ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ: গুয়াহাটিতে প্রথম ওয়ানডে-তে কারা থাকবেন ভারতের প্রথম একাদশে
রবিবার গুয়াহাটিতে ভারতের বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম একদিনের ম্য়াচের জন্য ভারতের সম্ভাব্য প্রথম একাদশ।
দুর্গাপূজা শেষ। রবিবার থেকে ফের শুরু ক্রিকেট উৎসব। এশিয়া কাপের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর আবার সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরছে ভারতীয় দল। গুয়াহাটিতে পাঁচ ওয়ানডে ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হচ্ছে কোহলি ব্রিগেড।
এশিয়া কাপের বিশ্রাম পর্ব কাটিয়ে দলে ফিরে এসেছেন নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও। ভারতের অবশ্য ব্য়াটিংয়ের প্রথম তিন স্লট নিয়ে চিন্তা নেই। কিন্তু অনেক পারম্যুটেশন-কম্বিনেশন করেও এখনও যথাযথ মিডল অর্ডার খুঁজে পায়নি ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এশিয়া কাপের পর এই ঘরোয়া সিরিজেও সেই খোঁজ চলবে বলাই বাহুল্য।
দেখে নেওয়া যাক এই সবকিছু মিলিয়ে কী হতে পারে রবিবারের সম্ভাব্য ভারতীয় একাদশ।
রোহিত শর্মা
ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষবার যখন বার সফরে এসেছিল ভারতের সহঅধিনায়ক তাদের বিরুদ্ধে ২৬৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন। আরও একবার তাদের সামনে দেখে নিশ্চিতভাবে চোখ চকচক করে উঠছে রোহিতের। এশিয়া কাপেও দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন তিনি।
শিখর ধাওয়ান
এশিয়াকাপে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী শিখর ধাওয়ান। ইংল্যান্ড সফরের হতাশা কাটিয়ে তাঁর ব্য়াটিংয়ের সুনাম ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে টেস্ট দল থেকে তিনি বাদ পড়েছেন। তাঁর জায়গায় এসে গিয়েছেন টিনএজ সেনসেশন পৃথ্বী শ। কাজেই আরও একবার ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেন গব্বর।
বিরাট কোহলি
এশিয়া কাপে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। তাই বেশ কয়েকদিন বাদে ফের ভারত অধিনায়ককে নীল জার্সিতে দেখা যাবে। সিরিজে কিন্তু তাঁর জন্য বেশ কিছু ব্যাক্তিগত মাইলফলক অপেক্ষা করে রয়েছে।
আম্বাতি রায়ডু
তাঁর প্রতিভা নিয়ে কারোর মনেই কোনও সংশয় নেই। এশিয়া কাপে সুযোগ পেয়ে সেই প্রতিভার প্রতি সুবিচারও করেছেন তিনি। ছয়দলীয় টুর্নামেন্টে তিনি বেশ কিছু ভাল ইনিংস খেলেছিলেন। কোহলির অনুপস্থিতিতে তিনি ৩ নম্বরে ব্যাট করেছিলেন। অধিনায়ক দলে ফিরে আসায় একধাপ নেমে তিনি ৪ নম্বরে ব্যাট করবেন বলেই আশা করা হচ্ছে। যদিও অতীতে অধিনায়ককে দেখা গিয়েছে রায়ডুকে নিজের জায়গা ছেড়ে দিতে।
এমএস ধোনি
প্রথমে ইংল্যান্ড, তারপর এশিয়া কাপ - ধোনি খারাপ খেলেছেন এটা বলা যাবে না। কিন্তু মহেন্দ্র সিং ধোনির যে খেলা দেখে অভ্যস্ত ভারতীয় ক্রিকেট তা দেখা যায়নি। তারপর থেকেই কিন্তু তাঁকে নিয়ে ইতিউতি কথা উঠতে শুরু করেছে। উইকেটকিপার ধোনিকে নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই। নির্ভরযোগ্য হাতের পাশাপাশি উইকেটের পিছনে ধোনির মস্তিষ্কও যথেষ্ট সচল থাকে। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে ধোনির ব্যাট ইদানিং একদমই চলছে না। বাইরে কিন্তু একজন ঋষভ পন্থ অপেক্ষা করছেন। অনেকেই এখনই তাঁকে দলে নেওয়ার পক্ষপাতি। কাজেই এই সিরিজ এমএস-এর কাছে কড়া পরীক্ষা হতে পারে।
ঋষভ পন্থ
ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য বিশ্বকাপের আগে এখনই ধোনির জায়গায় পন্থকে খেলাতে চাইছেন না। তবে পন্থ যে ভবিষ্যত তা তাঁরাও বলছেন। পন্থকে ভবিষ্যতের জন্য তারি করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে পন্থ কিন্তু লোয়ার অর্ডারে বাল রান করতে পারেন, ম্য়াচ শেষ করার ক্ষমতাও রয়েছে। টেস্ট সিরিজে দারুণ খেলার সুবাদেই তিনি একদিনের দলে জায়গা করে নিয়েছেন। গুয়াহাটিতে কিন্তু প্রথম দলে তাঁর ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল।
রবীন্দ্র জাদেজা
হঠাত করেই এশিয়া কাপে নীল জার্সিতে প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল রবীন্দ্র জাদেজার। আর পড়ে পাওয়া সেই সুযোগ তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন দারুণভাবে। সব ফর্ম্যাটের ক্রিকেটেই তিনি এই মুহূর্তে ফর্মের শিখরে রয়েছেন। কাজেই তিনিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে দলের স্পিন বিভাগকে নেতৃত্ব দেবেন আশা করা হচ্ছে। বিশ্বকাপের দলে নিজের জায়গা পাকা করতে জাদেজাও ভাল পারফর্ম করতে মুখিয়ে থাকবেন।
যুজবেন্দ্র চাহাল
এই রিস্ট স্পিনার খুব স্পষ্টভাবেই ভারতীয় দলের বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় রয়েছেন। তাই তাঁকে যত বেশি সম্ভব ম্য়াচ প্র্যাকটিশ দিতে চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এশিয়া কাপে আহামরি না হলেও বেশ ভাল বল করেছিলেন চাহাল। ঘরের মাঠে আরও ভাল প্রদর্শন আশা করা হচ্ছে তাঁর থেকে।
কুলদীপ যাদব
এশিয়া কাপ এমনকী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজেও ভাল ফর্মে দেখা গিয়েছে কুলদীপ যাদবকে। সবচেয়ে বড় কথা তাঁর বোলিংয়ের শৃঙ্খলা। আরও একবার সেই পারফরম্য়ান্স দেখা যেতেই পারে কানপুরের চায়নাম্যানের কাছ থেকে।
উমেশ যাদব
একদিনের দলের পরিকল্পনায় ছিলেন না উমেশ। কিন্তু শেষ টেস্টে ১০ উইকেট শিকার ও শর্দুল ঠাকুরের চোট - এই দুইয়ের ফলে হঠাত করেই তাঁর সামনে খুলে গিয়েছে একদিনের দলের দরজা। তবে অভিজ্ঞতার জন্য এখন তাঁর উপরই দায়িত্ব দলের পেস আক্রমণকে নেতৃত্ব দেওয়ার।
খলিল আহমেদ
এশিয়া কাপে প্রথমবার স্কোয়াডে এসেছিলেন এই তরুণ বাঁহাতি পেসার। টুর্নামেন্টে দুটি ম্যাচে তিনি খেলার সুযোগ পেয়েই যথেষ্ট প্রভাবিত করেন। ভারতীয় দলে বাঁহাতি পেসারের বৈচিত্রের অভাব দূর করার কিন্তু যথেষ্ট আশা তিনি দেখিয়েছেন। ঘরোয়া সিরিজের দলে ভুবি-বুমরা না থাকায় জাহির খানের পরামর্শপ্রাপ্ত খলিল কিন্তু অন্তত প্রথম দুই ম্যাচে নিশ্চিত সুযোগ পাবেন। তা তিনি কতটা কাজে লাগাতে পারেন সেটাই দেখার।