বাবার চায়ের দোকান থেকে একদিন বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল একতা,পড়ুন এক দুর্দান্ত লড়াইয়ের কাহিনি
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেট তো আর একদিনের ফসল নয়, লড়াই লুকিয়ে রয়েছে জীবনের প্রতিটা পাতায়।
ভারত বনাম পাকিস্তান লড়াই সবসময়েই লাইমলাইটে থাকে। আর সেখানে যদি নজর কাড়া পারফরেমন্স কেউ দিতে পারে তাহলে তো কথাই নেই। এমনটাই করে দেখিয়েছেন আলমোড়ার একতা বিস্ত। ভারতীয় মহিলা ব্রিগেডের বাঁ হাতি স্পিনার দেখিয়েছেন কীরকম পাক ব্য়াটসম্যানরা তাঁর বোলিংয়ে মাত হয়ে গেছেন।যাঁর হাত দিয়ে এরকম দুরন্ত স্পিন বেরোয় তাঁর জীবনযুদ্ধটা কিন্তু মারাত্মক। একতা বিস্তের লড়াইয়ে পাশে থেকে লড়াই করেছেন তাঁর পুরো পরিবার। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মেয়ের স্বপ্নকে নিজের স্বপ্ন করে নিয়েছেন একতার বাবা কুন্দন সিং বিস্ত।[আরও পড়ুন:ক্রিকেট খেলে কোটি কোটি টাকা আয় জসপ্রীত বুমরাহের কিন্তু তার দাদু পেট চালাতে অটো চালান]
১৯৮৮ সাল ভারতীয় আর্মির হাওয়ালদার পোস্ট থেকে অবসর গ্রহণ করেন কুন্দন সিং বিস্ত। মাসে পেনশন দেড় হাজার টাকা। পরিবারে স্ত্রী একতা ছাড়াও আরও দুই সন্তান। পরিবারের সমস্ত চাহিদা মেটাতে চায়ের দোকান খোলেন কুন্দন সিং বিস্ত। আলমোড়ার শীতে রাতের পর রাত জেগে দোকান চালিয়েছেন তিনি। মেয়ে একতা ক্রিকেট খেলতে ভালবাসে, এই সামর্থ্য থেকেই তার জন্য দিয়েছেন অর্থের যোগান।[আরও পড়ুন:হার্দিককে তাঁর সুইমিং পুলে কেন ডাকলেন দীনেশ কার্তিকের স্ত্রী দীপিকা,ভাইরাল খবর ইন্টারনেটে]
শুরুর দিনের সেই লড়াই আজও একতার স্মৃতিতে অম্লান। তেমনি তাঁর বাবাও ভোলেননি মেয়ের কেরিয়ারের একটা অধ্যায়ও। মাত্র ছ বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু একতা বিস্তের। ২০১১ সালে জাতীয় দলে পা রাখা। ২০১২ সালে আইসিসি মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে প্রথম নজর কাড়েন। শুধু এবারের বিশ্বকাপেই নয়, এর আগেও পাকিস্তান দলের বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। মাত্র ৮ রান দিয়ে সেবার পাকিস্তানের পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।[আরও পড়ুন:ভারতের খেলার জগতের নতুন রানী, যাঁর কাছে হার মানছে দিশা পাটানির মত বলিউড তারকা]
মেয়ের ঘূর্নির প্রশংসায় যখন পঞ্চমুখ সব মহল তখন তাঁর মা তারা বিস্তও দারুণ খুশি মেয়ের সাফল্যে। তাঁর মন মেয়ের শুরুর দিনের লড়াই। এও জানাচ্ছেন মেয়ে জাতীয় দলে ঢোকার পরই আস্তে আস্তে বদলে যেতে থাকে পরিবারের লড়াইয়ের ছবিটা। এখন একতার বাবাকেও আর চায়ের দোকান চালাতে হয় না। কোচ লিয়াকৎ খান ছাত্রীর পারফরমেন্সে দারুণ খুশি। ২০০৬ সালে উত্তরাখন্ডের মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক এক সময় ভেঙে পড়েছিলেন জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে। কিন্তু এখন সেসব অতীত। সামনে আরও এগিয়ে যাওয়ার স্বপ নিয়ে লড়াই চালাচ্ছেন 'বিস্ট' একতা বিস্ত।