লর্ডসের ময়দানে ফের বাঙালি-বিক্রম, বিশ্বকাপ ফাইনালে আগুন ঝরানো বোলিং ঝুলনের
ন্যাট ওয়েস্ট ট্রফিতে এই লর্ডসের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে জার্সি উড়িয়ে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার ভারতের জয়ের মঞ্চ তৈরি করে দিয়ে গেলেন এক বাঙালি কন্যা। তিনি ঝুলন গোস্বামী।
বাঙালি কন্যার কামাল বোলিং-এ লর্ডসের মাটিতে তৈরি হল বিশ্বজয়ের স্বপ্ন সফলের মঞ্চ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর ফের একবার লর্ডস-এর ময়দানে বাঙালির বিক্রম দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ইংল্যান্ডের মিডল-অর্ডারকে একার কাঁধেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেন চাকদহের ঝুলন। তাঁর একটি ভয়ঙ্কর স্পেলই ভারতকে ফিরিয়ে আনল ম্যাচে।
দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসেই এক ওভারে ঝুলন ফিরিয়ে দেন সারা টেলর ও উইলসনকে। আর তার পরের ওভারে এসেই স্কিভারকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়ে ম্যাচের রাশ ইংল্যান্ডের হাত থেকে কেড়ে নেন তিনি।
ইংল্যান্ড তখন তিন উইকেটে ১৪৬। অধিনায়ক মিতালি রাজ বল তুলে দেন দলের সবথেকে অভিজ্ঞ বোলারের হাতে। ৬৩ রানে তিন উইকেট পড়ে গেলেও ক্রিজে তখন জমে গিয়েছেন সারা ও স্কিভার। ঝুলন বুঝেছিলেন অভিজ্ঞতা দিয়েই বাজিমাত করতে হবে। ঠিক জায়গায় বল রাখতে হবে। তাহলেই মিলবে প্রত্যাশিত সাফল্য।
যেমন ভাবনা আর তেমন কাজ। ওভারের চার নম্বর বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নিলেন সারা টেলর। ৮৩ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে ইংল্যান্ডকে প্রত্যাঘাত করলেন সেই ঝুলন গোস্বামী। ফের পরের বলেই আবার আঘাত। মারাত্মক ইনসুইংয়ে আউট উইলসন। হ্যাটট্রিকের মুখে দাঁড়িয়ে ঝুলন। কিন্তু হ্যাটট্রিক আটকালেও পরের ওভারেই অর্ধশতরানকারী স্কাইভারকে ফিরিয়ে দিলেন আর একটি আগুনে সুইংয়ে।
ঝুলনের এই স্পেলেই ইংল্যান্ডের মিডল-অর্ডারের কোমর ভেঙে যায়। তিন উইকেটে ১৪৬ থেকে ছ'উইকেটে ১৬৪। ইংল্যান্ডের বড় রানের সম্ভাবনা এখানেই শেষ হয়ে যায়। ইংল্যান্ড ৫০ ওভার শেষে ২২৯ রানের টার্গেট দিয়েছে ভারতকে জয়ের জন্য। তাই এবার সুবর্ন সুযোগ। ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার দায়িত্ব এবার মিতালি রাজ, স্মৃতি মান্ধানা ও হরমনপ্রীত কাউরদের উপর।
বিশ্বকাপ ফাইনালে আগুন ঝরনো বোলিং করে স্বভাবতই খুশি ঝুলন গোস্বামী। তিনি জানান, 'এদিনের উইকেট ফাস্ট বোলিংয়ের উপযুক্ত ছিল না। খুব স্লো উইকেট। আদৌ বাউন্স ছিল না উইকেটে।' এমন উইকেটে সাফল্যের চাবিকাঠি কী? ঝুলন বলেন, 'অভিজ্ঞতা দিয়েই বাজিমাত করার চেষ্টা করেছি। উইকেট টু উইকেট বল করেছি। সুইংয়ে ভ্যারিয়েশন এনে ব্যাটসউইমেনকে বিপদে ফেলার চেষ্টা চালিয়েছি। আর তাতেই সাফল্য এসেছে।'
এদিন ঝুলন গোস্বামী ১০ ওভারে ২৩ রান দিয়ে তিনটি মূল্যবান উইকেট নেন। এছাড়া তিনি ৩ ওভার মেডেনও দেন। কৃপণ বোলিং করে ব্যাটসউইম্যানদের উপর চাপ সৃষ্টি করে গিয়েছেন। তারপরই আসল সময় ঝুলি থেকে বের করেছেন আগুনে বোলিং। ৬০টি বলের মধ্যে ৪৫টিই ডট বল ছিল ঝুলনের। তাঁর বলে মাত্র একটি চার মারতে সফল হন ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা।