সরফরাজদের দোষ দিয়ে কী লাভ, পাকিস্তানের অনেক বড় নামও বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে ব্যর্থ
সরফরাজদের দোষ দিয়ে কী লাভ, পাকিস্তানের অনেক বড় নামও বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে ব্যর্থ।
আরো একটি বিশ্বকাপ। ফের ভারতের কাছে শোচনীয় হার পাকিস্তানের। চির শত্রু প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে সাতে সাত হওয়ার সব দায় চাপানো হচ্ছে পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের ঘাড়ে। যেন তিনি টসে জিতে ব্যাটিং নিলেই অনায়াসে বিরাট কোহলিদের হারাতে পারত না পাকিস্তান। বিষয়টা কী সত্যিই অতটা সহজ ছিল?
উল্লেখ্য, ম্যানঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে নামার আগে পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে টসে জিতলে ব্যাটিং করার পরামর্শ দিয়েছিলেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা ক্রিকেটীয় লেজেন্ড ইমরান খান। পাক টিম ম্যানেজমেন্ট সেই কথা না শোনায় এবং ম্যাচ হেরে যাওয়ায় গেল গেল রবে মুখরিত হন সেদেশের নেটিজেনরা।
টসে জিতে কেন আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেননি সরফরাজ আহমেদ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শোয়েব আখতার থেকে শুরু পাকিস্তানের বহু প্রাক্তন ক্রিকেটারা। সত্যিই আগে ব্যাট করলে পাকিস্তান বিশেষ সুবিধা পেত কিনা, তা বলা মুশকিল। কিন্ত তা নিয়ে পাক অধিনায়ক সরফরাজকে যেভাবে আক্রমণের নিশানা করা হচ্ছে, তা কতটা যুক্তিযুক্ত, সে ব্যাপারে তর্কের অবকাশ রয়েছে।
প্রশ্ন একটাই, আজ যে সকল পাকিস্তানের দিগ্বজরা বিশ্বকাপের মধ্যেই সরফরাজ আহমেদ অ্যান্ড কংকে তুলোধোনা করছেন, তাঁরাও কিন্তু বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে অপরাজেয় নন।
বিশ্বকাপের ফল
১৯৯২-তে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। সেবার বিশ্বকাপে ভারতের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখিও হয়েছিল পাক দল। ইমরান খান একাদশ কিন্তু কিস্তিমাত করতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে বেঙ্গালুরুতে আমির সোহেলের পাকিস্তানকে হারিয়েছিল মহম্মদ আজহারউদ্দিনের ভারত। ১৯৯৯ -এ ওয়াসিম আক্রম, ২০০৩-এ ওয়াকার ইউনুসের পাকিস্তানকেও অনায়াসে হারিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। ২০১১ এবং ২০১৫ সালের বিশ্বকাপেও ভারতের কাছে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে।
ভারতের শক্তি
'ক্রিকেট ধ্যান, ক্রিকেট জ্ঞান, ক্রিকেট চিন্তামণি' ভারতের বিষয়টি ঠিক এরকমই। যেদেশে ক্রিকেট অন্যতম ব্যবসায়ীক মাধ্যম, সেদেশের বোর্ড বিশ্বের সবচেয়ে ধনির শিরোপা পাবে, সে তো স্বাভাবিক। ভারতের ক্রিকেট পরিকাঠামোর উত্তরোত্তর বৃদ্ধিও লক্ষণীয়।
পাকিস্তানের দুর্বলতা
এক সময়কার বর্ধিষ্ণু ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ পাকিস্তান সুবিশাল অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভোগার পাশাপাশি ব্যাট-বলের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। পরিকাঠামো তো দূর, সেদেশের খেলোয়াড়রা আর আগের মতো যত্ন পান না। তাই হয়তো বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, মহেন্দ্র সিং ধোনিদের সমকক্ষ কিছুতেই হয়ে উঠতে পারছেন না ইমাম উল হক, বাবর আজম, ফকর জামান, মহম্মদ হাফিজরা।
এই অবস্থায় কেবল খেলোয়াড়দের দোষারোপ না করে পাকিস্তানের প্রাক্তন খেলোয়াড় ও সমর্থকদের উচিত, দেশের ক্রিকেটকে আবারও সেই উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য হাতে হাত ধরে এগিয়ে চলা।