নাইট রাইডার্সকে সংবর্ধনা: ইডেনের বাইরে লাঠি, ভিতরে পার্টি
কলকাতা নাইট রাইডার্সের সংবর্ধনার এটাই হল সারসংক্ষেপ। বাইরে জনতার ভিড়ে হিমশিম খেয়ে বেধড়ক লাঠি চালাল পুলিশ। কারও মাথা ফাটল, কারও ঘাড়ে চোট লাগল। ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র পুলিশের লাঠিচার্জকে সমর্থন করলেও চরম বিশৃঙ্খলার জন্য মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়।
গতকালই নাইট রাইডার্সদের সংবর্ধনার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ঠিক ছিল আজ, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটায় শুরু হবে অনুষ্ঠান। কিন্তু মুম্বই থেকে শাহরুখ খানের আসতে দেরি হওয়ায় ঠিক হয়, অনুষ্ঠান শুরু হবে দুপুর একটা থেকে। একটা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হলেও শাহরুখ খান এসে পৌঁছন পৌনে চারটে নাগাদ। ততক্ষণে ইডেনে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন জুহি চাওলা, কলকাতা নাইড রাইডার্সের খেলোয়াড়রা। উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে মদন মিত্র, অরূপ বিশ্বাস প্রমুখ মন্ত্রীদের। প্রসেনজিৎ, শ্রাবন্তী, সায়ন্তিকা, জুন মালিয়া, রুদ্রনীল ঘোষ, রাজ চক্রবর্তী, উষা উত্থুপ প্রমুখ ছিলেন ইডেন আলো করে।
প্রথমে জয়ের স্মারক ট্রফিটি নিয়ে ইডেন গার্ডেন প্রদক্ষিণ করেন খেলোয়াড়রা। করতালিতে দর্শকরা স্বাগত জানান। এর পর খেলোয়াড়দের একে একে বরণ করা হয় মিষ্টি, আলফোনসো আম, উত্তরীয়, নীল কোট-প্যান্ট, স্মারক ইত্যাদি দিয়ে। সিএবি-র তরফ থেকে প্রত্যেককে দেওয়া হয় এক ভরি করে সোনার আংটি। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিভাবিকার ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। এর পর শাহরুখ খান বিশালাকার একটি কেক কাটেন। তাঁর গোটা দলকে নিয়ে ট্রফি হাতে ইডেনে চক্কর কাটেন। তার পর শাহরুখ খান, বাংলা ব্যান্ড 'ভূমি'-র সৌমিত্র রায়, অভিনেতা সোহম, হিরণ, উষা উত্থুপ প্রমুখ এক সঙ্গে মঞ্চে উঠে কিছুক্ষণ নাচগান করেন। শাহরুখ খান বলেন, "কলকাতার মানুষকে ধন্যবাদ। দেশ বা দুনিয়ার কোনও প্রান্তে খেলোয়াড়দের কেউ এভাবে সম্মান জানায় না। আপনাদের সমর্থনই আমাদের শক্তি। মমতাদিকে ধন্যবাদ, আমাদের আপন করে নেওয়ার জন্য। থ্রি চিয়ার্স ফর মমতাদি। আশা করি, পরের বছরও আমরা এখানে এভাবে আসতে পারব।"
আরও পড়ুন: নাইটদের সংবর্ধনায় টাকা আছে, গরিবকে দেওয়ার টাকা নেই? প্রশ্ন হাই কোর্টের
ইডেন গার্ডেনের অন্দরে অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে হলেও সকাল থেকে চলে চরম বিশৃঙ্খলা। অভিযোগ, ইডেনে যত লোক ধরার কথা, তার থেকে বেশি পাশ ইস্যু করা হয়েছে। ফলে, অনেকেই ঢুকতে পারেননি। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে। শেষমেশ ঘোড়সওয়ার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা লাঠি চালাতে শুরু করেন। এক কিশোরীর মাথা ফেটে ঝরঝর করে রক্ত পড়তে থাকে। তা দেখে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, জলের বোতল ছুড়ে মারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। পরে ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছিল, তাতে পুলিশের লাঠি চালানো ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। বাইরে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে পড়েছিল।"