সন্ত্রাস বা রাজনৈতিক উত্তেজনা - বাতিল হয়েছে বিশ্বকাপের ম্যাচও! জেনে নিন এরকম ৪ টি ঘটনা
আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯-এ পাকিস্তান ম্যাচ নাও খেলতে পারে ভারত। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এরকম ৪ বার ঘটেছে, যখন কোনও দল তাদের ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছে।
পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলায় শহীদ হয়েছেন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। আর এই ঘটনার জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯-এ ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের ভবিষ্যত। ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে হরভজন সিং-এর মতো অনেকেই দাবি করছেন ভারত বিশ্বকাপের ওই ম্যাচ ছেড়ে দিক।
আগামী ১৬ জুন তারিখে ম্য়াঞ্চেস্টারে হওয়ার কথা ওই ম্যাচ। এই বিষয়ে বোর্ড কর্তারা অবশ্য ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন। আইপিএল চেয়ারম্যান রাজীব শুক্লা জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পড়ে। প্রত্যেক ক্রিকেটারই স্বপ্ন দেখেন বিশ্বকাপ জেতার। কিন্তু সন্ত্রাস বা রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে কিন্তু এর আগেও বিশ্বকাপের ম্য়াচ না খেলার ঝুঁকি নেওয়া হয়েছে।
বিরাটরা যদি শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে না খেলেন সেক্ষেত্রে পঞ্চমবার মাঠের বাইরের কারণে কোনও দল ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেবে।
অস্ট্রেলিয়া বনাম শ্রীলঙ্কা, ১৯৯৬
১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক ছিল ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কায় সেইসময় গৃহযুদ্ধ চলছিল। টুর্নামেন্ট শুরুর একমাস আগেই কলম্বোয় একটি ভয়ানক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপরই নিরাপত্তার কারণে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে গ্রুপের প্রথম ম্য়াচ ছেড়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কলম্বোয় না গিয়ে তারা থেকে যায় মুম্বইয়ে। শ্রীলঙ্কা ২ পয়েন্ট পেয়েছিল। তবে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে পরের রাউন্ডে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
ওয়েস্টইন্ডিজ বনাম শ্রীলঙ্কা, ১৯৯৬
একই কারণে গ্রুপের ম্যাচ খেলতে সেই বিশ্বকাপে কলম্বোয় যায়নি ক্যারিবিয়ানরাও। ফলে আরও একবার না খেলেই ২ পয়েন্ট লাভ করেছিল শ্রীলঙ্কা। অপরাজিত থেকে গ্রুপে শীর্ষে শেষ করেছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজও অবশ্য গ্রুপে চতুর্থ হয়ে নকআউটে পৌঁছেছিল। তবে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে যায়। ফাইনালে অজিরা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেই খেলেছিল। তবে সেই ম্যাচ হয়েছিল লাহোরে। কাপ জিতেছিল শ্রীসলঙ্কা।
ইংল্যান্ড বনাম জিম্বাবোয়ে, ২০০৩
আফ্রিকা মহাদেশের ক্রিকেট বিশ্বকাপে হারারেতে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ম্যাচ খেলতে যায়নি ইংরেজ দল। প্রাণ-নাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। ম্যাচ না খেলার ফলে ইংল্যান্ড ৪ পয়েন্ট হারায়, ফলে শেষ পর্যন্ত ১২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্যায় থেকেই ছিটকে গিয়েছিল। আর ১৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে তৃতীয় হয়ে সুপার সিক্স খেলতে গিয়েছিল জিম্বাবোয়ে। সেই পর্যায়ে অবশ্য সব ম্যাচ হেরে যায় তারা।
নিউজিল্যান্ড বনাম কেনিয়া, ২০০৩
একই বিশ্বকাপে আরেক আয়োজক দেশ কেনিয়ার বিরুদ্ধে তাদের রাজধানী নাইরোবিতে ম্য়াচ খেলতে যেতে রাজি হয়নি ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। ম্যাচের আগেই আইসিসির নিরাপত্তা দলই জানিয়েছিল সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কা রয়েছে। নিউজিল্যান্ড দল এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, সেই মতো যথাযথ কোনও ব্যবস্থা কেনিয়া নেয়নি, তাই নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় তারা নাইরোবি যায়নি। দুই দলই গ্রুপ পর্যায়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সুপার সিক্সে উঠেছিল। কিন্তু সেমিফাইনালে যায় কেনিয়াই। শেষ পর্যন্ত ভারতের বিরুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল।