শামি না ভুবি, বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জোরে বোলার হিসেবে কাকে খেলানো উচিত - পরিসংখ্যান-সহ বিশ্লেষণ
মহম্মদ শামি না ভুবনেশ্বর কুমার - আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯-এ ভারতের দ্বিতীয় জোরে বোলার হিসেবে কাকে খেলানো উচিত - পরিসংখ্যান-সহ বিশ্লেষণ।
হ্যামিল্টনে ৯২ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার লজ্জা ছাড়া ২০১৯ সালটা এখনও পর্যন্ত এডিআইতে পারফরম্যান্সের নিরিখে ভারতের জন্য বেশ ভাল গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে পর পর দুটি সিরিজে জয় পেয়েছে ভারত। বিশ্বকাপের মাত্র মাসতিনেক আগে এই দুই সিরিজ জয় নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
দেশ ছাড়ার আগে যে তিন সমস্যা নিয়ে রওনা দিয়েছিল ভারত, দুই সিরিজে সবগুলিরই সমাধান মিলেছে। অস্ট্রেলিয়া সফরের সেরা প্রাপ্তি যদি মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রত্যাবর্তন হয়ে থাকে, তাহলে সদ্য সমাপ্ত নিউজিল্যান্ড সফরের সবচেয়ে বড় পাওয়া অবশ্যই রায়ডু ও মহম্ম শামি। শেষ দুই সিরিজে ভারতের তৃতীয় জোরে বেলারের সন্ধানের ইতি ঘটিয়েছেন শামি।
শুধু তাই নয় বাংলার পেসার এতটাই ভাল বল করেছেন, যে ভারতের সামনে নতুন প্রশ্নের উদয় হয়েছে ভুবনেশ্বর না শামি - কাকে খেলানো হবে দ্বিতীয় জোরে বোলার হিসেবে। কে এগিয়ে আছেন - পরিসংখ্য়ান ধরে এখানে বিশ্লেষণ করা হল।
বোলিং-এর ধরণ
শামি ও ভুবি দুজনেই জোরে বোলার হলেও, দুজনে একেবারে ভিন্ন ধর্মী। শামির বলে ভাল গতি রয়েছে। পিচে বল জোরের উপর আঘাত করিয়ে বাড়তি বাউন্স-ও আদায় করে নিতে পারেন। পুরনো বলে রিভার্স সুইং-ও করাতে পারেন। অন্যদিকে ভুবনেশ্বরের প্রধান অস্ত্র সুইং। বলে খুব একটা গতি না থাকলেও যে কোনও পিচেই বলকে দুই দিকেই নড়াতে পারানোর দক্ষতাই তাঁকে ভয়ঙ্কর বোলার করে তুলেছে।
সাম্প্রতিক ফর্ম
সম্প্রতি দুজনেই দারুণ ফর্মে রয়েছেন। ২০১৯ সালে শামি ৭টি একদিনের ম্যাচ খেলে ২০.৬৪-এর অসাধারণ গড় নিয়ে ১৪টি উইকেট দখল করেছেন। ওবার প্রতি পান দিয়েছেন ৪.৯৩। আর ২০.৬৭ গড়ে ৮ ম্যাচে ভুবনেশ্বরের শিকার ১৫টি উইকেট। তাঁর ইকোনমি রেট ৪.৯৯। অর্থাত সাম্প্রতিক ফর্মের নিরিখে দুজনকে আলাদা করাটা প্রায় অসম্ভব
কেরিয়ার রেকর্ড
তবে দুই বোলারের কেরিয়ারের রেকর্ড দেখলে কিন্তু এগিয়ে আছেন শামিই। ৫৯টি ওডিআই খেলে ২৫.৫৩ গড় ও ৫.৪৮ ইকোনমি রেট নিয়ে তিনি মোট ১০৮টি উইকেট দখল করেছেন। সদ্য সমাপ্ত সিরিজেই তিনি ভারতীয় বোলারদের মধ্যে ১০০ উইকেটে পৌঁছনো দ্রুততম বোলার হয়েছেন। ভুবনেশ্বর কিন্তু ১১৪টি উইকেট দখল করেছেন ১০৩টি ম্যাচ খেলে। গড় খুবই সাধারণ ৩৫.৯১। তবে তাঁর ওভার প্রতি রান দেওয়ার রেকর্ড চমকে দেওয়ার মতো, ৪.৯৮।
বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে খুব বেশি খেলার সুযোগ পাননি ভুবনেশ্বর কুমার। ১টি ম্যাচ খেলে ১টিই উইকেট নিয়েছিলেন। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়ে শামিই ছিলেন ভারতের সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী বোলার। গড় ছিল ১৭.২৯।
শেষ সিদ্ধান্ত
পরিসংখ্য়ানের দিক থেকে বিচার করলে দেখা যাচ্ছে উইকেট নেওয়ার দিক থেকে এগিয়ে শামি রান আটকানোয় ভুবনেশ্বর। চোট সারিয়ে ফিরে শামি যেভাবে বল করছেন, তাতে অবশ্য বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জোরে বোলার হিসেবে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছেন বাংলার পেসারই। তবে যদি মেঘলা আবহাওয়া হয়, বা পিচ সামান্যও পেস সহায়ক হয়, তাহলে কিন্তু জসপ্রিত বুমরার পাশে এই দুই জোরে বোলারকেই খেলানো উচিত। তাতে হয়ত ভাঙতে হতে পারে কুল-চা জুটিকে।