দুর্দান্ত লড়েও হল না শেষ রক্ষা! চরম দুর্ভাগ্যে 'ভাল খেলিয়াও পরাজিত' ব্লু টাইগার্স
এএফসি এশিয়া কাপ ২০১৯-এর ভারত বনাম থাইল্যান্ড ম্যাচের প্রিভিউ। এছাড়াও জেনে নিন কখন ও কোথায় ম্যাচ দেখা যাবে।
এশিয়ান কাপে জায়েদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি), আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে সমানে সমানে লড়লেন সুনীলরা। কিন্তু অসংখ্য গোলের সুযোগ তৈরি করেও দুর্ভাগ্যের জন্যই শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে পরাজিত হতে হল ভারতকে। সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে কিন্তু ভারত অন্তত ৫-২ গোলে জিততে পারত ভারত।
ইউএই ২-০ গোলে জিতলেও এই ফলাফল কিন্তু খেলার যোগ্য প্রতিফলন নয়। খাতায় কলমে অনেকটাই এগিয়ে ছিল ইউএই। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাঁচ পাঁচ বার ভারতীয় ফুটবলারদের শট হয় পোস্টে লেগে প্রতিহত হল, নয়তো কয়েক চুলের জন্য পোস্টের বাইরে গেল। মাঝখান থেকে রক্ষণের দুটি ছোট্ট ভুলের সুযোগে দুই অর্ধে দুটি গোল করে গেলেন খালফান মুবারক (৪১) ও আলি আহমেদ মাবখউত (৮৮')।
প্রথমার্ধে, খেলার গতির কিছুটা বিরুদ্ধেই একটি আপত নির্বিষ বল থেকে ভারতের দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার আনাস ও সন্দেশের ভুল বোঝাবুঝি থেকে গোল পেয়ে গিয়েছিল ইউএই। লম্বা বাড়ানো বল, পিছন থেকে উঠে এসে গতিতে আনাসকে হারিয়ে ধরেছিলেন মাবখউত। তারপর বাড়ান মুবারকের উদ্দেশ্যে। প্রথম পোস্ট দিয়ে বল গোলে ঠেলেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলার একেবারে শেষ লগ্নে আরও একবার একটি লঙ বল ধরে ছোট্ট ভলিতে দুই ভারতীয় ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক গুরপ্রিতকে পরাস্ত করেন মাবখউত।
অথচ, এদিন একের পর এক সুযোগ তৈরি করেও ভাগ্যের সহায়তা না পেয়ে একটিও গোল পেল না ভারত। প্রথম কয়েক মিনিট সামান্য স্নায়ুর চাপে ভুগলেও ম্যাচেই ৭ মিনিটের মাথাতেই প্রথম গোলের সুযোগ পেয়েছিল ব্লু টাইগার্স। অনিরুধের কর্নার থেকে হেড করেছিলেন সন্দেশ। কিন্তু তিন কাঠির মধ্যে রাখতে পারেননি।
এর তিন মিনিট পরেই একেবারে বাঘের ক্ষিপ্রতাতেই আমিরশাহির খেলোয়াড়দের পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে আশিক কুরুনিয়ানের জন্য থ্রুপাস বাড়িয়েছিলেন সুনীল ছেত্রি। সেই বল ধরে গোলে শটও নেন তরুণ ভারতীয় স্ট্রাইকার। কিন্তু অসামান্য দক্ষতায় তা প্রতিহত করেন ইউএই গোলরক্ষক এইসা।
এরপর ফের ২২ মিনিটের মাথায় দুর্ভাগ্যের শিকার হয় ভারত। উদান্তর ক্রস থেকে চমৎকারভাবে সুনীলের জন্য বল তুলে দিয়েছিলেন অনিরুধ। কিন্তু সুনীলের জোরালো হেড লাগে সরাসরি আমিরশাহির গোলরক্ষকের হাতে।
ইউএই-এর প্রথম গোলের পরও কিন্তু ভারত লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছে। বস্তুত কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রতিআক্রমণ থেকে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন সুনীল। কিন্তু তাঁর শট দ্বিতীয় পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধের শেষে ফল ছিল ১-১।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়াতে কনস্টানটাইন জেজে ও রোলিন বোর্গেসকে নামিয়েছিলেন। আগের ম্যাচে দীর্ঘদিন বাদে গোলে ফিরেছিলেন জেজে। কিন্তু তিনিও এদিন দুর্ভাগ্যের শিকার হন। ম্যাচের ৫২ মিনিটে একটি ফ্রিকিক থেকে বক্সে বল ভাসিয়েছিলেন উদান্ত। ইউএই রক্ষণে তা প্রতিহত হয়ে এসে পড়ে জেজের পায়ে। চলতি বল চমতকারভাবে পায়ে ধরে ভলি নেন তিনি। প্রতি ১০ বারে ৯ বারই জেজের এই ভলি গোলে থাকবে। কিন্তু এদিনটা তা অল্পের জন্য তিন কাঠির মধ্যে থাকল না।
এর তিন মিনিট বাদেই জেজে, সুনীল ও উদান্তের একটি দুর্দান্ত মুভ থেকে গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। শেষ শটটি নিয়েছিলেন উদান্ত। সব কিছুই ঠিকঠাক করেছিলেন ভারতের রাইট উইঙ্গার। কিন্তু তা বারপোস্টের তলায় লেগে মাঠে ফিরে আসে।
এদিন গ্রুপের অপর ম্যাচে কিন্তু বাহরিনকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে থাইল্যান্ড। কাজেই, আপাতত গ্রুপে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে আয়োজক ইউএই। ভারত ৩ পয়েন্ট নিয়ে তার পরেই থাকল। একই পয়েন্ট হলেও গোল পার্থক্যে পিছিয়ে ৩ নম্বরে রয়েছে থাইল্যান্ড। ১ পয়েন্ট নিয়ে বাহরিন সবার নিচে। অর্থাত এই ম্যাচে পরাজিত হলেও এখনও ভারভাবেই পরের রাউন্ডে যাওয়ার দৌড়ে থেকে গেল সুনীল-উদান্তরা।