বলল না, তা সত্ত্বেও তা দেশের আইন ব্যবস্থাকে অপমান করা হবে বলেই মনে করেন লোধা প্যানেলের সম্পাদক শঙ্করনারায়ণন। তাঁর কথায়, সুপ্রিম কোর্ট লোধা প্যানেলের তৈরি সংবিধান পরিবর্তন কিংবা সংশোধনের জন্য হয়তো বাধা দেবে না। তবু সবকিছুর একটা নিয়ম আছে বলেই মনে করেন ওই আইনজ্ঞ। তাঁর বক্তব্য, বিসিসিআই এই সিদ্ধান্ত নিলে আবারও ওই সংস্থা পুরনো অবস্থাতে ফিরে আসবে।