বর্ষসেরা থেকে জাতীয় দলে সুযোগ, ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলায় আনপ্লাগড মনোজ তিওয়ারি
বাংলার জার্সি গায়ে ২০০৪-০৫ মরশুম থেকে অভিযান শুরু করেছেন মনোজ তিওয়ারি। ভাল খেলার সুবাদে ২০০৮ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হলেও একদিনের ক্রিকেট দলে এখন ব্রাত্য।
গত মরশুমে ব্যাট হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছেন মনোজ তিওয়ারি। ফলও হাতে নাতে সিএবি-র বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হয়েছেন। ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলাকে সরাসরি সাক্ষাৎকারে নিজের আনন্দ, দুঃখ মোটিভেশন নিয়ে খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিলেন বঙ্গ অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি।
আরও একটা বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার, কী ভাবে দেখছেন এই সম্মান কে?
অবশ্যই মোটিভেট করে। ভাল লাগে বছরের শেষে বর্ষসেরা পুরস্কার পেতে। মরশুমে যখনই খেলি বাংলার জার্সির জন্যই খেলি। আইপিএলেও পুনে সানরাইজার্সের জার্সি গায়ে ভাল করেছি। তবে বাংলার হয়ে ভাল খেললে অনেক বেশি ভাল লাগে। এই মরশুমে প্রচুর রান করেছি। বল হাতেও উইকেট পেয়েছি। তবে নিজের পারফরমেন্স নিয়ে আমি যেমন খুশি, তেমনি আমি যদি আরেকটা কথা না বলি তাহলে আমার সাফল্য অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আমার সাফল্যে একইরকম অংশীদার আমার বাংলা দলের সতীর্থরা। ক্রিকেট দলগত খেলা, ওঁরা পারফরমেন্স না করলে আমার সাফল্যও আসত না। একইসঙ্গে বলতে চাই আমাদের কোচ সাইরাজ বাহুতুলে , জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, রণদেব বসুরাও সাহায্য করেছেন সাফল্য পেতে।
এই সাফল্য কাকে উৎসর্গ করতে চান?
আমার বাবা কিছুদিন আগে মারা গেছেন। বাবাকে ভীষণ মিস করি। আমাকে খেলতে ভীষণভাবে মোটিভেট করতেন তিনি। আমার এই সাফল্য আমি তাঁকে উৎসর্গ করতে চাই।
বারবার পারফরমেন্স করার পরও কেন জাতীয় দলে কেন সুযোগ হয় বাংলার অলরাউন্ডার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির?
দেখুন সেটা তো আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়, আমার কাজ পারফর্ম করা। আমি সেটা করি। নির্বাচন করা নির্বাচকদের ওপর। ওঁরা ঠিক কীভাবে ভাবেন সেটা ওনারাই বলতে পারবেন।
এত পারফরমেন্স থাকা সত্ত্বেও জাতীয় দলে জায়গা না পাওয়ার আক্ষেপ নেই?
সত্যি বলতে কী খারাপ তো লাগে। কিন্তু কী হয়নি তার জন্য কান্নাকাটি করা আমার ধাত নয়। না হলে এখন আর ভাবি না। আমি অপেক্ষা করব। বছরের পর বছর ধরে খাটাখাটনি করে যাচ্ছি। পরিশ্রমের ফল একদিন দিতে হবেই, এটাই আমার বিশ্বাস।
আপনি বাংলা দলের অধিনায়ক , বাংলা ছোট ফর্মাটে সাফল্য পেলেও লম্বা ফর্মাটে সেভাবে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছে না কেন?
আমি আপনার সঙ্গে একমত নই। আপনি কি গত দু' বছরে বাংলা ক্রিকেট ফলো করেছেন, তাহলে কিন্তু ধারাবাহিকতা নেই এটা বলা ঠিক নয়। গত বছরের আগের বছর কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল বাংলা। গতবার গ্রুপ পর্বের একটা ম্যাচ একবলও খেলা হয়নি। ওটা খেললে তিন পয়েন্ট পেয়ে নক আউটে পৌঁছে যেতাম। বাংলার জুনিয়ার ক্রিকেটাররা শতরান করছে। এক একটা মরশুমে সাত -আটটা করে শতরান হচ্ছে , তাহলে কি করে বলি বলুন তো বাংলা ক্রিকেটে ধারাবাহিকতা নেই। হ্যাঁ রনজি জেতা আমারও স্বপ্ন। দলে অনেক তরুণ ক্রিকেটার , একটু সময় দিন দেখুন না কী হয়।
প্রতিটা সফল পুরুষের পিছনেই একজন নারী থাকেন, মনোজের 'লেডি লাক' কী বলছে।
নিশ্চয়, প্রথম যিনি আমার সাফল্যের নেপথ্যে আছেন তিনি আমার মা। আমি আজ যে জায়গায় পৌঁছেছি তাতে মা-বাবার অসম্ভব পরিশ্রম ছাড়া সম্ভব হত না। আমার মা-র আশীর্বাদ সবসময় আমার ওপর আছে। এছাড়াও অবশ্যই আমার স্ত্রী সুস্মিতা রয়েছেন। উনি সবসময় আমাকে মোটিভেট করেন। মানসিক ভাবে জোর দেয়, বিভিন্ন সময়ে আমায় বোঝায়। সুতরাং ওঁর সহচার্য ছাড়া এই রাস্তায় হাঁটা আমার পক্ষে সম্ভব হত না।