২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য কতটা শক্তিশালী হতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল
আর মাত্র দশ মাসের অপেক্ষা। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট জয়ের অন্যতম দাবিদার হিসেবে ভারতকেই ধরা হচ্ছে।
আর মাত্র দশ মাসের অপেক্ষা। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট জয়ের অন্যতম দাবিদার হিসেবে ভারতকেই ধরা হচ্ছে। ২০১৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ একটুর জন্য টিম ইন্ডিয়ার হাত থেকে ফস্কে যায়। সেই দুঃখ ভুলে ২০২০-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কী ঘরে আনতে পারবেন বিরাট কোহলিরা? সেই প্রশ্নের মধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের শক্তিগুলির দিকে চোখ ফেরানো যাক।
অধিনায়ক বিরাট
এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্য়ান বিরাট কোহলির অধিনায়কত্বেই অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজিত হতে চলা বিশ্বকাপে অংশ নেবে ভারত। বিরাটের মসৃণ ব্যাট ও ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্কের ওপর আস্থা রয়েছে দেশের ক্রিকেট প্রেমীদের। তাছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় বিরাটের পারফরম্যান্সও বেশ নজরকাড়া।
সহ-অধিনায়ক রোহিত
ক্রিকেটের সবকটি ফর্ম্যাটেই ব্যাট হাতে ভারতকে ভরসা জোগানো রোহিত শর্মা, এই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁকে ধরে রাখা মুশকিল হবে বলে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত। তাছাড়া জটিল মুহূর্তে অভিজ্ঞ রোহিতের পরামর্শ বিরাটের কাজে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদি না এরই মধ্যে আরও একবার ব্যক্তিত্বের সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন দুই রথি।
শিখর ধাওয়ান
চোটের জন্য ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ খেলতে খেলতেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল ভারতের বাঁ-হাতি ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে। তারপর থেকে গব্বরের পারফরম্যান্স আহামরি কিছু নয়। দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে দলে ধাওয়ানের নাম রাখা হলেও আরও একবার চোটের কারণে বাইরে চলে গিয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় সুস্থ হয়ে ফিরে এসে ২০২০ বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে কতটা ফিট রাখতে পারবেন বাঁ-হাতি, তা নিয়ে সন্দিহানে দেশের ক্রিকেট প্রেমীরা।
রাহুল-আইয়ার-পাণ্ডে
টেস্ট দল থেকে বাদ পড়লেও ভারতীয় দলের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে ম্যাচে ধারাবাহিক ভাবে ভালো খেলে চলা কেএল রাহুল, ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শিখর ধাওয়ানের যোগ্য পরিবর্ত হতে পারেন। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও রোহিত শর্মার সঙ্গে টিম ইন্ডিয়ার ইনিংস শুরু করতে নেমে তিনি সফল হন। এরপর ঘরের মাঠে একের পর এক সীমিত ওভারের সিরিজে ভালো খেলে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন তিনি।
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শ্রেয়স আইয়ার ও মণীশ পাণ্ডে ২০২০ বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট দলের মিডিল অর্ডারের ট্রাম কার্ড হতে চলেছেন বলা চলে। শ্রেয়স ইতিমধ্যেই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিলেও, দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে সিরিজে পরীক্ষিত হতে চলেছেন মণীশ।
পন্থ না স্যামসন?
ভারতীয় দলে একাধিক সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও নিজের জাত চেনাতে ব্যর্থ হয়েছেন তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থ। অনেকে তো তাঁকে বসিয়ে সঞ্জু স্যামসনকে খেলানোর দাবি তুলেছেন। যদিও টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক বিরাট কোহলির হাত ঋষভের মাথার ওপরই আছে। সেক্ষেত্রে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে সিরিজে পন্থকে শেষ বারের মতো ঝালিয়ে দেখে নেওয়া হতে পারে। তাই সঞ্জু স্যামসনকে জাতীয় দলের হয়ে খেলার যোগ্যতা প্রমাণ দিতে আরও অপেক্ষা করতেই হবে।
অল-রাউন্ডার
২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত কেমন খেলবে, তা অভিজ্ঞ রবীন্দ্র জাদেজা, কেদার যাদব ও হার্দিক পাণ্ডিয়ার পারফরম্যান্সের নির্ভর করবে। দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে সিরিজ প্রথম ব্যক্তির কাছে ড্রেস রিহার্সাল হতে চলেছে। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপে সেভাবে খাপ খুলতে না পারা দ্বিতীয় ব্যক্তির কাছে এই সিরিজ অগ্নি-পরীক্ষার সমান। আর তৃতীয় জন পিঠে অস্ত্রোপচারের পর কতটা ফিট হয়ে বাইশ গজে নামেন, সেটাই দেখার। অভিজ্ঞদের ভিড়ে তরুণ শিবম দুবেও ভারতের শক্তি হতে পারে।
স্পিন আক্রমণ
টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট যুজবেন্দ্র চাহল ২০২০ বিশ্বকাপের জন্য অবশ্যই ফার্স্ট চয়েজ। এই ভারতীয় দলে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ভালো কিছু করে দেখাতে হবে চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দরদের।
পেস আক্রমণ
টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানিয়েছেন, ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় দলে জসপ্রীত বুমরা, ভুবনেশ্বর কুমার ও মহম্মদ শামির জায়গা প্রায় পাকা। ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারতেক পেস বোলিং বিভাগে অবশিষ্ট একটি স্থানের জন্য দীপক চাহার, নভদীপ সাইনি, খলিল আহমেদ ও শার্দুল ঠাকুরের মধ্যে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি বলা চলে। যদিও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একই ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়ে দীপক সেই লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন বলেও ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি।