এজবাস্টনের ঐতিহাসিক টেস্টে ভাগ্যের চাকা পাল্টাতে মরিয়া ভারত
বিগত বেশ কিছু সফরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি ভারত। ইংল্যান্ডের মাটিতে শেষ টেস্ট সিরিজ ভারত জিতেছিল ২০০৭ সালে। এর পর ২০১১ সালে হোয়াইটওয়াশ করে ভারতকে ইংল্যান্ডের দল।
টি২০ সিরিজে ইংল্যান্ডর বিরুদ্ধে জয়ের পর ওডিআই সিরিজে মুখ থুবড়ে পড়তে হয় টিম ইন্ডিয়াকে। ইংল্যীন্ডের বিরুদ্ধে ২-১ ব্যবধানে হারতে হয় টিম ইন্ডিয়াকে। এই পরিস্থিতিতে পাঁচ টেস্টের সিরিজের প্রথম টেস্টে আগামীকাল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া।
এজবাস্টনে হতে চলা এই টেস্টের একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। আগামীকাল বিশ্ব ক্রিকেটে প্রথম দল হিসেবে ১০০০তম টেস্টটি খেলবে ইংল্যান্ড। তবে, ভারত তৈরি ঐতিহাসিক টেস্টকে জিতে নিয়ে ইংল্যান্ডকে খালি হাতে ফেরাতে।
২০০৭ সালে শেষবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ভারত। সেই সময় ভারতের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। এর পর ২০১১ এবং ২০১৪ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্বে বড় বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় টিম ইন্ডিয়া। ২০১১ সালে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করে ইংল্যান্ড। ২০১৪ সালেও এরই অ্যাকশান রিপ্লে হতে পারত। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি টেস্টে জয় তুলে নেয় ভারত। ভারত সিরিজ হাতছাড়া করে ৩-১ ব্যবধানে।
তবে, ২০১৭-এর সেপ্টেম্বর থেকে ইংল্যান্ডের টেস্টের জয়ের ধারায় ছন্দপতন ঘটেনে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে সেপ্টেম্বরের পর মোট নয়টি টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু এই ন'টি টেস্টের মধ্যে তারা জিতেছে মাত্র একটিতে।
তবে, ইংল্যান্ডের মাটিতে দাপট দেখিয়ে টেস্ট জয় কাকে বলে তা ভারত দেখিয়েছিল ২০০২ সালে লিডসে। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লিডসে ভারত দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতে নেয়। সেই ম্যাচ শতরান ছিল সৌরভের। সৌরভের পাশাপাশি লিডসে ওই ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন রাহুল দ্রাবিড়ও।
এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের যে দল খেলবে তাতে একমাত্র দীনেশ কার্তিকই ২০০৭ সালে ভারতের টেস্ট সিরিজ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন। ২০১১ এবং ২০১৪ সালে যে দল ইংল্যান্ডে খেলেছিল তাঁর মধ্যে রয়েচেন বিরাট কোহলি এবং ইশান্ত শর্মা।
তবে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত যে দল খেলবে তাতে অভিজ্ঞতা থাকলেও ইদানিং ফর্ম একেবারেই ভাল নয়। অজিঙ্ক রাহানেকে ওডিআই সিরিজে না রাখায় দেশজুড়ে তুলোধনা করা হয়েছিল বিসিসিআইয়ের আধিকারিকদের। ফলে টেস্টে রাহানের উপর অনেকটাই নির্ভর করবে ভারতের পারফরম্যান্স। অন্য দিকে, একেবারেই ছন্দে নেই চেতেশ্বর পূজারা। এসেক্সের বিরুদ্ধে প্র্যাক্টিস ম্যাচে ব্যাটে সে ভাবে রান পাননি তিনি।
রান পায়নি শিখর ধবনও। দু'টি ইনিংস মিলিয়ে এসেক্সের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রহ শূন্য। সেভাবে সফল নন বিরাট কোহলিও তবে বোলিং লাইনআপ কিন্তু স্বস্তি দিচ্ছে ভারতকে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং ইশান্ত শর্মার কাউন্টি অভিজ্ঞতা এই সিরিজে কাজে আসবে বলেই মনে করে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে, ব্যাটিংই যে এই সিরিজে ভারতের ভাগ্য ঠিক করে দেবে তা জানে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
আর সেই কারণেই ব্যাটিং লাইনআপে পরিবর্তন আসতে পারে ভারতের। শিখর ধবনের পরিবর্তে এজবাস্টন টেস্টে মরলী বিজয়ের ওপেনিং পার্টনার হতে পারেন কেএল রাহুল। শিখর ধবনের পরিবর্তে হয়তো এই টেস্টে দলে সুযোগ পেতে পরেন করুণ নায়ার। তরুণ উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থের সুযোগ হয়ত এই ম্যাচে হবে ডাগআউটেই।
অন্য দিকে, এই ম্যাচে পাঁচ জন বোলার নিয়ে খেলতে পারে ভারত। একজন স্পিনার এবং চার পেসার নিয়ে খেলতে চায় ভারত। অন্তত এমনটাই খবর ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে। সেক্ষেত্রে একমাত্র লিডিং স্পিনার হিসেবে দলে সুযোগ পেতে পারেন রবিচন্দ্র অশ্বিন। পেস লাইনআপের দায়িত্ব হয়তো থাকবে মহম্মদ সামির উপর। সামি ছাড়াও দলে থাকতে পারেন ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব এবং শার্দূল ঠাকুর।