আশা, অধিনায়ক আর এক বুড়ো - ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষয়িষ্ণু ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভরসা এই তিন
ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ একদিনের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ৩ খেলোয়াড় ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেন।
রবিবার গুয়াহাটিতে শুরু হল ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। টেস্ট সিরিজের পর একদিনের ম্যাচেও নিঃসন্দেহে ওয়েস্ট ইন্ডিজের থেকে অনেক পিছিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
একদিনের ম্যাচে এই মুহূর্তে আইসিসি ক্রমতালিকায় ভারতের স্থান ২ নম্বরে। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আছে অনেক নিচে, নবম স্থানে। তবে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলেও অন্তত তিনজন এমন ক্রিকেটার আছেন যাঁরা ব্যক্তিগত দক্ষতায় দুই দলের মধ্যে তফাত গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতন
সোনালি দিনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনেকদিন আগেই হারিয়ে গিয়েছে ঠিকই কিন্তু তাও এক দশক আগেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের এরকম খারাপ অবস্থা ছিল না। কিন্তু বিশ্বজুড়ে টি২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চালু হওয়ার সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়েছিল এই দেশেই। ক্রিকস গেইল, ডোয়েন ব্রাভো, কিয়েরন পোলার্ড, অ্যান্ড্রু রাশেল, সুনীল নারাইন, স্যামুয়েল বদ্রীর মতো একঝাঁক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার জাতীয় দলের ছেড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলা শুরু করেন। যার ফলে ঝপ করে অনেকটা পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের মান।
বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে সংশয়
ভাবলে বিস্ময় জাগে একসময়ের পর পর দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দের এখন এতটাই খারাপ অবস্থা যে আগামী বছর আইসিসি একদিনের ক্রিকেট বিশঅবকাপ খেলা নিয়েই তাদের সংশয় ছিল। তাদের যোগ্যতা অর্জন পর্ব টপকাতে হয়। সেখানে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে কতোনও মতে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৫ রানে জিতে বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করেছে তারা।
এই দলেও আছে আশা
তবে এতটা নিচে নেমে গেলেও এই দলেও কিন্তু এমন কিছু ক্রিকেটার আছেন যাঁদের নিয়ে আশা দেখতেই পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেমন শাই হোপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন ব্যাটিং তারকা। ইংল্যান্ডের হেডিংলে টেস্টে দুই ইনিংসে জোড়া শতরানের দৌলতে তিনি তাঁর আবির্ভাবেব় জানান দিয়েছিলেন।
২০১৭ সালে উইসডেনের বিচারে সেরা ৫ ক্রিকেটারের একজন ছিলেন তিনি। এখনও অবধি একদিনের ক্রিকেটে ৩৩ ইনিংসে তিনি ১১১৫ রান করেছেন। ২০১৭ সালে ভারত যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল, হোপই ছিলেন দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান। সেই সিরিজে তাঁর রান ছিল - ৮১, ২৪, ২৫ ও ৫১। চলতি সিরিজেও তাঁণর সেই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি চাইছে তাঁর দল।
অধিনায়ক জেসন হোল্ডার
তাঁর অধিনায়কত্বের সময় হোল্ডার অসংখ্য বার দলে ও কোচিং স্টাফে পরিবর্তন হতে দেখেছেন। প্রচুর টাকার হাতছানি থাকলেও দেশের হয়ে খেলা ছাড়েননি। তবে এই কারণে নয়, অধিনায়ক হোল্ডার এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অন্যতম ভরসা তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য।
৮০টি একদিনের ম্যাচে তিনি একদিকে যেমন ১১০টি উইকেট শিকার করেছএন, তেমনই ১২৬২ রানও সংগ্রহ করেছেন। হায়রাবাদের দ্বিতীয় টেস্টেও তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের ছাপ দেখা গিয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্যই চাইবে তাদের অধিনায়ক তাঁর টেস্ট ম্যাচের ফর্ম একদিনের ম্যাচেও ধরে রাখুন।
বুড়ো মার্লন স্যামুয়েসস
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার যিনি এখনও খেলছেন তিনি হলেন মার্লন স্যামুয়েলস। ১৯ বছর বয়সে তাঁর অভিষেক হয়েছিল সেই ২০০০ সালে। তারপর থেকে এখনও অবধি তিনি ৭১টি টেস্ট খেলেছেন। আর গুয়াহাটি ওডিআই হল তাঁর ২০০তম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্য়াচ।
এর উপর আবার উল্টোদিকে ভারতকে দেখলেই, বিশেষ করে ভারতের মাটিতে, তাঁর ব্যাট বেশি বেশি কথা বলা শুরু করে। এর আগের ৫টি ভারত সফরে তিনি ২৩ টি ওডিআইতে ৪৫ গড়ে ৯০৩ রান করেছেন। ৩টি শতরান ও ৬টি অর্ধশতরান রয়েছে। একমাত্র রিকি পন্টিং, কেভিন পিটারসন ও তিলকরত্নে দিলশান ছাড়া আর কোনও বিদেশী খেলোয়াড় ভারতের মাটিতে এত রান করতে পারেননি। এবারেও বুড়ো স্যামুয়েলস একটা শেষ ঝলক দেখাতে পারেন।