চায়ের পরই ঘুরল খেলা, প্রথম দিনের শেষে সম্মানজনক জায়গায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ হায়দরাবাদ টেস্টের প্রথম দিনের শেষে ম্যাচ রিপোর্ট।
শেষ সেশনে ম্যাচে ফিরল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান তুলল তারা। আর তাতেই হায়দরাবাদ টেস্টে প্রথম দিনের শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে সম্মানজনক ২৯৫ রান তুলল তারা। অথচ একটা সময় মাত্র ১১৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুকছিল তারা। মূল প্রতিরোধ গড়ে তুললেন রাজকোট টেস্টে অর্ধশতরান করা রোস্টন চেজ (৯৮*) ও জেসন হোল্ডার (৫২)।
এদিন দিনের শুরুটা বেশ ইতিবাচকভাবেই শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শেষটাও করল ভালভাবেই কিন্তু মাঝের সময়টায় ফের প্রথম টেস্টের মতো বিপাকে পড়েছিল তারা। এদিন গোড়ালির চোট কাটিয়ে দলে ফিরে আসেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। তাঁর অনুপস্থিতিই সম্ভবত চাগিয়ে দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানদের।
দুই ওপেনার পাওয়েল ও ব্রেথওয়েট বেশ ভাল শুরু করেছিলেন। দুজনকেই জমাট দেখাচ্ছিল। এদিন ভারতের হয়ে টেস্টে অভিষেক হয় শর্দুল ঠাকুরের। উমেশের সঙ্গে তিনিই বোলিং শুরু করেছিলেন। কিন্তু নবাগতের দুর্ভাগ্য, মাত্র ১০ বল করেই কুঁচকিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তাতে অবশ্য শাপে বর হয় ভারতের।
কোহলি অশ্বিনকে আক্রমণে আনতেই আউট হন পাওয়েল (২২)। এরপর মনোসংযোগ খোয়ানোর খেসারত দেন ব্রেথওয়েটও। কূলদীপের একটি ডেলিভারিতে আগে ব্যাট চালিয়ে তিনি ৬৮ বল খেলে ১৪ রান করে এলবিডব্লু হয়ে যান। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে দারুণ ব্যাট করছিলেন শাই হোপ (৩৬)। কিন্তু বিরতির ঠিক আগের ওভারে সেই আশাও কেড়ে নেন উমেশ যাদব।
বিরতির পরে বেশিক্ষণ টেকেননি হেতমিয়ের (১২) ও সুনীল অম্ব্রিশ (১৮) -ও। দুজনকেই তুলে নেন চায়নাম্যান কূলদীপ। বেতমিয়ের তো কূলদীপের গুগলির কোনও দিশাই পাননি। সামনের পায়ে খেলতে এসেও শট নিতে পারেননি। এলবিডব্লু হয়ে যান। আর অম্ব্রিশ আউট হন কূলদীপের একটি ফ্লাইটেড ডেলিভারি ফ্লিক করতে গিয়ে কভারে রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে।
এই সময় মনে করা হয়েছিল প্রথম দিনেই ব্যাট করতে নামতে পারবে ভারত। কিন্তু এখান থেকে খেলাটা ধরে নেন চেজ। কূলদাপের বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকি ব্যাটসম্যানরা খেলতে সমস্যায় পড়লেও চেজ কিন্তু তাঁকে সহজেই খেলে দিয়েছেন। জাদেজার বিরুদ্ধে তো রীতিমতো মারমুখি ছিলেন।
তাঁকে যোগ্য সহায়তা দেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান উইকেট রক্ষক ডাওরিচ (৩০)। দুজনের ষষ্ঠ উইকেটে জুটিতে ১২৪ বলে ৬৯ রান ওঠে। শেষ পর্যন্ত ডাওরিচকে ফেরান উমেশ যাদব। উমেশের বল ডাওরিচের সামনের পায়ে লাগলেও মাঠের আম্পায়ার আউট দেননি। ভারত রিভিউ নিলে টিভি আম্পায়ার আউট দেন।
ডাওরিচের পর ক্রিজে আসেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক। এই সময় বল রিভার্স সুইং হচ্ছিল। কিন্তু চেজ তাঁর ইতিবাচক ব্যাটিং চালিয়ে যান ৮০ বলে তিনি তাঁর সপ্তম অর্ধশতরানটি তুলে নেন। হোল্ডারও দলে ফিরে এসেই দুর্দান্ত ব্যাট করেন। তাঁদের দুজনের সপ্তম উইকেট পার্টনারশিপই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের সর্বোচ্চ, ১০৪।
সেই উমেশ যাদবেরই একটি শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন। তার আগে জুড়ে যান মুল্যবান ৫২টি রান। দিনের শেষে চেজের সঙ্গে অপরাজিত আছেন দেবেন্দ্র বিশু (২*)।
শর্দুল ঠাকুর চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় ভারতের একজন জোরে বোলার কম হয়ে গিয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শর্দুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্ক্যান করাতে। এই টেস্টে তিনি আর কেলতে পারবেন কিনা এখনই বলা যাচ্ছে না।