জীবনের প্রথম বিশ্বকাপই শেষ বিশ্বকাপ হতে পারে যে সমস্ত তারকা ক্রিকেটারদের
ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম তিন আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে। তারপর চতুর্থ বিশ্বকাপের আসর বসেছিলে ভারত ও পাকিস্তানে। ভারতের বিশ্বজয়ের পরবর্তী বছরেই উপমহাদেশে প্রথমবার বসছে বিশ্বকাপের আসর।
রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। তার আগে একবার ফিরে দেখা সেইসব ক্রিকেটারজের দিকে, যাঁদের প্রথম বিশ্বকাপই শেষ বিশ্বকাপ হতে পারে। প্রতিভা নিয়ে এসেও দেরিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু, তারপর বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ায় এই অবস্থা বহু ক্রিকেটারের জীবনে। এমনই সাত ক্রিকেটারকে নিয়ে এক ঝলকয
কেদার যাদব
কেদার যাদব ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের বোলিং দিয়েও কার্যকর ভূমিকা নেন দলকে জেতাতে। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি বর্তমানে নিজেকে অপরিহার্য করে তুলেছেন। দেশকে সাফল্যও এনে দিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি ব্যাটে ও বলে শেষ ছ-ওভারে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছেন। ২৯ বছর বয়সে তিনি ভারতীয় দলে সুযোগ পান। তাঁর স্বল্পদিনের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার। এখন তাঁর বয়স ৩৪।
ক্রিস মরিস
২০১৩ সালে ক্রিস মরিসের অভিষেক হয় আন্তর্জাতিক ম্যাচে। বিগত ছ-বছরে মাত্র ৩৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন। মরিস বারবার ফিটনেসের অভাবে ভুগেছেন। প্রতিভা নিয়ে শুরু করলেও তিনি দল থেকে বাদ পড়েছেন একাধিকবার। এবারও তাঁর সুযোগ পাওয়ার কথা ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। একেবারে শেষে অ্যানরিচ নরজের ইনজুরি তাঁকে দলে ফিরিয়ে আনে।
শন মার্শ
গত দশকের সবচেয়ে প্রতিভাবান অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন হলেন শন মার্শ। তাঁর কেরিয়ারেও চোট-আঘাত লেগেছিল। ফলে তাঁর ফর্ম বারবার পড়েছে। আবার তিনি ফিরে এসেছেন। মার্শ অস্ট্রেলিয়ার জন্য অনেক ভালো ম্যাচ উপহার দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর প্রতিভা বিচার পায়নি। এবার স্টিভ স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নারের নির্বাসন মার্শের ওয়ানডে কেরিয়ারকে নতুন জীবন দিয়েছে। বর্তমানে মার্শের বয়স ৩৫। ফলে এই বিশ্বকাপে দারুন কিছু করলেও পরে তাঁর ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
কলিন মুনরো
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে কলিন মুনরো হার্ড হিটার এবং প্রতিভাবান ক্রিকেটার। কিন্তু অনেক দেরি করে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশ ঘটেছে। এই হার্ড-হিটিং অলরাউন্ডার জাতীয় দলে তাঁর জায়গা মজবুত করতে অনেক সময় নিয়ে নেন। ম্যাকুলামের অবসরের পর মুনরো বিধ্বংসী ওপেনার হিসেবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটকে ভরসা জোগাচ্ছেন। কিন্তু বিশ্বকাপের পর তিনি কতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থাকতে পারবেন, তা নিয়েই সংশয়।
নাথন লিয়ন
নাথান লিওন তাঁর দক্ষতার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা দিয়েও অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটকে সমৃদ্দ করতে তৈরি। স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নারের বহিষ্কারের পর অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে গুরুতর নেতৃত্বের সংকট দেখা দিয়েছিল। সেই সময়ই লিয়নের অভিজ্ঞতা অস্ট্রেলিয়ায় বিশেষ গুরুত্ব পায়। লিওনকে এতদিন টেস্ট বোলার হিসেবেই ভেবে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার তিনি ওয়ানডে ডিমেও নিজেকে অপরিহার্য করে তুলেছেন। এই বিশ্বকাপ তাঁরও শেষ বিশ্বকাপ হতে পারে।
উসমান খোয়াজা
বিশ্বকাপের আগে ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের অসাধারণ পারফরম্যান্স মেলে ধরেছেন উসমান খোয়াজা। ফলে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে এবার তাঁর নাম লেখা হয়ে গিয়েছে। তিনিও টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে এতদিন গণ্য হতেন। কিন্তু এবার ওয়ানডেতেও তাঁর উপর ভরসা করছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট। কিন্তু বিশ্বকাপ মিটে যাও.য়ার পর আদৌ তাঁর ওয়ানডে কেরিয়ার প্রলম্বিত হবে কি না, কিংবা কতদিন হবে তা নিয়ে সংশয থাকেই।
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম নিউজিল্যান্ডের হয়ে ফিনিশার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার আগে আন্ডার ১৯ বিশ্বকাপে জিম্বাবোয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন গ্র্যান্ডহোম। এরপর নিউজিল্যান্ডের হয়ে বেশ কিছু বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছেন তিনি। গ্র্যান্ডহোমের ওয়ানডেতে স্ট্রাইক রেট রয়েছে ১১০-এর উপরে। প্রয়োজনে তিনি বলও করতে পারেন। ৩২ বছর বয়সে তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শুরু হয়েছে। ফলে তা আরও চার বছর প্রলম্বিত হওয়া খুব কঠিন।