বিরাট কোহলিই কি একদিনের ক্রিকেটের 'গোট'? দেখুন কারা কারা তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন
বিরাট কোহলি ১০০০০ রানের ক্লাবে প্রবেশ করার পর, তিনিই একদিনের ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ব্যাটস্য়ান কিনা তাই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। দেখে নিন কোন ৫ ব্যাটসম্যান এই অবস্থানের জন্য তাঁকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে
বুধবারের ম্যাচে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি একদিনের ্করিকেটে ১০০০০ রানের ক্লাবে প্রবেশ করলেন। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করাই হোক কি রান তাড়া করাই হোক দুই ক্ষেত্রেই বিরাট অতিমানবিক ক্ষমতা দেখিয়েছেন বারে বারে। মাত্র ২১৩টি একদিনের ম্যাচ খেলেই ৫৮ গড় নিয়ে ৩৭টি শতরান করেছেন কোহলি।
এরপর, তিনিই একদিনের ক্রিকেটের 'গোট' বা গ্রেটেস্ট অব অলটাইম অর্থাত সর্বকালের সেরা কি না তাই নিয়ে আলোচনা শুকরু হয়ে গিয়েছে। কোহলির এই উত্তরণের সময়ে মাইখেল বেঙ্গলি আরও ৫ ব্যাটসম্য়ানকে খুঁজে বের করল যাঁরা একদিনের ক্রিকেটে নিজেদেরকে 'গোট' বলে দাবি জানাতে পারেন।
সচিন তেন্ডুলকর -১৮৪২৬ (গড় - ৪৪.৮৩, স্ট্রা. রে.- ৮৬.২৩ )
একদিনের ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহকারী সচিন তেন্ডুলকর। ৫১টি শতরান রয়েছে তাঁর। নয়ের দশকে ভারতের ব্যাটিংকে প্রায় একার কাঁধে ম্যাচের পর ম্যাচ টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন সচিন। পরবর্তী ক্ষেত্রে অবশ্য তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, বীরেন্দ্র সেওয়াগ, রাহুল দ্রাবিড়, এমএস ধোনিদের (প্রত্যেকেই ১০০০০ রান ক্লাবের সদস্য) মতো ব্যাটসম্যানদের থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন।
রিকি পন্টিং - ১৩৩৭৮ (গড় - ৪২.০৩, স্ট্রা. রে.- ৮০.৩৯)
একদিনের ক্রিকেটে মোট রানের তালিকায় সচিন ও সাঙ্গাকারার পরই রয়েছেন এই প্রাক্তন অস্ট্রেলিয় অধিনায়ক। বড় ম্যাচে প্রায় কখনই ব্যর্থ হননি তিনি। ২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে তাঁর ভয়ঙ্কর ব্যাটিংয়ের কথা কোনও ভারতীয় সমর্থকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এই ক্ষমতার দজোরেই তিনি জায়গা করে নিয়েছেন একদিনের ক্রিকেটের সর্বকালের সেরাদের তালিকায়। তাঁর শতরানের সংখ্যা ৩০।
সনথ জয়সূর্য - ১৩৪৩০ (গড় - ৩২.৩৬, স্ট্রা. রে.- ৯১.২০)
নয়ের দশকের মাঝামাঝি ওয়ানডে ব্যাটিংয়ের পরিভাষা একার হাতে বদলে দিয়েছিলেন সনথ জয়সূর্য। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার জেতার পিছনে তাঁর প্রথমদিকের ওভারে মারকাটারি ব্যাটিংয়ে অন্যতম প্রধান ভূমিকা ছিল। রমেশ কালুভিতারানাকে নিয়ে তিনি প্রায় বিশ্বের সব বোলিং আক্রমণকে ছিঁড়ে খেযেছিলেন সেই বিশ্বকাপে। তাঁর কেরিয়ার স্ট্রাইক রেট ৯১-এর উপরে, এই তথ্যই বলে দেয় কতটা বিস্ফোরক ওপেনার ছিলেন তিনি।
এম এস ধোনি - ১০১২৩ (গড় - ৫০.৬১, স্ট্রা. রে.- ৮৭.৮৫)
একার হাতে একদিনের ম্যাচের গতিকে ধোনির মতো দশ্ক্ষতায নিয়ন্ত্রণ করতে আর কাউকে দেখা যায়নি। এঅকদিনের ক্রিকেট যেন তাঁর জিনে। এর সঙ্গে রয়েছে তাঁর বরফ শীতল মস্তিষ্ট। তাতে সবসময়ই হিসেব চলে ম্যাচ জেতার। যে কারণেরান তাড়া করার বিষযে ধোনির বিশ্বজোড়া খ্যাতি রয়েছে। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে তাঁর উউইকেট কিপিংকে।
ভিভ রিচার্ডস - ৬৭২১ (গড় - ৪৭, স্ট্রা. রে.- ৯০.২০)
আজকের আধুনিক একদিনের ক্রিকেটের আদি পুরুষ বলা যেতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই প্রবাদপ্রতীম ক্রিকেটারকে। যেই সময় একদিনের ক্রিকেটেও টেস্টের মতো ব্যাটসম্য়ানরা প্রথম দিকে বেশ কিছু বল খেলে সেট হওয়ার পথে হাঁটতেন, সেই সময়ই নিয়মিত ১০০ বা তার বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতেন স্যার ভিভ। তাঁর সময়ের বিশ্বের যে কো বোলিং আক্রমণকে তুলোধোনা করার ক্ষমতা ছিল তাঁর। তবে শুধু ব্যাটিং-ই নয়, ক্রিকেট মাঠে বিনোদন আমদানি করাতেও সবার আগে থাকবে তাঁর নাম। মাথায় শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেরুন টুপি পড়ডে, মপখে টিউয়িং গাম চিবোতে চিবোতে মাঠে যখন ব্যাট হাতে তিনি নড়াচড়া করতেন তখন মনে হত যেন এক সিংহ পদচারণা করছে।
বিশেষ উল্লেখযোগ্য, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট - ৯৬১৯ (গড় - ৩৫.৮৯, স্ট্রা. রে.- ৯৬.৯৪)
অজি ইনিংসের শুরুতে বিপক্ষে যে বোলারই থাকুন না কেন গিলক্রিস্ট তাঁদের ওড়াতেন প্রায় মাছি তাড়ানোর ভঙ্গীতে। ১৯৯. ২০০৩, ২০০৭ - অস্ট্রেলিয়ার পর পর তিন বিশ্বকাপ জয়ে তাঁর শুরুর সেই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের কিন্তু অত্যন্ত বড় ভূমিকা ছিল। সর্বকালের সেরাদের তালিকায় হয়ত তিনি থাকবেন না কিন্তু নিশ্চিতভাবেই একদিনের ক্রিকেটের কথা আলোচনা করলে তাঁর কথা তুলতেই হবে।