৪০ হচ্ছেন নজফগড়ের নবাব! এই সন্ধিক্ষণে দেখে নেওয়া যাক তাঁর খেলা সেরা ৫টি ইনিংস
আর কয়েক ঘন্টা পরই ৪০-এ পা দেবেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ। এই উপলক্ষে আরও একবার ফিরে দেখা যাক তাঁর সেরা পাঁচটি ইনিংস।
আর কয়েক ঘন্টা পরই ৪০-এ পা দেবেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা এই টেস্ট ওপেনার কেরিয়ার তাঁর আক্রমণাত্মক খেলার ভঙ্গীর জন্য ভারতীয় সমর্থকদের মনে উজ্জ্বল হয়ে আছেন। শুধুমাত্র চোখ ও হাতের অসাধারণ সমন্বয়ে বলকে বাউন্ডারি পার করানোর বিরল দক্ষতার অধিকারী ছিলেন তিনি।
২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লুমফনটাইনে তাঁণর টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। তারপর থেকে ২০১৩ সাল অবধি ভারতের টেস্ট দলের ওপেনিং স্লটে তাঁর জায়গা পাকা ছিল। ১০৪ টেস্টে ৪৯.৩৪-এর অবিশ্বাস্য গড়ে ২৩টি শতরান-সহ তিনি ৮৫৮৬ রান করে যান। একদিনের ক্রিকেটে তাঁর পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৯৯ সাসে মোহালিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। মোট ২৫১টি ওডিআই খেলে তিনি ১৫টি শতরানসহ ৮২৭৩ রান করেছেন।
নজফগড়ের নওয়াজের ৪০-এর সন্ধিক্ষণে আরও একবার ফিরে দেখা যাক তাঁর সেরা পাঁচ আন্তর্জাতিক ইনিংস।
৩০৯ বনাম পাকিস্তান, ২০০৪
সেই প্রথমবার ৩০০ রানের গণ্ডি টপকেছিলেন কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্য়ান। মাত্র ৩৭৫ বলে ওই রানটা করে যান সেওয়াগ। মেরেছিলেন ৩৯টি চার ও ৬টি ছক্কা। ১ ইনিংস ও ৫২ রানে সেই ম্য়াচে জয় পেয়েছিল ভারত। তবে সেওয়াগের সেই দুর্দান্ত ইনিংস কিছুটা হলেও চাপা পড়েছিল অন্য এক বিতর্কে। সেই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় খেলেননি। প্রথম ইনিংসে সচিন তেন্ডুলকার ১৯৪ রানে ব্যাট করার সময়ে অস্থায়ী অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড় ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেন। ফলে দ্বিশতরান হারান সচিন।
৩১৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০৮
পিচটি ছিল একেবারে ব্য়াটসম্য়ানদের স্বর্গরাজ্য। আর সেই পিচের সুবাধা নিতে এতটুকু ভুল করেননি সেওয়াগ। নিজের নামের পাশে দ্বিতীয় টেস্ট ত্রিশতরানের রেকর্ডটা লিখে ফেলেন। ম্যাচের কোনও ফল হয়নি। কিন্তু এই ম্য়াচে ত্রিশতরানের ফলে টেস্টে দুটি ত্রিশতরান করা মুস্টিমেয় ক্রিকেটারদের ক্লাবে ঢুকে পড়েন সেওয়াগ। ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা হলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান, ব্রায়ান লারা ও ক্রিস গেইল।
২৯৩ বনাম শ্রীলঙ্কা, ২০০৯
ক্রিকেটের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও ব্যাটসম্যান নেই যিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনটি ত্রিশতরান করেছেন। সেওয়াগ কিন্তু এই রেকর্ডটি প্রায় নিজের নামে করে নিয়েছিলেন। কিন্তু মুম্বইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে মাত্র ৭ রান আগে তাঁকে থামতে হয়। সেই ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং পরিসংখ্যান দেখলে চমকে উঠতে হয়। ২৯৩ রান করতে সেওয়াগ বল নিয়েছিলেন মাত্র ২৫৪টি। মেরেছিলেন ৪০টি চার ও ৭টি ছয় - অর্থাত ২০২ রান এসেছিল শুধু বাউন্ডারি থেকেই। বিপক্ষে কিন্তু কোনও এলেবেলে বোলার নয়, ছিলেন মুতাইয়া মুরলীধরণ ও রঙ্গনা হেরাথের মতো বিশ্বমানের বোলাররা। কিন্তু ওইদিন সেওয়াগ তাঁদের ক্লাব স্তরের বোলারের মানে নামিয়ে এনেছিলেন।
২১৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০১১
এই ইনিংসটি সেওয়াগ খেলেছিলেন একদিনের ক্রিকেটে। এটি ছিল তাঁর একদিনের ক্রিকেটের দ্বিতীয় দ্বিশতরান। ১৪৯ বলে ২১৯ রান করেন তিনি। ২৫টি চার ও ৭টি ছয়ে সাজানো ছিলে সেই ইনিংস। সেওয়াগের ওই ইনিংসে ভর করে ভারত ৫০ ওভারে ৪১৮ রানের পাহাড় গড়েছিল ভারত। জয় এসেছিল ১৫৩ রানে।
১৯৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া, ২০০৩
মেলবোর্নে এই টেস্টে শেষ পর্যন্ত ভারতকে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই হারের স্মৃতি ফিকে হয়ে গেলেও সেওয়াগের ২৩৫ বলে ১৯৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস কিন্ত যে কোনও ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীর মনে গাঁথা রয়েছে। ১৯৫ রানে ব্যাট করার সময়ে সাইমন ক্যাটিচের বলে ছয় মেরে দ্বিশতরান পূর্ণ করতে চেয়েছিলেন সেওয়াগ। কিন্তু ডিপ মিড উইকেটে নাথান ব্র্যাকেনের হাতে ধরা পড়ে আউট হয়ে যান। তাঁর আউটে ম্য়াচের গতিও পাল্টে গিয়েছিল।