২২ বছরের সম্পর্ককে ছিন্ন করে টা-টা ওয়েঙ্গারের, বিরহ বেদনায় কাতর আর্সেনাল
১৯৯৬ সালে আর্সেনালের কোচ হিসেবে যেই যাত্রা শুরু করেছিলেন আর্সেন ওয়েঙ্গার তা শেষ হতে চলেছে এই মরসুমের শেষে। দীর্ঘ ২২ বছরের কেরিয়ারে সাফল্য এবং ব্যর্থতা দুই দেখেছেন তিনি।
হ্যাঁ, শেষই বটে! সমাপতন হল একটি অধ্যায়ের। আর্সেন ওয়েঙ্গারের বিদায় ঘোষণায় আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের একটি ইতিহাসের অবসান ঘটল। শুক্রবার ক্লাবের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, ২২ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে, চুক্তির এক বছর বাকি থাকতেই আর্সেনালকে বিদায় জানাতে চলেছেন কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার। চলতি মরসুমের শেষেই আর্সেনালের দায়িত্ব ছাড়বেন তিনি।
[আরও পড়ুন:বেঙ্গালুরুর কাছচে অসহায় আত্মসমর্পণ ইস্টবেঙ্গলের]
১৯৯৬ সালের অক্টোবর মাসে আর্সেনালের কোচ হিসেবে সই করেন ওয়েঙ্গার। এখনও পর্যন্ত আর্সেন ওয়েঙ্গারের কোচিংয়ে মোট ১২২৮টি ম্যাচ খেলেছে গার্নাররা। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশ ম্যাচই ওয়েঙ্গারের কোচিংয়ে জিতেছে আর্সেনাল। তার কোচিংয়ে ৭০৪টি ম্যাচে জয় পেয়েছে গার্নাররা। ২৭৯টি ম্যাচ ড্র হয়েছে, হারতে হয়েছে ৪১৩টি ম্যাচে।
ওয়েঙ্গারের কোচিং-এ মোট তিন বার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জেতে আর্সেনাল। ওয়েঙ্গারের কোচিংয়ে গার্নাররা এফএ কাপ জেতে ৭ বার। এফএ কাপ, প্রিমিয়ার লিগের পাশাপাশি আর্সেন ওয়েঙ্গারের কোচিং-এ সাত বার কমিনিউটি শিল্ডও জেতে আর্সেনাল। আর্সেনালে দীর্ঘ ২২ বছরের কোচিং কেরিয়ারে তাঁর অধীনে খেলেছেন মোট ২০৯ জন ফুটবলার। তাঁর হাত ধরে উঠে এসেছিলেন থিয়ো অঁরি, লি ডিক্সন, টনি অ্য়াডামস,প্যাট্রিক ভিইরা, পল মার্সনের মতো তারকারা।
নিজের কোচিংয়ে শুধু আর্সেনালকেই সমৃদ্ধ করেননি ওয়েঙ্গার, নিজেকেও মেলে ধরেছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল ম্যানেজার হিসেবে। ১৯৯৮, ২০০২ এবং ২০০৪ সালে প্রিমিয়ার লিগে সেরা ম্যানেজারের পুরস্কার পান এই ফরাসি কোচ। ইংলিশ ফুটবলের হল অফ ফ্রেমেও জায়গা পান তিনি। ফুটবল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও ট্রিবিউট দেওয়া হয় তাঁকে।
শুক্রবার আর্সেনাল ছাড়ার বিষয়ে ওয়েঙ্গার বলেন, 'ক্লাবের সঙ্গে আমি আলোচনা করেছি। আমি মনে করি আমার সরে যাওয়ার এটাই সঠিক সময়। দীর্ঘ দিন বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা এই ক্লাবকে কোচিং করাতে পেরে আমি গর্বিত। এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত সকল সাপোর্ট স্টাফকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই, তাঁদের সাহায্য ছাড়া আর্সেনালকে সাফল্য এনে দেওয়া সম্ভব হত না।' সেই সঙ্গে দলের সাপোর্টারদের কাছেও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন ওয়েঙ্গার।
দীর্ঘ আট বছর আর্সেনালকে লাগাতার সাফল্য দেওয়ার পর যখন ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন থিয়ো অঁরি সেই সময় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন গার্নার সমর্থকেরা। সমর্থকদের ভেঙে পড়া দেখে মনে হয়েছিল যেন ইন্দ্রপতন হল আর্সেনালের।
পরে অবশ্য সেই ক্ষত ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠেছিলেন সমর্থকেরা। এখন দেখার দীর্ঘ ২২ বছরে গার্নারদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী, প্রতিটি মুহূর্তের সক্ষী আর্সেন ওয়েঙ্গারের ছেড়ে যাওয়াটা কী ভাবে সামাল দেয় আর্সেনাল ক্লাব কর্তৃপক্ষ।