২২ গজে আগ্রাসন, অতীত থেকে কী শিক্ষা নিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল?
২২ গজে আগ্রাসন, অতীত থেকে কী শিক্ষা নিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল?
ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। তা নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে যেমন আলোচনা তুঙ্গে, একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচিত ম্যাচ শেষে বিজিত ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের ব্যবহার। প্রশ্ন একটাই যে কোথায় গেল ক্রিকেটীয় সৌজন্য। খেলার ময়দানকে যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে ফেলা কতটা হিতকর!
২২ গজে খেলা ছাপিয়েও ভারত বনাম বাংলাদেশের অন্য এ লড়াই-র ইতিহাস পরপর তুলে ধরা হল লেখনিতে। প্রশ্ন একটাই, অতীত থেকে কী কোনও শিক্ষা নিল না বাংলাদেশ।
২০১৬-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
২০১৬-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসেছিল ভারতে। টুর্নামেন্টের সুপার টেনের গ্রুপ দুই-র গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাংলাদেশকে ম্যাচে প্রায় জয়ের দোরগোড়ায় টেনে এনেছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। হার্দিক পান্ডিয়ার শেষ ওভারে চার হাঁকিয়ে জয়ী হওয়ার আগেই আনন্দ করতে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ওই ওভারেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন মুশফিকুর। ভারতের কাছে ১ রানে ম্যাচ হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল
সাধারণত তরুণ ক্রিকেটাররা লেজেন্ডদের দেখে শেখেন। সেই কিংবদন্তী একই দেশের ক্রিকেটার হলে তো আর কথাই নেই। বিশ্ব ক্রিকেটে ক্রমে শক্তি বাড়িয়ে চলা বাংলাদেশ যে এই মুহূর্তে ভারতকেই বাইশ গজের সেরা শত্রু মনে করে, তা সকলের জানা। কিন্তু সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে ক্রিকেটীয় সৌজন্য বজায় না রাখলে, তাতে খেলার অপমান তো বটেই।
২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কায় হওয়া ত্রিদেশীয় নিদাহাস ট্রফিতে অংশ নিয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। ওই সিরিজেই বিশ্ব ক্রিকেটে প্রথম আমদানি হয় 'নাগিন ড্যান্স' সেলিব্রেশন। তা আমদানি করেন বাংলাদেশের ক্রিকেট দল। শুধু ভারত নয়, সিরিজে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের আউট করেও ওভাবে আনন্দ করতে দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটারদেরই। টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিমরা। ম্যাচের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে ট্রফি জিতিয়ে বাংলাদেশকে জবাব দেন ভারতের দীনেশ কার্তিক। সেখান থেকেও শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল প্রতিবেশী দেশের।
ভারতকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড
২০১৫ ও ২০১৬ সালে ভারতের সর্বকালের সেরা ক্রিকেট অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ও ভারতীয় দলের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা রকম উস্কানিমূলক মিম প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা। তা নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। এমনকী ভারতের তেরঙ্গাকেও অপমান করতে ছা়ড়েননি বাংলাদেশের ক্রিকেট ফ্যানরা। এরপর এশিয়া কাপ থেকে বিশ্বকাপ, সব টুর্নামেন্টেই ভারতের কাছে হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
বিতর্কে মুশফিকুর
২০১৬-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছিল ভারত। বিরাট কোহলিদের এই হারে খুশি হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সমালোচিত হয়েছিলেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম।
ছোটদের বার্তা
হয়তো সিনিয়র ক্রিকেটারদের আচরণে উদ্বুদ্ধ হন বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটাররা। হয়তো সেই ধ্যানধারণা থাকেই অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল শেষের ভারতীয় ক্রিকেটারদের দিকে তেড়ে যেতে দ্বিধা করেননি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। কিন্তু তা যে মোটেই খেলোয়াড়োচিত নয়, তা কিন্তু পরিস্কার। আকবর আলিদের কাছে এখানে বোঝার বিষয় একটাই যে এখানে সব শেষ নয়। এখনও পথ চলা বাকি।