ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ল্যাজে-গোবরে হয়ে হারল পাকিস্তান
বিশ্বকাপ শুরুর আগে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছিল।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছিল। এমনকী জুনেইদ খানদের সরিয়ে তথাকথিত বুড়ো মহম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজকে দলে নেওয়া নিয়ে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক ইনজামাম-উল-হককে কম কথা শুনতে হয়নি। বরং পাক ব্যাটিং লাইন-আপকে সম্ভাবনাময় বলেই মনে করেছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু বাস্তবে কিন্তু হল ঠিক উল্টোটাই। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলারদের বিষাক্ত পেস, বাউন্স এবং সুইংয়ের সামনে ল্যাজে-গোবরে হলেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। উল্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইন-আপের সামনে মাত্র ১০৫ রান ডিফেন্ড করতে নেমে পাক বোলাররা সাধ্যমত যতটুকু লড়াই করলেন, তা প্রশংসনীয়। কেন তাঁকে পাকিস্তানের বিশ্বকাপের দলে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, সমালোচকদের এর জবাব দিলেন মহম্মদ আমির।
ট্রেন্ট ব্রিজের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। অধিনায়কের ভরসাকে সম্মান দিয়ে আবহাওয়ার সম্পূর্ণ ফায়দা তোলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা। তিন ওভারের মাথায় মাত্র ২ রান করে শেলডম কটরেলের বলে উইকেটরক্ষক শাই হোপের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ইমাম-উল-হক। এরপর পাকিস্তানের আরো এক ওপেনার ফাকার জামান এবং ওয়ান ডাউন বাবর আজাম খেলা ধরার চেষ্টা করলেও কেউই ২২ রানের বেশি এগোতে পারেননি। আন্দ্রে রাসেলের বলে বোল্ড হন ফাকার এবং ওশেন থমাসের বলে উইকেটরক্ষক শাই হোপের গ্লাভসে ধরা পড়েন বাবর। তাঁরা ছাড়া মহম্মদ হাফিজ (১৬) ও ওয়াহাব রিয়াজ (১৮) কোনোমতে দুই অঙ্ক পেরোতে সক্ষম হন।
ক্যারিবিয়ান বোলারদের পেস, বাউন্স এবং সুইংয়ে দিশেহারা দেখিয়েছে সম্ভাবনাময় হারিস সোহেল (৮), অধিনায়ক সারফারাজ আহমেদ (৮), ইমাদ ওয়াসিম (১), শাদাব খানদের (০)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বাধিক ৪ উইকেট নেন ওশেন থমাস। ম্যাচে ৩ ও ২ উইকেট নেন যথাক্রমে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ও আন্দ্রে রাসেল।
১০৫ রান তাড়া করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩৯ বছরের ক্রিস গেইল যে কতবড় সম্পদ, তা তিনি আরো একবার এই ম্যাচে প্রমাণ করলেন। পিঠে ব্যাথা নিয়েও গেইল সুলভ ভঙ্গিতে তিনটি ছয় ও ছটি চার মেরে ক্যারিবিয়ান টাইফুন করলেন ৩৪ বলে বিধ্বংসী ৫০ রান। পাকিস্তানি বোলারদের হাত থেকে কার্যত একাই ম্যাচ বের করলেন গেইল। দুটি ছয় ও চারটি চার সম্বলিত নিকোলাস পুরানের ১৯ বলে ৩৪ রানের ইনিংস ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরো এক ওপেনার শাই হোপ (১১) এবং ওয়ান ডাউন ড্যারেন ব্রাভো (০) ক্রিজে বেশিক্ষণ স্থায়ী না হলেও, তা ক্যারিবিয়ানদের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি। ১৩.৪ ওভারেই পাকিস্তানের ১০৫ রান পেরিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছয় মেরে ম্যাচ জেতান পুরান।
সমালোচকদের আতস কাচের নিচে থাকা ওয়াহাব রিয়াজ এই ম্যাচে বিশেষ সুবিধা করতে না পারলেও পাকিস্তানের হয়ে মহম্মদ আমির নেন ৩ উইকেট। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেওয়া ওশেন থমাস।