একটি সিদ্ধান্তই বদলে দিয়েছিল সচিনের জীবন, বিশ্ব ক্রিকেট পেয়েছিল সেরা তারকাকে, কী সেই সিদ্ধান্ত জানেন
কীভাবে ক্রিকেট সচিনের জীবন শুরু হল। কীভাবে বদলে গেল ঘটনা প্রবাহ। ভারত কীভাবে পেল বিশ্ব ক্রিকেটের সেরার সেরা নক্ষত্রকে? এই সমস্তকিছুই নতুন করে প্রকাশিত হয়ে একটি বইয়ে।
সচিন রমেশ তেন্ডুলকর। বিশ্ব ক্রিকেটে যত ক্রিকেট তারকা এসেছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই মানুষটিই। রেকর্ডের বিচারে সচিনের ধারেকাছে কেউ নেই। কেউ কোনওদিন পৌঁছতে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। একমাত্র যদি কারও সঙ্গে সচিনের তুলনা হয় তিনি হলেন কিংবদন্তি ডন ব্র্যাডম্যান। তবে এই ব্র্যাডম্যানও সচিনের খেলার ভক্ত ছিলেন। কীভাবে ক্রিকেট সচিনের জীবন শুরু হল। কীভাবে বদলে গেল ঘটনা প্রবাহ। ভারত কীভাবে পেল বিশ্ব ক্রিকেটের সেরার সেরা নক্ষত্রকে? এই সমস্তকিছুই নতুন করে প্রকাশিত হয়ে একটি বইয়ে। তার নাম 'উইনিং লাইক সচিন : থিঙ্ক অ্যান্ড সাকসিড লাইক তেন্ডুলকর'। বইটি লিখেছেন দেবেন্দ্র প্রভুদেশাই।
আচরেকরের কাছে সচিন
সাল ১৯৮৪। সচিন তখন ১১ বছর। তাঁকে দাদা অজিত কোচ রমাকান্ত আচরেকরের কাছে নিয়ে যান। সচিনকে প্রথম দর্শনেই আচরেকর বুঝেছিলেন, এই ছেলে চলে যেতে আসেনি। অনেকদূর যাবে। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতেই সচিন এসেছে, একথা বুঝে যান আচরেকর।
আচরেকরের পরামর্শ
ঘটনা হল, সচিন পড়াশোনা করত বান্দ্রার ইংরেজি-মিডিয়াম স্কুলে। যাদের কোনও ক্রিকেট টিম ছিল না। তাই আচরেকর বলেন, সচিনকে স্কুল পাল্টিয়ে সারদাশ্রম স্কুলে ভর্তি করতে। সেখানে ইংরেজি ও মারাঠি বিভাগের ক্রিকেট দল ছিল। বান্দ্রায় সচিন থাকত সাহিত্য সহবাস আবাসনে। সেখান থেকে দাদরের সারদাশ্রম স্কুল অনেক দূর ছিল।
বড় সিদ্ধান্তের সামনে সচিন
একটি বাসে সারদাশ্রম যাওয়া যেত না। ফলে সচিনকে বাস বদল করতে হতো। তাও সেটা করতে হতো অনেক ভোরে। কারণ সকাল ৭টা স্কুল শুরু হতো। এই বয়সে সচিনের অন্য বন্ধুরা অনেক আরামে জীবন কাটিয়েছে। তবে সচিন ক্রিকেটকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন। ফলে সারদাশ্রমে পড়বেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
পরিবারে আলোচনা
সচিনের বাবা রমেশ তেন্ডুলকর চেয়েছিলেন ছেলে লেখাপড়া করুক। তবে তার চেয়েও বেশি চেয়েছিলেন নিজের ইচ্ছেমতো বড় হোক সচিন। যা চাইছে তাই করুক। আর সেজন্য গোটা পরিবার বসে সিদ্ধান্ত নেয় সচিনের সারদাশ্রমে পড়াশোনা করা ঠিক হবে কিনা। শেষ অবধি সকলে পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য সচিনের উপরেই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন।
সচিনের সিদ্ধান্ত
সচিনকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, পরিবার তাঁর পাশে থাকবে। এবং সেই দেখে সচিন আমোদ-প্রমোদ দূরে সরিয়ে ক্রিকেটের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে রাজি হন। ভর্তি হয়ে যান সারদাশ্রম স্কুলে। যা শেষ অবধি সচিনের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পিছনে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত হিসাবে উঠে এসেছে।
কৃতজ্ঞ সচিন
সচিন ও তাঁর পুরো পরিবার সবসময় রমাকান্ত আচরেকরের কাছে কৃতজ্ঞ থেকেছেন। আচরেকরের ওই পরামর্শ না মানলে সচিন আজকের সচিন তেন্ডুলকর হয়ে উঠতে পারতেন না। এরকম নানা ঘটনাই যা সচিনের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ তা রূপা পাবলিকেশনের বইয়ে লেখা রয়েছে।