চেপে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, জানুন দিন-রাতের টেস্ট নিয়ে ইমেলে কী বলেছিল ভারত
বিসিসিআই-এর অভিযোগ, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে দিন-রাতের টেস্ট খেলা নিয়ে চারমাস আগেই মত জানিয়েছিল ভারত।
বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার কথা বিরাট বাহিনীর। কিন্তু তা নিয়ে এখন থেকেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন দু'দেশের বোর্ড কর্তারা। সংঘাতের কারণ দিন-রাতের টেস্ট। অস্ট্রেলিয় বোর্ড চায় অ্যাডিলেডে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে একটি দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচ খেলতে। কিন্তু ভারতীয় বোর্ড দিন রাতের টেস্ট খেলতা আগ্রহী নয়।
বিতর্কটা
চরমে
উঠেছে
'ক্রিকেট
অস্ট্রেলিয়া'-র
প্রধান
জেমস
সান্ডারল্যান্ডের
একটি
মন্তব্য
ঘিরে।
সান্ডারল্যান্ড
বলে
বসেন,
'হয়তো
সবার
ধারণা
দিন-রাতের
টেস্ট
হলে
অস্ট্রেলিয়াই
জিতবে।'
আসলে
অস্ট্রেলিয়ার
মাটিতে
এখন
পর্যন্ত
যে
কটি
দিন-রাতের
টেস্ট
হয়েছে
তার
সবকটিতেই
জয়
পেয়েছে
অস্ট্রেলিয়াই।
কিন্তু
সান্ডারল্যান্ডের
কথা
মোটেই
ভালভাবে
নেয়নি
বিসিসিআই।
ভারতীয়
বোর্ডের
কর্তারা
বলছেন,
সান্ডারল্যান্ড
বিষয়টিকে
এমন
ভাবে
উপস্থাপন
করছেন
যেন
মনে
হচ্ছে
আমরা
কথা
দিয়েও
পিছিয়ে
এসেছি।
তাঁরা
বলছেন,
সান্ডারল্যান্ড
অন্তত
চারমাস
আগে
থেকে
দিন-রাতের
টেস্টের
ব্যাপারে
বিসিসিআই-এর
অবস্থান
জানতেন।
মাঝে
একধিকবার
লিখিত
ভাবেও
সে
অবস্থান
স্পষ্ট
করে
দিয়েছে
ভারত।
সেই
বিষয়গুলি
চেপে
যাচ্ছেন
অস্ট্রেলিয়
বোর্ড
প্রধান।
আসলে বরাবরই নতুন কিছু গ্রহণ করতে একটু সময় নেয় ভারত। এযাবতকালে আইসিসি ক্রিকেটে যা যা বদল এনেছে সবই বিসিসিআই গ্রহণ করেছে প্রায় তেতো ওষুধ গেলার মতো করে। সে টি-টুয়েন্টি-ই হোক কিংবা ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস। আজকের ভরপুর আইপিএল জনপ্রিয়তার বাজারে অনেকেরই হয়তো মনে নেই, ২০ ওভারের ফর্ম্যাটের এই ক্রিকেট প্রথম চালু হয়েছিল ২০০৩ সালে, ইংল্যান্ডে। তারপর, একে একে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ-এ ফর্ম্যাট শুরু হলেও, ভারত একে গ্রহণ করেছে অনেক পরে। ২০০৭ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ না জিতলে কি হত, বলা মুশকিল। একই ঘটনা ঘটেছে ডিআরএস-এর ক্ষেত্রেও।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে খতিয়ে দেখার এই পদ্ধতি আইসিসি প্রথম চালু করেছিল ২০১১-য়। কিন্তু তখন অনেক ত্রুটি থাকায় আবার পরিমার্জিত রূপে ডিআরএস আসে ২০১৬-য়। এই পদ্ধতি গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও ভারতই ছিল শেষ দেশ। এই ট্রেন্ড বলছে দিন-রাতের টেস্ট খেলা নিয়েও ভারতীয় বোর্ডের প্রথমদিকে খুতখুতানি থাকাটাই স্বাভাবিক।
বিসিসিআই সূত্রে জানানো হয়েছে গত ১১ জানুয়ারি এক ই-মেল মারফত সান্ডারল্যান্ড প্রথম দিনরাতের টেস্টটির প্রস্তাব দেন। সেই বিসিসিআই সিইও রাহুল জোহরি সেইদিনই সেই প্রস্থাব নাকচ করে জবাব দেন। জবাবি মেলে আলাদ করে উল্লেখও করা হয় ভারত 'লাল বলে দিনের ম্যাচ' (দিন-রাতের টেস্ট গোলাপী বলে খেলা হয়) খেলতেই আগ্রহী, আর কিছুতে নয়।
অর্থাৎ চার মাস আগে থেকেই দিন-রাতের টেস্ট নিয়ে বিসিসিআইয়ের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে সান্ডারল্যান্ড। এছাড়াও, গত মাসে কলকাতায় আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে বিসিসিআই সিইও আবারও দিন-রাতের টেস্ট নিয়ে ভারতের অবস্থান সান্ডারল্যান্ডকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও গত এক মাসে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া বিসিসিআই-এর কাছে ফের একই প্রস্তাবের রাখে। বিসিসিআই তা ফিরিয়ে দেওয়ার পরই সান্ডারল্যান্ড এই মন্তব্য করেছেন। ভারতীয় বোর্ড বলছে ' স্পষ্টতই তিনি (সান্ডারল্যান্ড) দুই ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে অফিসিয়াল ইমেল-বিনিময়ে যে কথা হয়েছে তা জানাচ্ছেন না।'
ভারতীয় বোর্ডের ওই সূত্র বলছে, 'মাঠে বেশি লোক আনতেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া দিন-রাতের টেস্ট করতে চায়, এটা বিসিসিআই বোঝে। কিন্তু তার দায় ভারত কেন নেবে? ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া উপার্জনের হাজারটা রাস্তা ভাবতেই পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তার জন্য বিসিসিআই বা ভারতকে কলুষিত করতে হবে। ভারতের জন্যই সিদ্ধান্ত আটকে যাচ্ছে এভাবে দেখাতে হবে। সান্ডারল্য়ান্ড প্রথম থেকেই জানতেন আমাদের সিদ্ধান্ত। আমরা তা লিখিত আকারেই দিয়েছিলাম।'