ম্যাঞ্চেস্টারে ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে সাতে-সাত ভারতের
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ সমান অটুট থাকলেও বিরাট কোহলির দলকে বিন্দুমাত্র লড়াই দেওয়ার মতো জায়গায় আর পাকিস্তান নেই।
একেবারে ক্লিনিক্যাল ফিনিশ ছাড়া কী বলা যায় এই ম্যাচকে! ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ সমান অটুট থাকলেও বিরাট কোহলির দলকে বিন্দুমাত্র লড়াই দেওয়ার মতো জায়গায় আর পাকিস্তান নেই। এদিনের ম্যাচের পরে একথা স্বীকার করতে আর কোনও বাধা রইল না। ম্যাঞ্চেস্টারের মাঠে পাকিস্তানকে ৮৯ রানে হারিয়ে ফের একবার বড় জয় পেল ভারত। এবং একই সঙ্গে বিশ্বকাপে সাতটি ম্যাচ খেলে সাতবারই প্রতিবেশী দেশকে হারিয়ে নিজেদের একশো শতাংশ জয়ের রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখল টিম ইন্ডিয়া।
এদিন ওল্ড ট্রাফোর্ডে টসে জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। বিরাট কোহলির কি পিছিয়ে থেকে ম্যাচে নামলেন এই আলোচনা যখন চলছে তখন একেবারে শুরু থেকেই ম্যাচ নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নেন ভারতের দুই ওপেনার। শিখর ধাওয়ানের পরিবর্তে ওপেন করতে নামেন কেএল রাহুল। রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে রোহিত শর্মা দুর্দান্ত শুরু এনে দেন ভারতকে।
পাকিস্তানের কোনও প্রভাব ফেলতে পারেননি ম্যাচে। রাহুল অনবদ্য ৫৭ রানের ইনিংস খেলে ফিরে গেলেও হিটম্যান রোহিত শর্মা এই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় এবং একদিনের ক্রিকেটের ২৪ তম শতরান সেরে ফেললেন। এদিন মাত্র ১১৩ বলে ১৪০ রান করে আউট হন তিনি। রোহিত যখন আউট হন তখন মাত্র ৩৯ তম ওভারের খেলা চলছে। ফলে এদিন টিকে থাকলে হয়তো একদিনের ক্রিকেটে চতুর্থ দ্বিশতরান করে ফেলতেন হিটম্যান।
তবে তিনি ফিরে যাওয়ার পর বিরাট কোহলি নেতৃত্ব দিয়ে ব্যাটিংকে টেনে নিয়ে যান। কোহলি ফের একবার অনবদ্য খেলে ৭৭ রান করেন। চার নম্বরে নামা হার্দিক পান্ডিয়া ২৬ ও একেবারে শেষ দিকে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বিজয় শঙ্কর ১৫ ও কেদার যাদব ৯ রানে অপরাজিত থাকেন। সব মিলিয়ে ভারত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৬ রান তোলে।
এরপর কিছুক্ষণ বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ থাকে। তারপর পাকিস্তান এই বিশাল রানের টার্গেট তাড়া করতে নামে। যদিও শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি। এদিকে ভুবনেশ্বর কুমার তৃতীয় ওভার বল করার ফাঁকে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট লেগে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই ওভারের শেষ দুটি বল করতে আসেন প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বিজয় শঙ্কর। এবং প্রথম বলেই তিনি আউট করে ফেরান ইমাম-উল-হককে।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ফখর জামান ৬২ ও বাবর আজম ৪৮ রান করে পাকিস্তানি ইনিংস টানছিলেন। তবে এই দুজন ফিরতেই ফের একবার পাকিস্তান ব্যাটিং ধস নামে। মাত্র ১২ রানের মধ্যে চারটি উইকেট খুইয়ে পাকিস্তান একেবারে কোণঠাসা হয়ে যায়। আর পাকিস্তানকে ম্যাচে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফের একবার ৩৫ ওভার শেষে বৃষ্টি নামে। ঘন্টাখানেক খেলা বন্ধ থাকার পর ম্যাচ শুরু হলে ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে পাকিস্তানকে ৫ ওভারে তুলতে হতো ১৩৬ রান।
যা সম্ভব ছিল না।পাকিস্তান সেখানে ম্যাচ হেরে বসে। শেষ অবধি ৪০ ওভার শেষে পাকিস্তান ৬ উইকেটে ২১২ রানে ইনিংস শেষ করে। এবং ম্যাচ হারে ৮৯ রানে।
এই জয়ের ফলে ভারত চার ম্যাচে ৭ পয়েন্ট পেল। এবং পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে উঠে এল। এবং পাকিস্তান পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি জয় এবং ৩ পয়েন্ট সহ নেমে গেল নয় নম্বরে। এখন পাকিস্তানকে পরের রাউন্ডে উঠতে হলে সবকটি ম্যাচে জিততে হবে। ফলে ধরে নেওয়া যায় পাকিস্তানের বিশ্বকাপের আশা প্রায় শেষ হওয়ার পথে।
এদিকে ভারত একইসঙ্গে বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে সাতটি ম্যাচ খেলে সাতটিতেই হারিয়ে নিজেদের রেকর্ড অক্ষুন্ন রাখল। এদিন পাকিস্তান ব্যাটে-বলে কোনও দিক থেকেই ভারতের সঙ্গে লড়াই দিতে পারেনি। আর বিরাট কোহলিরা টসে হেরেও অনবদ্য ব্যাটিং-বোলিং করে ম্যাচ বের করে নিয়ে গেলেন।