চেনেন এঁনাকে? জন্মান্ধ শেখর নায়েক হলেন ব্লাইন্ডদের ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনি
অধিনায়ক হিসাবে দেশকে দুটি বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন শেখর নায়েক। অথচ তাঁকে কতজনই বা চেনেন? তাঁর খোঁজ রাখেন?
দৃষ্টিহীনদের কাছে জীবনের কোনও অর্থ নেই। এমনটাই সকলে বিশ্বাস করেন। তবে কর্ণাটকের অখ্যাত গ্রাম থেকে উঠে আসা লক্ষ্মণ শেখর নায়েক তা বিশ্বাস করেন না। এই আপ্তবাক্যকে ভুল প্রমাণ করে ছেড়েছেন তিনি। দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেটে তিনি ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিংবা আরও বেশি কিছু। অধিনায়ক হিসাবে দেশকে দুটি বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন শেখর। অথচ তাঁকে কতজনই বা চেনেন? তাঁর খোঁজ রাখেন?
শেখর ২০১২ সালে দৃষ্টিহীনদের প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১৪ সালে একদিনের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। একদিকে দারিদ্র অন্যদিকে চোখের দৃষ্টি না থাকা সবমিলিয়ে ছোট থেকেই চলার পথ বেশ কঠিন ছিল শেখরের কাছে।
এবছর ভারত সরকার শেখরকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছে। তার আগে শেখরের লড়াই অজানাই থেকে গিয়েছিল। দক্ষিণ কর্ণাটকের আরাকেরে এলাকায় চাষির পরিবারে জন্ম শেখর নায়েকের। জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন শেখরের সাত বছর বয়সে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। তখনই পরীক্ষা করতে গিয়ে চিকিৎসকেরা দেখেন শেখরের ডান চোখের দৃষ্টি ফেরানো যেতে পারে।
[আরও পড়ুন:পরিবেশ বাঁচাতে হাজারের বেশি গাছ রোপন করে একা লড়ছেন দারিপল্লি, কেমন তাঁর লড়াই জেনে নিন]
সেইমতো বেঙ্গালুরুতে অপারেশনের পর শেখরের ডান চোখে ৬০ শতাংশ দৃষ্টি ফিরে আসে। শেখর অল্প বয়সে বাবাকে হারান। মাত্র ১২ বছর যখন বয়স তখন মাও মারা যান। তারপরই মাত্র ১৪ বছর বয়সে ৪৬ বলে ১৩৬ রান করেন শেখর। সঙ্গে সঙ্গে সুযোগ পান কর্ণাটক রাজ্য দলে। এরপরে ২০০২ সালে দৃষ্টিহীনদের জাতীয় দলে সুযোগ পান শেখর।
[আরও পড়ুন:আসল নায়ক এঁরাই! স্বেচ্ছায় আগুন থেকে মানুষকে রক্ষা করে চলেছেন প্রৌঢ় বিপিন]
২০১০ সালে শেখর ভারতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। এবং ২০১২ সালে অধিনায়ক হিসাবে টি২০ বিশ্বকাপ ও ২০১৪ সালে দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতান ভারতকে।
[আরও পড়ুন:ভারতের আসল নায়ক এঁরাই! ৩১বার অস্ত্রোপচারের ধাক্কা সামলে দেশকে রুপো এনে দিয়েছেন দীপা]
দেশের হয়ে ৩২টি শতরান করেছেন শেখর। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছেন। ২০১২ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৩৪ রান করে দেশকে বিশ্বকাপ জেতান। ২০১৪ বিশ্বকাপেও উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল শেখরের। এবং দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন খেলোয়াড় হিসাবে পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন তিনি।