৩৬তম শতরান করলেন 'চেজ মাস্টার' বিরাট! এর মধ্যে সেরা পাঁচ ইনিংস কোনগুলি
একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে বিরাট কোহলির খেলা সেরা পাঁচটি ইনিংস।
রবিবার (২২ অক্টোবর) গুয়াহাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বিরাট কোহলি তার ৩৬তম ওয়ানডে শতরান করে দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন। ৩৬টি ওয়ানডে শতরান করতে কোহলি মাত্র ২০৪টি ইনিংস নিয়েছেন। তাঁর কৃতিত্ব কত বড় তা বোঝা যায় সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে তুলনা করলেই। সমসংখ্যক শতরান করতে সচিন নিয়েছিলেন কিন্তু ৩১১টি ইনিংস।
এই সুযোগে মাইখেল বেঙ্গলি ইতিহাসের পাতা খুঁজে বের করে আনল কিং কোহলির সেরা পাঁচটি ওডিআই ইনিংস।
১৩৩ বনাম শ্রীলঙ্কা, ২০১২
হোবার্টের ব্লান্ডস্টোন এরিনা (বেলেরিভ ওভাল)-এ ত্রিদেশীয় সিরিজে এক স্মরণীয় ইনিংস খেলে নিজের প্রতিভার জানান দিয়েছিলেন কোহলি। সেই ম্যাচে ভারতকে ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করতে বোনাস পয়েন্ট নিয়ে হারাতে হত শ্রীলঙ্কাকে। প্রথমে ব্যাট করে ৩২০/৪ করার পর, শ্রীলংকা ধরে নিয়েছিল তারাই ফাইনালে যাচ্ছে। কারণ ভারতকে বোলাস পেতে গেলে ওই রানটা তুলতে হত মাত্র ৪০ ওভারে। তার উপর ভারতের ইনিংস্র শুরুতে বেশ দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফিরে য়ান সচিন তেন্ডুলকর এবং বীরেন্দ্র সেওয়াগ। কিন্তু তখনও ছিলেন কোহলি। মাত্র ৮৬ বলে ১৬টি চার ও দুটি ছক্কার সাহায্যে ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ভারত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছিল মাত্র ৩৬.৪ ওভারে। লাসিথ মালিঙ্গা (৭.৪-০-৯৬-১)-র বলে মেরে ছাড়খাড় করে দিয়েছিলেন তিনি। মালিঙ্গার ১ ওভার থেকে ২৪ রানও যোগ করেন।
১৮৩ বনাম পাকিস্তান, ২০১২
হোবার্টের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই ইনিংস খেলার কয়েক সপ্তাহ বাদেই কোহলির জিনিয়াসের এই ঝলকটিু দেখা গিয়েছিল। পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে ৩২৯ তুলে ফেলার পর ঢাকায় এই এশিয়া কাপের ম্যাচটি পাকিস্তানের দিকেই ঢলে পড়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু কোহলি মাঠে গিয়ে সব হিসেব পাল্টে দেন। ১৪৮ বলে ১৮৩ রানের ইনিংস খেলে ভারতকে দুই ওভার বাকি থাকতেই জিতিয়ে দেন তিনি। সেই থেকেই জন্ম নিয়েছিল আজকের 'চেজ মাস্টার'। তারপর থেকে তাঁর এই ভূমিকা ক্রমে আকারে বড় হয়েছে।
১২২ বনাম ইংল্যান্ড, ২০১৭
পুণেতে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৩৫০ রানের পাহাড় গড়েছিল। জবাবে ভারত একসময় ৬৩/৪ হয়ে যায়। সকলেই ভেবেছিলেন ম্যাচ জিতছে ইংল্যান্ড। কিন্তু কেদার যাদব (৭৬ বলে ১২০, ১২x৪, ৪x৬) -কে সঙ্গে নিয়ে বিরাট (১০৫ বলে ১২২, ৮x৪, ৫x৬) ২০০ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। কোহলি অবশ্য এইদিন ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। কিন্তু জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন।
১১৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া, ২০১৩
ওয়ানডে সিরিজে পিছিয়ে ছিল ভারত। অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে জর্জ বেইলি ও শেন ওয়াটসনের শতরানের দৌলতে ৩৫০/৬ রান তুলেছিল। ফলে প্রথম ইনিংসেই পরই সিরিজজয় প্রার নিশ্চিত করে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। ভারতকে ভাল শুরু দিযেছিলেন শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা জুটি। প্রথম উইকেটে তাঁরা ১৭৮ রান যোগ করেন। কিন্তু তারপরেও ২০ ওভারে ১৭৩ রান দরকার ছিল। ওপেনারদের রানের ভিতের উপর দাঁড়ায়ে পাহাড় প্রমাণ রান তাড়ার কাজ চালিয়ে যান কোহলি। ৬৬ বলে ১১৫ রানের ইনিংস গড়ার পথে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ নিয়ে তিনি রীতিমতো ছেলেখেলা করেন। ১৮টি চার ও ৬টি ছয় মেরেছিলেন তিনি। ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন।
১০৭ বনাম পাকিস্তান, ২০১৫
এই ক্ষেত্রে কোহলি ছিলেন বড় রানের লক্ষ্যমাত্রা গড়ার কাজে। সুরেশ রায়না ও শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ব্যাট করে কোহলি ১২৬ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ইনিংসে ছিল ৮টি চার। কোনও ভাবেই এটি কোহলির চমকপ্রদ ইনিংসগুলির মধ্য়ে পড়ে না। কিন্তু তাও এটি এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে, কারণ এটি ছিল কোহলির অফ ফর্মে থাকাকালীন খেলা ইনিংস। এডিলেড ওভালে আইসিসি বিশ্বকাপের এই ম্যাচের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে একেবারেই রানের মধ্যে ছিলেন না তিনি। অফ ফর্মের কোহলির সেই শতরানে ভারত পাকিস্তানের সামনে ৩০১ রানের সক্ষ্যমাত্রে ছুঁড়ে দিয়েছিল। পরে মহম্মদ শামির ৪ উইকেটের বিধ্বংসী বোলিং-এ ভারত আইসিসি ইভেন্টে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে তাদের রেকর্ড বজায় রেখেছিল।