খুব কম ব্যবধানে বিশ্বজয়ী ধোনির কাছে পরাস্ত অধিনায়ক সৌরভ! ঠিক কোথায় পার্থক্য?
খুব কম ব্যবধানে বিশ্বজয়ী ধোনির কাছে পরাস্ত অধিনায়ক সৌরভ! কোথায় পার্থক্য?
মাত্র কয়েক পয়েন্টের জন্য বিশ্বজয়ী মহেন্দ্র সিং ধোনির কাছে পরাস্ত হলেন দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের করা সমীক্ষায় ওয়ান ডে রেকর্ডে মহারাজকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন এমএসডি। কোন বিভাগে কে কত পয়েন্ট পেল, তা দেখে নেওয়া যাক।
টিম ইন্ডিয়ার পুনর্গঠন
২০০০-এর ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ড জর্জরিত ভারতীয় ক্রিকেটের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাঁধে। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেছিলেন মহারাজ। যুবশক্তি আমদানি করে বিশ্বমানের দল তৈরি করেছিলেন দাদা। অন্যদিকে এমএস ধোনি কিন্তু তৈরি দল নিয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ খেলেছিলেন বলে মনে করেন প্রাক্তনীরা। সে নিরিখে এই বিভাগে সৌরভকে ৮.৬ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। ধোনির ভাগ্যে জুটেছে ৭.৩ পয়েন্ট।
ওয়ান ডে ফর্ম্যাট
ভারতীয় ক্রিকেট দলকে ১৪৬টি ওয়ান ডে ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ৭৬টি ম্যাচে জয় হাসিল করেছে ভারত। ৬৫টি ম্যাচে হার হজম করতে হয়েছে দাদার টিম ইন্ডিয়াকে। টিম ইন্ডিয়াকে ২০০টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমএস ধোনি। ১১০টি ম্যাচে জয় হাসিল করেছে মাহির ভারত। ৭৪টি ম্যাচে হার হজম করতে হয়েছে। সে হিসেবে এই বিভাগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছে ৬.৮ পয়েন্ট। ধোনির পয়েন্ট ৮.১।
বিদেশে টেস্ট জয়
বিদেশের মাটিতে প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে কীভাবে টেস্ট ম্যাচ জিততে হয়, ভারতীয় ক্রিকেটকে শিখিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মহারাজের নেতৃত্বেই অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডকে তাদের মাটিতে টেস্টে হারাতে শুরু করেছিল টিম ইন্ডিয়া। ভারতকে আইসিসি ক্রম তালিকার আট নম্বর স্থান থেকে দুই নম্বর স্থানে তুলেছিলেন দাদা। এই বিভাগে তাঁকে ৭.২ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। তুলনামূলক ব্যর্থ এমএস ধোনি এই বিভাগে পেয়েছেন ৫.৫ পয়েন্ট।
যে দলকে রেখে গিয়েছেন
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, বীরেন্দ্র শেহওয়াগ, জাহির খানের মতো কিংবদন্তিরা। মহেন্দ্র সিং ধোনির নামও অন্তর্ভূক্ত সেই তালিকায়। সবমিলিয়ে মহারাজ তাঁর পিছনে যে দল রেখে গিয়েছিলেন, সেই শিবিরই ২০১১ সালে দেশকে বিশ্বকাপ দিয়েছিল। সে তুলনায় এমএস ধোনির উত্তরাধিকারীরা ততটাও শক্তিশালী নন বলেই দাবি প্রাক্তনীদের। এই বিভাগ সৌরভ পেয়েছেন ৭.৮ ও ধোনি পেয়েছেন ৭.৬ পয়েন্ট।
সাফল্য
অধিনায়ক হিসেবে দেশকে টি-টোয়েন্টি, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। সে নিরিখে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঝুলিতে আইসিসি ট্রফির সংখ্যা কম। ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল দাদার ভারত। এই বিভাগে ধোনির পয়েন্ট সংখ্যা ৮.৫। সৌরভের পয়েন্ট সংখ্যা ৭.২।
অধিনায়ক হিসেবে ব্যাটিং রেকর্ড
টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক হিসেবে ব্যাটিং রেকর্ডে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে টেক্কা দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এই বিভাগে এমএসের পয়েন্ট ৭.৮। সৌরভের পয়েন্ট ৭.৪।
সর্বোপরি প্রভাব
ভারতীয় ক্রিকেটে সর্বোতভাবে প্রভাব বিস্তারের নিরিখে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এই বিভাগে দাদার পয়েন্ট ৮.১। ধোনির পয়েন্ট ৭.৯।
পয়েন্টে এগিয়ে ধোনি
সবকটি বিভাগ যোগ করে যে পয়েন্ট দাঁড়াচ্ছে, তার নিরিখে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে মাত্র কয়েক পয়েন্টের জন্য হারিয়ে দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং।
সমীক্ষক ছিলেন কারা
দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অধিনায়ক যথাক্রমে গ্রেম স্মিথ, কুমার সাঙ্গাকারা, টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ওপেনার গৌতম গম্ভীর, অল-রাউন্ডার ইরফান পাঠান, ১৯৮৩-এর বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য কৃশ শ্রীকান্তের সমীক্ষায় এই ফল সামনে এসেছে।