ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে সেঞ্চুরি: ধোনি একটুর জন্যে ধরতে পারেননি লয়েড, পন্টিংকে
দু'হাজার ঊনিশের বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র দু'দিন বাকি। চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হওয়া এই প্রতিযোগিতার দিকে চেয়ে থাকে সারা বিশ্ব
দু'হাজার ঊনিশের বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র দু'দিন বাকি। চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হওয়া এই প্রতিযোগিতার দিকে চেয়ে থাকে সারা বিশ্ব; সমর্থকরা গলা ফাটান তাঁদের প্রিয় দলের জন্যে; খেলোয়াড়রা জান লড়িয়ে দেন বিশ্বসেরার শিরোপা জিতে ইতিহাসের পাতায় স্থায়ী নাম করে নিতে। আর বিশেষ করে কোনও ব্যাটসম্যান যদি বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারেন, তো কথাই নেই।
এখনও পর্যন্ত ছয় ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি করেছেন
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটি বিরল নয়। এখনও পর্যন্ত ছয়জন ব্যাটসম্যান এই কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। এঁরা হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়েড (১৯৭৫) ও ভিভ রিচার্ডস (১৯৭৯); শ্রীলঙ্কার অরবিন্দ ডি সিলভা (১৯৯৬) এবং মাহেলা জয়বর্ধনে (২০১১) এবং অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং (২০০৩) এবং এডাম গিলক্রিস্ট (২০০৭)।
এদের মধ্যে দু'জনের সেঞ্চুরির রেকর্ড অবশ্য বিরল এবং তাঁরা হলেন লয়েড এবং পন্টিং। এই দু'জনে শুধুমাত্র বিশ্বকাপ ফাইনালে অধিনায়ক হিসেবে শতক হাঁকিয়েছেন।
১৯৭৫ সালে ক্লাইভ লয়েড ফাইনালে করেন ১০২, বিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া
লয়েড ১৯৭৫ সালের ফাইনালে ইয়ান চ্যাপেলের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ নম্বরে এসে ৮৫ বলে ১০২ রান করে দলকে সুরক্ষিত করেন। লয়েড যখন ব্যাট করতে এসেছিলেন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ছিল ৫০ রানে ৩ উইকেট এবং রীতিমতো আগুন ঝরাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা। অপরদিকে ব্যাট করতে থাকা রোহান কানহাই (৫৫)-এর সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ১৪৯ রান যোগ করে লয়েড বড় রানের ভিত তৈরী করে দেন এবং লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের প্রচেষ্টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোট রান দাঁড়ায় ৬০ ওভারে ২৯১ রান, আট ইউকেটের বিনিময়ে। অস্ট্রেলিয়া ভালো তাড়া করলেও একগুচ্ছের রান আউটের ফলে তাদের ইনিংস থিম যায় ২৭৪ রানেই, এবং ফাইনালে সেঞ্চুরি করে দলকে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেন অধিনায়ক লয়েড।
২০০৩ সালে রিকি পন্টিং ফাইনালে বেদম প্রহার করেন ভারতের বোলারদের
এই রেকর্ডটি লয়েডের একার মালিকানায় ছিল দীর্ঘ ২৮ বছর। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে টসে জিতে ঠিক চ্যাপেলের মতোই প্রতিপক্ষকে ব্যাট করতে পাঠান ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। রিকি পন্টিং ব্যাট করতে নামেন তিন নম্বরে আর অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ১০৫ রানে ১ উইকেট। নরসংহার মূর্তি ধারণ করেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক এবং ৫০ ওভারের শেষে তিনি যখন প্যাভিলিয়নে ফিরছেন, তখন তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে নট আউট ১৪০ রান, মাত্র ১২১ বলে। অস্ট্রেলিয়ার মোট রান দাঁড়ায় ৩৫৯, দুই উইকেটে। বিশ্বকাপ ফাইনালে এই পাহাড়প্রমাণ রান তাড়া করা ভারতের পক্ষে সম্ভবপর ছিল না, তারা পারেওনি। সৌরভের দল অল আউট হয়ে যায় ২৩৪ রানে এবং পরাজিত হয় ১২৫ রানে। পন্টিং দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি করে দলকে জেতান।
২০১১তে ধোনি ফাইনালে অপরাজিত থাকেন ৯১ রানে
তৃতীয় অধিনায়ক হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করার খুব কাছাকাছি এসেছিলেন ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি, ২০১১ সালে। সেবারে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৭৫ রানের লক্ষ্য ধাওয়া করতে গিয়ে ধোনি উঠে আসেন পাঁচ নম্বরে এবং ৭৯ বলে ৯১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে বিশ্বকাপ জেতান। সেই ম্যাচে ওপেনার গৌতম গম্ভীরও ৯৭ রানে আউট হয়ে একটুর জন্যে সেঞ্চুরি ফস্কান।