আইপিএলে-র ঝলমলে আলোয় ছিল চোখ, তবু আয়কর হানাকে লুকিয়ে রাখতে পারল না বিসিসিআই
বিসিসিআইয়ের সদর দফতরে আয়কর হানা। প্রায় ১৫ ঘন্টা ধরে চলা সার্ভেতে বোর্ডের বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখে তদন্তকারী দল।
যখন আইপিএল রিটেনশানের ঝলমলে আলোয় সকলের মন মজেছিল , ঠিক তখনই বিসিসিআইয়ের সদর দফতের আয়কর আধিকারকির তল্লাশি চালাচ্ছিলেন।
বিসিসিআইয়ের সদর দফতরে আয়কর হানা। প্রায় ১৫ ঘন্টা ধরে চলা সার্ভেতে বোর্ডের বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখে তদন্তকারী দল। সকালে ঢুকে প্রায় মধ্যরাতে বেরোয় আয়কর আধিকারিকরা। সোমবার দিন দুই বিসিসিআই আধিকারিক রাহুল জোহরি ও রাঙ্গনেকরের ব্যক্তিগতভাবে আয়কর দফতরে উপস্থিত থাকতেও হয়েছিল।
টিডিএস কাটা নিয়ে বিসিসিআই যে তথ্য জমা দিয়েছে তাই খতিয়ে দেখতে এই তদন্ত অভিযান জানাচ্ছে বিসিসিআই-র সূত্র। সারা বছর বিসিসিআই বিভিন্ন সূত্র থেকে যে উপার্জন করে তার ভিত্তিতেই টিডিএস কাটার বিষয়টি নির্ভর করে।
জানুয়ারির ৪ তারিখ দুপুর ১১টা য় বিসিসিআই দফতরে ঢোকার পরের দিন রাত আড়াইটের সময় ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম থেকে বেরোন আধিকারিকরা।
প্রাথমিকভাবে পাঁচ -ছ জন আয়কর আধিকারিকরা ক্রিকেট সেন্টারে ঢুকেছিলেন। যেরকম দিন এগোয় একে একে আরও অফিসার আসেন এই তদন্তের স্বার্থে. একসময়ের পর প্রায় ডজন খানেক আধিকারিক একইসঙ্গে কাজ করছিলেন। তবে আধিকারিক বিসিসিআইয়ের সদর দফতর থেকে কোনও নথি আরও খতিয়ে দেখার জন্য নিয়ে গেছেন কিনা সেটা অবশ্য এখনও জানা যায়নি।
বিসিসিআইয়ের চিফ ফিনান্স অফিসার রাঙ্গনেকরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিসিসিআইয়ে -র নবনিযুক্ত আধিকারিক তিনি। যদিও সার্ভে চলাকালীন তিনি অনুমতি নিয়ে আইপিএলের রিটেনশান অনুষ্ঠানে বান্দ্রা হোটেলে হাজির ছিলেন। রাত নটা নাগাদ তিনি আবার বিসিসিআইয়ের অফিসে ফিরে আসেন। কারণ আয়কর আধিকারিকরা তাঁকে ফের ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাকি পুরো সার্ভের সময় জুড়েই তিনি হাজির ছিলেন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে।
এদিকে নিজের অধস্তন কর্মীদের ওপর আয়কর আধিকারিকদের ছেড়ে দিয়ে আইপিএল রিটেনশানের অনুষ্ঠানে রাঙ্গনেকরের চলে যাওয়াটাকে একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি বোর্ড। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের আধিকারিক জানিয়েছেন ওই অনুষ্ঠানে তাঁর যাওয়ার কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল না। তাও তিনি ওখানে গিয়েছিলেন। যদিও সেই বিসিসিআইয়ের আধিকারিক অবশ্য আশাবাদী আয়কর আধিকারিকরা কোনও বেনিয়ম খুঁজে পাননি।
আয়করদাতা হিসেবে ডিফল্টার না হতে বিসিসিআইকে সত্বর ১৯ কোটি টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯৬১-র আয়কর নিয়ম অনুযায়ি এই বকেয়া ধার্য করা হয়েছে। তবে ৪ ও ৫ তারিখের তদন্তের ওপরই এই টাকা দিতে হচ্ছে কিনা তা অবশ্য পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি।
তবে রাঙ্গনেকর সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন আয়কর বিভাগের এই তদন্ত একদম রুটিন ওয়ার্কের মধ্যেই পড়ে। রাত আড়েইটা অবধি তদন্ত চালানো থেকে শুরু করে আয়কর দফতরে তাঁকে ও বোর্ডের সিইও রাহুল জোহরিকে হাজিরা দিতে বলাও সাধারণ বিষয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
এদিকে দিন কয়েক আগে বিসিসিআইয়ের কোষাধক্ষ্য অনিরুদ্ধ চৌধুরী নাকি রাঙ্গনেকরকে মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছেন বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন বোর্ডের সিএফও।