নয়া তারকার ব্যাটিং স্বাক্ষর! ভারতের বিরুদ্ধে ৩০০ রানের বেশি লক্ষ্যমাত্রা দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
গুয়াহাটিতে প্রথম একদিনের ম্যাচে আগে ব্যাট করে ভারতের বিরুদ্ধে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩২২ রান তুলল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শতরান করলেন শিমরন হেতমিয়ার।
গুয়াহাটিতে পাঁচ ম্যাচের একদিনের ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ভারতের বিরুদ্ধে ৩২৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭৮ বলে ১০৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে গেলেন শিমরন হেতমিয়ার। ভারতের পক্ষে লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল ৪০ রান দিয়ে নিলেন ৩টি উইকেট।
এদিন টসে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওপেন করতে এসেছিলেন কিয়েরন পাওয়েল ও অভিষেককারী চন্দ্রপল হেমরাজ। দুজনেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গীতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু দুটি বাউন্ডারি-সহ ৯ রানে পৌঁছতে না পৌঁছতেই হেমরাজকে তুলে নেন মহম্মদ শামি। ব্যাটের কানায় লেগে বল তাঁর স্টাম্প ছিটকে দেয়। বেশিক্ষণ স্থায়ী না হলেও কিন্তু তাঁর খেলায় পুরনো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান স্টাইল ও ক্লাসের ঝলক দেখা গিয়েছে।
এরপর ক্রিজে এসেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন ব্যাটিং সেনসেশন শাই হোপ। অতিরিক্ত ঝুঁকির পথে না গিয়ে, আবার অযথা গুটিয়ে না থেকে তাঁরা দ্বিতীয় উইকেটে জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানটা টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রথম পাওয়ার প্লেতে তাঁরা একমাত্র হেমরাজের উইকেট হারিয়ে ৫৯ রান তুলেছিলেন।
একদিনের সিরিজে কিয়েরন পাওয়েলের সুযোগ পাওয়া নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু প্রথম সুযোগেই তিনি মাত্র ৩৬ বলে অর্ধশতরান করে এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একটা দুর্দান্ত শুরু দিয়েছেন। অবশ্য তারপর আর বেশি দীর্ঘায়িত হয়নি তাঁর ইনিংস। তরুঁণ খলিল আহমেদের বলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে তিনি শিখর ধাওয়ানের হাতে ধরা পড়েন (৫১)।
এরপর নিজের ২০০তম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনও রান না করেই চাহালের বলে এলবিডব্লু হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন অভিজ্ঞ মার্লন স্যামুয়েলস। ১৫ ওভারে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৮৬। এইখান থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন হেতমিয়ার।
উল্টোদিকে শাই হোপ ভাল শুরু করেও শেষ পর্যন্ত একটি দায়সাড়া গোছের পুল মারতে গিয়ে শামির বলে ব্যাটের কানা লাগিয়ে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন। এদিন ভারতের হয়ে তরুণ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থের অভিষেক হলেও ভারতের উইকেটের পিছনে ছিলেন ধোনিই। তিনিই ম্যাচের আগে পন্থের হাতে একদিনের ম্যাচের টুপি তুলে দিয়েছিলেন।
হোপের মতোই ভাল শুরু করে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন রোভম্যান পাওয়েলও (২২)। জাদেজার বলে এগিয়ে এসে সুইপ মারতে গিয়েছিলেন। ব্যাটে বলে না হওয়ার বল তাঁর লেগ স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে যায়। উল্টোদিকে একের পর এক উইকেট পড়তে থাকলেও দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বেদম মেরে খেলে গিয়েছেন হেতমিয়ার।
২৫তম ওভারে শামির বলে তো তিনি পর পর ২টি চার ও ১টি ছয় মারেন। ভারতীয় পেসার বা স্পিনার কাউকেই তিনি রেয়াত করেননি। ৪১ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর তিনি আরও আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠেন। তাঁকে যোগ্য সহায়তা দিয়েছেন তাঁর অধিনায়ক (৩৮)। তবে এদিন বিস্ময়করভাবে ভারতের ফিল্ডিং-ও খারাপ হয়েছে।
হেতমিয়ার শতরানে পৌছোন শামির বলে এক্স্ট্রাকভারের উপর দিয়ে চার মেরে। মাত্র ৭৪ বলেই তিনি শতরান পূর্ণ করেন। কিন্তু তিনিও বাকি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্য়ানদের মতোই উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসার রোগে ভুগেছেন। রবীন্দ্র জাদেজার একটি নির্বিষ বল পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে পন্থের হাতে ধরা পড়েন তিনি। পন্থ এই ক্যাচটি নিলেও তাঁর ফিল্ডিংয়ে কিন্তু বেশ অখুশি দেখিয়েছে বিরাট কোহলিকে।
এরপর ৪৩তম ওভারে চাহালের বলে হোল্ডার আউট হতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তোলার গতি থমকে যায়। শেষ ৬ ওভারে মাত্র ৪২ রানই তুলতে সক্ষম হয় তারা।
ভারতের বোলারদের মধ্যে চাহাল ছাড়া ২টি করে উইকেট পেয়েছেন শামি ও জাদেজা। ১ উইকেট রেয়েছএন খলীল। তবে ২টি উইকেট পেলেও প্রচন্ড মার খেয়েছেন শামি। ১০ ওভারে ৮১ রান দিয়েছএন তিনি। উমেশ যাদব উইকেটহীন থাকেন।