ব্যাঘ্রগর্জন থামল দীনেশের শেষ বলে ছক্কায়, বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে নিদাহাস ট্রফি ঘরে তুলল ভারত
মাত্র ৮ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশকে ফাইনালে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফি ভারতকে এনে দিলেন কার্তিক।
কলম্বোয় ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বের করে আনলেন দীনেশ কার্তিক। কেকেআরের অধিনায়ক দেখিয়ে দিলেন এবারের আইপিএলে টি২০ ফর্ম্যাটে ভালো কিছু আশা করতেই পারেন কলকাতার সমর্থকেরা। শেষদিকে নেমে মাত্র ৮ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশকে ফাইনালে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফি ভারতকে এনে দিলেন কার্তিক। শেষ বলে ছক্কা মেরে ভারতকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি।
এদিন টসে জিতে রোহিত কলম্বোর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন। শুরু থেকেই স্পিনার দিয়ে আক্রমণে যায় ভারত। ওপেনার তামিম ইকবাল (১৫ রান) ও লিটন দাসকে (১১ রান) তুলে নেন যুজবেন্দ্র চাহাল ও ওয়াশিংটন সুন্দর। ৩৩ রানের মধ্যে ৩ উইকেট পড়ে যায়। সৌম্য সরকার ১ রান করে চাহালের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
তবে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা সাব্বির রহমান মাত্র ৫০ বলে অনবদ্য ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন। অন্যদিকে মুশফিকুর রহমান (৯ রান), মাহমুদুল্লাহ (২১ রান), শাকিব আল হাসান (৭ রান) কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।
শেষদিকে মেহদি হাসান ৭ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। সবমিলিয়ে ৮ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ ১৬৬ রান করে।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে বিস্ফোরক শুরু করে ভারত। নেতৃত্বে রোহিত শর্মা। তবে তৃতীয় ওভারেই উইকেটের অন্য প্রান্ত থেকে শিখর ধাওয়ান (১০ রান) ফিরে যান। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা সুরেশ রায়না শূন্য রানে ফেরেন।
রোহিত তৃতীয় উইকেটে কেএল রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন। রাহুল আক্রমণাত্মক শুরু করেও ২১ রান করে ফেরেন। এরপরে নামেন মনীশ পাণ্ডে। তবে তিনি শুরুটা ধীর গতিতে করায় রোহিত রান রেট বাড়াতে গিয়ে লং অনে নাজমুল ইসলামের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
তারপরই চাপে পড়ে যায় ভারত। মনীশ ধীরগতির খেলা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। যার ফলে আস্কিং রেট বাড়তে থাকে। রোহিতের আউট হওয়ার পর অভিজ্ঞ দীনেশ কার্তিকের আগে নামানো হয় এই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নামা আনকোরা বিজয় শঙ্করকে।
১৮তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের অনবদ্য বোলিংয়ে ম্যাচ ততক্ষণে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। বিজয় শঙ্করকে ৫টি ডট বল খেলিয়ে শেষ বলে মনীশ পাণ্ডেকে (২৮ রান) আউট করেন মুস্তাফিজুর।
ভারতের জয়ের আশা প্রায় শেষ এই অবস্থায় ইনিংসের ১৯তম ওভারে নামেন দীনেশ কার্তিক। সেখান থেকেই ম্যাচ বদলে যায়। প্রথম বলে ছয় মেরে শুরু করেন কার্তিক। রুবেল হুসেনের ওভারে শেষপর্যন্ত ২২ রান নেন। শেষ দুই ওভারে জিততে গেলে প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। শেষ ওভারে সেটা গিয়ে দাঁড়ায় ১৩ রানে। অন্যপ্রান্তে ব্যাট করা বিজয় শঙ্কর খুব বেশি এগোতে পারেননি। তিনি শেষ অবধি ১৯ বলে ১৭ রান করে ফেরেন।
শেষবলে ৫ রান প্রয়োজন ছিল ভারতের। দীনেশ কার্তিক শেষ বলে ছক্কা মেরে জিতিয়ে দেন। শেষপর্যন্ত ৮ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত থাকলেন কার্তিক। বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে নিদাহাস ট্রফি ঘরে তুলল ভারত।