দুই দশক পর বিশ্বকাপে আবারও শক্তিশালী ক্যারিবিয়ান দল
১৯৭৫ সালের ২১ জুন। ঐতিহাসিক লর্ডসের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ হাতে তুলে ক্রিকেট বিশ্বে নতুন ইতিহাস রচনা করেছিল ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯৭৫ সালের ২১ জুন। ঐতিহাসিক লর্ডসের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ হাতে তুলে ক্রিকেট বিশ্বে নতুন ইতিহাস রচনা করেছিল ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯৭৯ সালের ২৩ জুন। লর্ডেসেই দ্বিতীয় বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ক্যারিবিয়ান যুগের ধারা অব্যাহত রেখেছিল সেই ক্লাইভ লয়েডেরই ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯৮৩ সালে লয়েডেরই নেতৃত্বে ইংল্যান্ড-ওয়েলসে আয়োজিত বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ফাইনালে কপিল দেব নেতৃত্বাধীন আনকোরা ভারতের কাছে হারতে হয়েছিল শক্তিশালী ক্যারিবিয়ানদের।
ওই শেষ। এরপর ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনালে ওঠা ছাড়া বিশ্বকাপে আর বিশেষ কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমনকী বিগত দুই দশক ধরে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে তৈরি হওয়া শূণ্যতা পূরণ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় সেদেশের বোর্ড এবং নির্বাচকদের। অবশেষে সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে খেলতে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দলকে সবদিক থেকে পরিপূর্ণ বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্যারিবিয়ানদের দুর্দান্ত অল-রাউন্ড পারফরম্য়ান্স জেসন হোল্ডারের দলকে টু্র্নামেন্টের অন্যতম দাবিদার প্রমাণ করেছে।
লয়েড যুগ
স্যার গারফিল্ড সোবার্সের পর ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে নবজাগরণের অন্যতম হোতা যাকে ধরা হয়, সেই ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম দুটি বিশ্বকাপ জিতে বাকি দেশগুলিকে পথ দেখিয়েছিল। স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসদের মতো কিংবদন্তী পরিবেষ্টিত ১৯৭৫ ও ৭৯ সালের ক্যারিবিয়ান দলকেই সর্বকালের সেরা মনে করেন সেদেশের মানুষ।
লারা যুগ
১৯৯০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান জার্সিতে যখন ব্রায়ান চার্লস লারার অভিষেক হয়, তখন জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস। ফার্স্ট ক্লাস ও টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে রেকর্ড ৫০১ ও ৪০০ রানের মালিক ক্রিকেটীয় লেজেন্ড লারার সময় ওয়ান ডে না হলেও টেস্টে উল্লেখযোগ্য ফলাফল করতে সক্ষম হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শিবনারায়ণ চন্দ্রপল, রিচি রিচার্ডসন, কার্ল হুপার, কোর্টনি ওয়াসল, কার্টলে আমব্রোসের মতো খেলোয়াড়দের দক্ষতায় ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ানরা।
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ
২০০৭ সালে ঘরের মাঠে আয়োজিত বিশ্বকাপের ফায়দা তুলবে ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দল। কিন্তু সেবারও সুপার এইটের বেশি এগোতে পারেননি ক্যারিবিয়ানরা। ২১ এপ্রিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সুপার এইটের শেষ ম্যাচ হেরে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন ব্রায়ান লারা।
এরপর
এরপর থেকে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে তৈরি হওয়া শূণ্য়তা ছিল অপরিসীম। কুম্ভের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দুর্গ সামলাচ্ছিলেন ক্রিস গেইলের মতো হাতেগোনা কয়েক জন ক্রিকেটার। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সেদেশে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দক্ষ ক্রিকেটারদের সাপ্লাই লাইন।
অবশেষে
প্রায় দুই দশক পর তরুণ অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের নেতৃত্বাধীন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দলকে টক্কর দেওয়ার মতো বলে মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। আন্দ্রে রাসেল, নিকোলাস পুরান, শাই হোপ, ক্রিস গেইল, ওশেন থমাস সম্বলিত এবারের ক্যারিবিয়ান দল ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে কী খেল দেখায়, সেদিকেই তাকিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব।