ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: মহিলা টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল, শাড়ি পরে ব্যাট ধরে শুভেচ্ছা জানালেন মিতালি
ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: মহিলা টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল, শাড়ি পরে ব্যাট ধরে শুভেচ্ছা জানালেন মিতালি
রবিবার মেগা ফাইনাল। মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ম্যাচ খেলতে নামছে ভারত। সুপার সানডের ফাইনালের আগে হরমনপ্রীতদের অভিনব কায়দায় শুভেচ্ছা জানালেন প্রাক্তন অধিনায়ক মিতালি রাজ।
মহীশূরে জন্ম
১৯৪৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মহীশূরের (বর্তমানে কর্ণাটক) মাণ্ড্য জেলার পাণ্ডবপুরা তালুকের মেলুকোটেতে এক তামিল আইয়েঙ্গার ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জয়রাম ও মায়ের নাম বেদবল্লী।
|
নারী দিবসের দিন বিশ্বজয়ের হাতছানি
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সামনে বিশ্বজয়ের হাতছানি। এই প্রথমবার টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার আবার চার বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। প্রতিপক্ষ অজিদের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা প্রচুর। তবে ভারতও কম যায় না। চলতি বছরের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
ঠাকুমার নামে নামকরণ
প্রথমে জন্মের সময়ে ঠাকুমার নাম অনুযায়ী জয়ার নাম কোমলাবল্লী রাখা হয়। বাহ্মণ প্রথা মেনে ২টি মোট নাম দেওয়া হয়। একটি পারিবারিক প্রথা মেনে ঠাকুমার নাম ও সঙ্গে আর একটি নিজের নাম। ১ বছর বয়সে জয়ললিতা বলে নামকরণ হয় জয়ার।
|
শুভেচ্ছায় কী জানালেন প্রাক্তন অধিনায়ক
২০১৭ সালের মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন মিতালি। রাজের উত্তরসূরিরা এবার বিশ্বকাপ ফাইনালে জয়ের থেকে এক কদম দূরে রয়েছে।দলের এই স্মরণীয় ফাইনালের আগের দিন, টিমকে বার্তা দেবেন না মিতালি রাজ তা কি হয়! হরমনপ্রীত অ্যান্ড কোম্পানির জন্য প্রাক্তন অধিনায়ক মিতালির বার্তা, 'কাম অন টিম ইন্ডিয়া। আমরাও পারি, আমরাই পারি!মহিলা ক্রিকেটে এবার আমরাই সেরা দেখিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। ট্রফিটা জিতে ফিরো। শুভেচ্ছা রইল।'
বাড়ির নামে জয়ার নাম
এই নামকরণের পিছনেও অদ্ভুত কাহিনি রয়েছে। মহীশূরে দুটি বাড়ি ছিল জয়ললিতার পরিবারের। একটি বাড়ির নাম ছিল 'জয়া নিবাস' ও অপর একটি বাড়িুর নাম ছিল 'ললিতা নিবাস'। দুটি মিলিয়ে নাম রাখা হয় জয়ললিতা।
|
শাড়ি পরে মিতালির ব্যাটিং
আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস উপলক্ষ্যে এক বিজ্ঞাপনী ভিডিওতে শাড়ি পড়ে ব্যাটিং করেছেন মিতালি। বিজ্ঞাপনের একটি শটে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, 'ওরা বলেছিল, নারী হয়ে ওঠো।' দেশের হয়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্রিকেট খেলেছেন। মিতালি প্রথম মহিলা ক্রিকেটার যিনি ওডিআইয়ে ৬ হাজার রান হাঁকান। ২০০এর বেশি ওডিআই খেলেছেন। দেশের হয়ে টেস্টে ১০টি ও টি-২০টি ৮৯ ম্যাচ। সব মিলিয়ে দেশের জার্সিতে ৩০৮ ম্যাচ! বুঝে নিতে অসুবিধে হয় না সব সমালোচনার জবাব দিয়ে ব্যাটেই উত্তর দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের আগে সেই লড়াইয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েই যেন বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে উইমেন ইন ব্লুকে আলাদা করে চার্জড আপ করলেন মিতালি।
বংশ পরিচয়
জয়ললিতারা দুই ভাই বোন। বাবা জয়রাম ও বা বেদবল্লীর অপর সন্তানের নাম জয়কুমার। সে জয়ললিতার ছোট ভাই। জয়ার ঠাকুর্দা নরসীমা রঙ্গচারী মহীশূরের রাজা কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার চতুর্থর দরবারে চিকিৎসক ছিলেন। মায়ের বাবা অর্থাৎ জয়ার দাদু শ্রীরঙ্গম থেকে মহীশূরে চলে আসেন হিন্দুস্তান এরনোটিক্স লিমিটেডে চাকরি নিয়ে। এরপরই জয়ার বাবা-মায়ের বিয়ে হয়।
বাবার মৃত্যু
জয়ার জন্মের ২ বছর পরই বাবা জয়রাম মারা যান। এরপরই সংসার চালাতে কাজে নামতে হয় জয়ার মা বেদবল্লীকে। বিধবা বেদবল্লী বোন অম্বুজাবল্লীর সঙ্গে চলে আসেন মাদ্রাজে। এদিকে জয়া থেকে যান মহীশূরে। ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি কর্ণাটকেই দাদু-দিদার কাছেই ছিলেন।
তামিল সিনেমায় মায়ের প্রবেশ
অন্যদিকে মা বেদবল্লী চেন্নাইয়ে গিয়ে কিছুদিন কাজ করার পরে নাটক ও তামিল সিনেমায় মুখ দেখাতে শুরু করেন। পর্দায় তাঁর নাম ছিল সন্ধ্যা। ১৯৫৮ সালে জয়া পাকাপাকিভাবে চেন্নাইয়ে গিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। সেখানেই স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।
লেখাপড়ায় তুখোর জয়া
অনেকেই জানেন না যে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় জয়ললিতা গোটা তামিলনাড়ুতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এজন্য তিনি 'গোল্ড স্টেট' পুরস্কারও পান। চেন্নাইয়ে যে স্কুলে তিনি পড়তেন তার নাম চার্জ পার্ক কনভেন্ট। এছাড়া তিনি পড়াশোনার জন্য সরকারি স্কলারশিপও পেয়েছিলেন। তামিল ছাড়াও কন্নর, তেলুগু, মালয়ালম, হিন্দি ও ইংরেজিতে কথা বলার দারুণ সাবলীল জয়ললিতা।
অভিনয় জীবন
১৯৬১ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সময়ে মোট ১৪০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন জয়ললিতা। তামিল সিনেমার অন্যতম কিংবদন্তি অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। তামিল ছাড়াও তেলুগু কন্নড় সিনেমায় তিনি সমান দক্ষতায় কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি নৃত্যশিল্পী হিসাবেও অসম্ভব দক্ষ ছিলেন। জয়াকে তামিল সিনেমার 'কুইন' বলেও ডাকা হয়।
রাজনৈতিক কেরিয়ার
১৯৮২ সালে অভিনেতা তথা তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এমজি রামচন্দ্রণের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন জয়ললিতা। ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভায় সাংসদ হিসাবে কাজ করেন তিনি। ১৯৮৭ সালে রামচন্দ্রণ প্রয়াত হলে দলে বিভাজন তৈরি হয়। একদল ছিলেন এমজিআরের স্ত্রী জানকি রামচন্দ্রণের দিকে আর একদল ছিলেন জয়ললিতার সঙ্গে। এর ২ বছরের মধ্যেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন জয়া। তারপর ধীরে ধীরে রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে মহীরূহ হয়ে ওঠেন।