বিশ্বকাপে কি ভারত মিস করল পূজারা-ট্রেন - 'নতুন দেওয়াল'-এর জন্মদিনে বিশেষ প্রতিবেদন
আসন্ন বিশ্বকাপে কেন ওডিআই-তে ভারতের ৪ নম্বর হিসাবে পুজারাকে বিবেচনা করা উচিত ছিল - তাঁর জন্মদিনে এই বিষয়ে এক বিশেষ প্রতিবেদন।
গত কয়েক বছরে ভারতের টেস্ট দলের মেরুদণ্ড হয়ে উঠেছেন সৌরাষ্ট্রের ব্যাটসম্যান চেতেশ্বর পূজারা। কঠিন পরিস্থিতিতে ভারতীয় দলের হাল ধরার ক্ষেত্রে এমনকী বিরাট কোহলির থেকেও বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছেন তিনি। শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি), ৩১ বছরে পা দিলেন ভারতীয় ব্যাটিং-এর 'নতুন দেওয়াল'। বর্তমানে তিনি কর্ণাটকের বিরুদ্ধে রাজ্য দলের হয়ে রঞ্জি ট্রফি ফাইনাল খেলতে ব্যস্ত।
২০১০ সালে বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল পূজারার। তারপর থেকে ৬৮ টেস্টে তিনি ৫৪২৬ রান করেছেন। গড় ৫১.১৮, শতরান ১৮টি ও অর্ধশতরান ২০টি। লাল বলে এত সফল হওয়া সত্ত্বেও পূজারাকে কখনই একদিনের দলে খেলানোর কথা ভাবা হয়নি। বছরের পর বছর তিনি অবিক্রিত থাকেন আইপিএল-এও।
অথচ অনেকেই মনে করেন, একদিনের দলে যখন ভারত নির্ভরযোগ্য ৪ নম্বরের অভাবে ভুগছে, তখন পূজারার একটা সুযোগ পাওয়া উচিত ছিল। তাঁর জন্মদিনের দিন দেখে নেওয়া যাক এই ভাবনার পক্ষে কী কী যুক্তি রয়েছে।
পূজারার সাম্প্রতিক ফর্ম
সদ্য সমাপ্ত অস্ট্রেলিয়া সফরে একটা দুরন্ত সময় কাটিয়েছেন তিনি। ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে প্রধান ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। ৭ ইনিংসে ৩টি শতরান-সহ ৭৪-এর উপর গড় নিয়ে তিনি ৫২১ রান করেন। শুধু তাই নয়, অ্যাডিলেড হোক কী মেলবোর্ন বা সিডনি, যখনই ভারতীয় দল বিপদে পড়েছে, ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। সিরিজ সেরার পুরস্কারটা তাঁকে ছাড়া আর কাউকে দেওয়ার কথা ভাবাই যায়নি। অস্ট্রেলিয়ায় রায়ডু ব্যর্থতার পর পূজারার ফর্মকে কাজে লাগানো উচিত ছিল নির্বাচকদের।
ইনিংস থিতু করার আদর্শ লোক
ভারতের টপ অর্ডারের প্রথম তিনজনই স্ট্রোক প্লেয়ার। রায়ডুও তাই। এই অবস্থায় সিডনি একদিনের ম্যাচের মতো দ্রুত উইকেট পড়লে ইনিংসকে তু করার আদর্শ ব্যক্তি হতে পারেন পূজারা। অস্ট্রেলিয়ায় ধোনি এই ভূমিকায় দারুণ সফল হয়েছেন ঠিকই কিন্তু তাঁর ব্যাটিং দক্ষতার কথা মাথায় রেখেও বলতেই হয়, এই ক্ষেত্রে ধোনির থেকে কিন্তু অনেক এগিয়ে আছেন পূজারা।
বোলিং সহায়ক বিশ্বকাপ
আসন্ন বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ডে। যেখানকার পিচ উপমহাদেশের মতো পাটা নয়, বোলাররা অনেক সাহায্য় পেয়ে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে পূদারার মতো টেকনিকাল দিক থেকে এগিয়ে থাকা ব্যাটসম্যানের সফল হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু অনেক বেশি। এই দিক থেকে একমাত্র রাহানে ছাড়া ভারতের ৪ নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পাওয়া কেউ পূজারার ধারে কাছে নেই। এর সঙ্গে ইংল্যান্ডে পূজারার কাউন্টি খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে।
মারতেও পারেন পূজারা
প্রথম থেকেই পূজারার নামে টেস্ট ক্রিকেটার তকমাটা এঁটে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে কিন্তু বহুপবার দেখা গিয়েছে উইকেটে একবার সেট হয়ে গেলে মেরে খেলাতেও কম যান না পূজারা। সম্প্রতি এক সাকারে তিনি নিজেও দাবি করেছেন, লাল বলের মতোই সমান দক্ষ তিনি সাদা বলের ক্রিকেটেও। কাউন্টিতে তাঁর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্য়াটিং দেখে অনেকেই কিন্তু দেশের জার্সিতে তাঁর সাদা বলের ক্রিকেটে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে বিস্মিত হয়েছেন।
লম্বা দৌড়ে সফল অনেক 'টেস্ট ব্য়াটসম্যানই'
কেরিয়ারের
শুরুতে
দিলীপ
ভেঙ্গসরকার,
মহম্মদ
আজহারউদ্দিন,
রাহুল
দ্রাবিড়দের
নামেও
টেস্ট
ব্য়াটসম্য়ানের
তকমা
আঁটা
ছিল।
কিন্তু
পরবর্তীকালে
এঁরা
প্রত্যেকেই
কিন্তু
টেস্টের
পাশাপাশি
একদিনের
ক্রিকেটেও
সফল
হয়েছেন।
পূজারাকে
সেই
সময়টাই
দেওয়া
হয়নি।
মাত্র
৫টি
ম্যাচ
খেলিয়েই
তাঁকে
'টেস্ট
প্লেয়ার'
আখ্যা
দিয়ে
বন্ধ
করে
দেওয়া
হয়েছে
সাদা
বলের
ক্রিকেটের
দরজা।
বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত ভারতের ৪ নম্বরে কে সুযোগ পাবেন, তা এখন ঠিক করা যায়নি। তবে ভারতের হাতে আর মাত্র ৬টি ওডিআই রয়েছে। যার মধ্যে নিউজিল্যান্ডেই হবে আরও ৪টি ম্যাচ। কাজেই বিশ্বকাপের আগে পূজারাকে সুযোগ দেওয়ার আর উপায় নেইবারের মতো পূজারা-ট্রেন মিসই হল ভারতের।