লর্ডসে বদলাতে পারে ভারতের প্রথম এগারো, কারা সুযোগ পাচ্ছেন, কাদেরই বা বাদ দেওয়া হচ্ছে
ভারত ও ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্টের পর ভারতের প্রথম একাদশ নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। লর্ডস টেস্টে দলে হতে পারে কিছু অদলবদল। জেনে নিন কারা থাকতে পারেন ভারতের প্রথম এগারোয়।
এজবাস্টনের হারের পর ফের ড্রয়িং বোর্ডে ফিরতে বাধ্য হয়েছে টিম ইন্ডিয়া যে ছক কষে নেমেছিল বিরাট বাহিনী তা কাজে লাগেনি। যথেষ্ট হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ হয়েছে একথা ঠিক। এও ঠিক যে ম্যাচে ভারতীয় দল বেশ কিছু ইতিবাচক মুহূর্তও তৈরি করেছিল। কিন্তু বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সুযোগকে কাজে লাগাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে।
তারপর থেকেই ভারতের দল বাছাই নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। লর্ডস টেস্টের প্রথম একাদশের জন্য বহু পরামর্শ ঘুরছে বাজারে। বেশিরভাগই প্রথম টেস্টের দলে বদল আনার পক্ষপাতি। দেখা যাক লর্ডসের প্রথম একাদশে কারা কারা থাকতে পারেন।
২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফরে ভারতের ওপেনিং স্লটকে ভরসা দিয়েছিলেন মুরলি বিজয়। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক এবার এখনও অবধি সেই ফর্ম হাতড়ে বেড়াচ্ছেন বিজয়। অফস্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হচ্ছেন। আর মিডল অর্ডার পড়ছে নতুন বলের সামনে। ভারতকে বাল কিছু করতে গেলে বিজয়কে অনেক বেশি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।
এজবাস্টনে নতুন বলের সামনে কে এল রাহুল-কে একেবারেই স্বচ্ছন্দ না দেখালেও টেস্টে তাঁর আরও সুযোগ প্রাপ্য। লর্ডস টেস্টে তাঁকে দিয়ে ওপেন করানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে বাদ পড়বেন শিখর ধাওয়ান।
বর্তমান ভারতীয় দলে মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকার দক্ষতায় চেতেশ্বর পুজারা সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন। প্রথম টেস্টে তাঁকে দলে না রাখায় অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু গত মাসে কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কসায়ারের হয়ে বলার মতো কিছু করে দেখাতে পারেননি তিনি। এসেক্সের বিরুদ্ধে অনুশীলন ম্যাচেও আহামরি ছিল না তাঁর পারফরম্যান্স। কিন্তু ভারতীয় দল মনে করছে মিডল অর্ডারে মাটি কামড়ে পড়ে তাকার জন্য তাঁকে দরকার।
শুরুর আগে থেকেই এবারের সিরিজকে বিরাট কোহলির অ্যাসিড টেস্ট হিসেবে দেখানো হয়েছে। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে তাঁর করা ১৪৯ ইংলিশ আবহাওয়ায় করা অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে ধরা হচ্ছে। ভারত এবার চাইছে তাদের অধিনায়ক দলকে জয়ের রাস্তায় নিয়ে আসুন।
লর্ডসের মাঠের সবুজ পিচে আজিঙ্কা রাহানের সেঞ্চুরি ব্রিটিশ ক্রিকেটকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই মাঠেই আবার ফিরে এসেছেন ভারতের সহঅধিনায়ক। যদিও তাঁকে এবার এখনও তাঁর সেরা ফর্মের আশপাশে পাওয়া যায়নি, তবে ভারতীয় দল আশা করছে সেঞ্চুরির সেই সুখস্মৃতি বিজড়িত মাঠে একটি ঘন্টা কাটাতে পারলেই ফের লর্ডসে ফুল ফোটাতে পারেন আজিঙ্কা।
ক্রিকেট জীবনের বেশিরভাগটাই দীনেশ কার্তিককে কাটাতে হয়েছে ধোনির ছায়ায়। এবারের ইংল্যান্ড সফরে ঋদ্ধির চোট থাকায় তিনিই এক নম্বর উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। কিন্তু এখনও উইকেটের পিছনে বা সামনে কোথাও তাকে আত্মবিশ্বাসী মনে হয়নি। এবারের যে সুযোগ তাঁর সামনে এসেছে, তা কিন্তু আর নাও আসতে পারে।
এজবাস্টনে খুব বেশি হল করার সুযোগ পাননি হার্দিক পান্ডিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে মোটের উপর ভাল খেললেও তাঁর আদৌ টেস্ট দলে খেলার যোগ্যতা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু তাঁর উপর ভরসা আছে স্বয়ং অধিনায়কের। তাই লর্ডসের দলেও তিনি থাকছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
এজবাস্টনে প্রথম ঘন্টাতেই বল পেয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তুলে নিয়েছিলেন অ্যালিস্টার কুকের উইকেট। গোটা ম্যাচ থেকে ৭ টি উইকেট পান অশ্বিন, যা ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে তাঁর সেরা পারফরম্যান্স। তাছাড়া এই ইংল্যান্ড দলে বেস কয়েকজন বাঁহাতি ব্যাটসম্য়ান আছেন। কাজেই লর্ডস টেস্টেও তাঁর জায়গা প্রায় পাকা বলা যায়। তবে বোলার অশ্বিনের পাশাপাশই ব্যাটসম্যান অশ্বিনের কাছ থেকেও ভাল পারফরম্যান্স আশা করছে ভারতীয় দল, এজবাস্টনে কিন্তু টেল এন্ডারদের রানই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আগুনে বোলিং করেছিলেন ইশান্ত শর্মা। একাই ভেঙে দিয়েছিলেন ইংলিশ মিডল অর্ডার। লর্ডসেও তাঁকে সেভাবেই চাইছে দল। ২০১৪ সফরেও লর্ডস টেস্টে একাই ৭ উইকেট তুলে নিয়ে ভারকে অসাধারণ জয় এনে দিয়েছিলেন ইসান্ত। কাজেই দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের বোলিং আত্রমণের নেতৃত্বে তাঁকেই দেখতে চায় ভারতীয় দল।
লন্ডনে এই গ্রীষ্মে অসম্ভব গরম পড়েছে। তাই লর্ডসে পিচ শুকনো থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই ভআরত দ্বিতীয় স্পিনার নিয়ে খেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে রবীন্দ্র জাদেজাকে পেছনে ফেলে দলে ডোকার সম্ভাবনা কূলদীপ যাদবের। কারণ তিনি দুদিকেই হল ঘোরাতে পারেন। তাছাড়া সীমিত ওভারের খেলায় তাঁর স্পিন রহস্যে নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন ইংরেজরা।
এজবাস্টনে খুব ভাল খেলেছেন মহম্দ শামি তা হলা যাবে না। কিন্তু তাঁর ক্ষমতা আছে এক স্পেলেই খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার। তাছাড়া ভআরতীয় দল মনে করছে পরের দিকে লর্ডসের পিচে পাটল ধরবে। আর সেক্ষেত্রে শামির রিভার্স সুইং করানোর ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে চায় ভারতীয় দল।