৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত ক্রিকেটে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির জনক
৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত ক্রিকেটে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির জনক
প্রয়াত হয়েছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির জনক। ৭৮ বছর বয়সে লন্ডনে প্রয়াত হয়েছেন গনিতজ্ঞ টনি লুইস। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া বিশ্বের ক্রিকেট মহলে। লুইসের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড।
পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা
১৯৯৬ সালের আগে পর্যন্ত বৃষ্টিবিঘ্নিত ওয়ান ডে ম্যাচগুলির ফয়সলা নির্ধারণ করার জন্য আইসিসি-র হাতে সেরকম লিখিত নিয়ম ছিল না। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের বৃষ্টিবিঘ্নিত সেমিফাইনালে ওভারের সেরা রান রেটের পদ্ধতি প্রয়োগ করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১ বলে ২১ রানের লক্ষ্য দেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। এরপরেই এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরির উদ্যোগ নেয় আইসিসি।
পদ্ধতির নির্মাণ
সমস্যা থেকে বেরোনোর রাস্তা খুঁজতে সেই সময় ব্রিটিশ পরিসংখ্যানবিদ ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ও গনিতজ্ঞ টনি লুইসের দ্বারস্থ হয় আইসিসি। দীর্ঘ গবেষণার পর ১৯৯৬ সালে এক পদ্ধতি তৈরি করেন ওই দুই বিশেষজ্ঞ। ১৯৯৬-১৯৯৭ মরশুমে ইংল্যান্ড বনাম জিম্বাবোয়ের এক ওয়ান ডে ম্যাচে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম এই পদ্ধতির ব্যবহার হয়। বৃষ্টিবিঘ্নিত ওই ম্যাচ নতুন নিয়মে মাত্র ৭ রানে জিতেছিল জিম্বাবোয়ে। ২০০১ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই নিয়ম গ্রহণ করে আইসিসি। নাম দেওয়া হয় ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট
২০১০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা বনাম জিম্বাবোয়ের এক ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। একই দিনে ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও ডিএল পদ্ধতির ব্যবহার ঘটে। ম্যাচ জেতেন ক্যারিবিয়ানরা। ডিএল পদ্ধতির সমালোচনায় সরব হয় ইংল্যান্ড। এই নিয়মের বিপক্ষে কথা বলতে শোনা গিয়েছে বিশ্বের অন্যান্য ক্রিকেট বোর্ডকেও।
সংশোধন
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের অধ্যাপক স্টিভেন স্টার্ন, ২০১৪ সালে পুরনো নিয়মে কিছু সংশোধন ঘটান। তার নাম দেওয়া হয় ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন বা ডিএলএস পদ্ধতি। ২০১৫ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ম্যাচে এই নতুন নিয়ম আরোপিত হয়।
লুইসের জীবন
ল্যাঙ্কাশায়ারের বল্টনে জন্ম হয় গনিতজ্ঞ টনি লুইসের। শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি গনিত ও পরিসংখ্যান শাস্ত্রে গ্র্যাজুয়েট হন। ক্রিকেট এবং গনিতে অবদানের জন্য ২০১০ সালে এমবিই সম্মানে ভূষিত হন টনি লুইস।