এশিয়ান কাপ ২০১৯: ট্রফি জেতার প্রধান দাবিদার কারা - কত দূর এগোতে পারে 'নীল বাঘ'রা
এএফসি এশিয়ান কাপ ২০১৯-এ জেতার সেরা ৪ দাবিদার কারা, এছাড়া জেনে নিন কতদূর যেতে পারে ভারত।
এএফসি এশিয়ান কাপ ২০১৯ শুরু হতে আর মাত্র দুইদিন বাকি। তারপরই এই মহাদেশের সেরা ২৪ টি দল সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মাটিতে নেমে পড়বে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইতে। টুর্নামেন্টের ১৭তম সংস্করণে দলগুলিকে চারটি করে দলের ছয়টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপের সেরা দুটি দল ও সব গ্রুপ মিলিয়ে সেরা চারটি তৃতীয় স্থানের দল নিয়ে হবে পরের রাউন্ডের খেলা।
এশিয়ান
কাপে
অস্ট্রেলিয়া,
জাপানের
মতো
এশিয়
ফুটবল
শক্তিগুলির
পাশাপাশি
এবার
খেলছে
ভারত
বা
থাইল্যান্ডের
মতো
অতীতের
বেশ
কয়েকটি
শক্তিশালী
দলও।
বিশ্বকাপ
২০১৮-এর
পর
এই
প্রথম
একটি
বড়
ফুটবল
টুর্নামেন্ট
হতে
চলেছে।
বিশ্বকাপে
এশিয়
দলগুলি
ফুটবলপ্রেমীদের
মন
জিতে
নিয়েছিল।
আগামী
কয়েকটাদিন
ফুটবল-বিশ্বের
নজর
থাকবে
এই
টুর্নামেন্টের
দিকেই।
টুর্নামেন্ট
শুরুর
আগে
দেখে
নেওয়া
যাক,
এশিয়ায়
শ্রেষ্ঠত্ব
প্রমাণের
লড়াইয়ে
কোন
কোন
দলকে
এগিয়ে
আছে।
অস্ট্রেলিয়া
ওশিয়ানিয়া কনফেডারেশন থেকে এএফসি-তে আসার পর এই নিয়ে চতুর্থবার এশিুয়া কাপে অংশ নিচ্ছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ২০১৮ বিশ্বকাপটা 'সকারু'দের ভাল যায়নি। ফ্রান্স ও পেরুর বিরুদ্ধে হেরে ও ডেনমার্কের বিরুদ্ধে ড্র করে বিদায় নিতে হয়েছিল গ্রুপ স্তর থেকেই।
তারপর থেকে অবশ্য তাদের দলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। টিম কাহিল অবসর নিয়েছেন। দ্বিতীয়বারের জন্য সকারুদের কোচিং-এর জায়িত্ব নিয়েছেন গ্রাহাম আর্নল্ড। ২০০৭ সালে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া এই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার সময় তিনিই ছিলেন অন্তর্বর্তিকালীন কোচ। এবারে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে লেবানন ও কুয়েতের বিরুদ্ধে সহজেই জিতেছে অস্ট্রেলিয় ফুটবল দল। আর দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ম্য়াচ ড্র হয়েছে।
তবে টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র কয়েকিন আগে তাদের তারকা মিডফিল্ডার ইপিএল-এ খেলা মুনি হাঁটুর চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছেন দল থেকে।
তারকা - ম্যাথু রায়ান, মাসিমো লুয়োঙ্গো
দক্ষিণ কোরিয়া
অস্ট্রেলিয়ার মতোই রাশিয়া বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে না পারলেও দক্ষিণ কোরিয়া গ্রুপের শেষ ম্যাচে, তখনকার বিশ্বচ্য়াম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে ছিটকে দিয়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে।
১৯৫৬ ও ১৯৬০ সালে পর পর দুবার এশিয়ান কাপ জেতার পর থেকে আর একবারও এই টুর্নামেন্টে চ্য়াম্পিয়ন হতে পারেনি তারা। তবে শেষ তিনবারই প্রথম তিন দলের মধ্যে ছিল। ২০১৫ সালে ফাইনালে তাদের পরাজিত করেই চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া।
বিশঅবকাপের পর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে কোস্টা রিকা, উরুগুয়ের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। ড্র করেছে চিলি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। বিশ্বকাপে মেক্সিকো ম্যাচের পর থেকে টানা ৭ ম্য়াচ তারা অপরাজেয়।
তারকা - হিউং-মিন সন, নাম তায়ে-হি
সিরিয়া
ফিফা ক্রমতালিকা অনুযায়ী এশিয়ায় ষষ্ঠ সেরা দল সিরিয়া। রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট তাদের অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্লেঅফে দুই লেগ মিলিয়ে তারা ৩-২ ফলে হেরেছিল। এই নিয়ে ৬বার তারা এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলছে। ২০১৫ সালে তারা যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি।
কিন্তু, তারপর থেকে জার্মান কোচ বার্নড স্টেঞ্জ-এর ছেলেরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর আগের একবারও গ্রুপ স্তরের বাধা টপকাতে না পারলেও এই বার টুর্নামেন্ট জয়ের ব্যাপারে তাদেরকেই 'কালো ঘোড়া' ধরা হচ্ছে।
তারকা - আল সোমাহ, ওমর খ্রিবিন
জাপান
টুর্নামেন্টে ৪ বারের জয়ী জাপান এই নিয়ে নবমবার খেলছে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে। তারাই এবার কাপ জেতার ব্য়াপারে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে ইউএই-এর বিরুদ্ধে পেনাল্টি শুটআউটে পরাজিত হয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ব্লু সামুরাইদের।
২০১৮ বিশ্বকাপে কিন্তু এশিয় দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভাল প্রদর্শন ছিল তাদেরই। কোচ হাজিমে মরিয়াসুর দল গ্রুপের বাধা কাটিয়ে শেষ ষোলয় পৌঁছে গিয়েছিল। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে পেনাল্টি শুটআউটে ছিটকে যেতে হয়।
তারপর থেকে ফিফা ফ্রেন্ডলিগুলিতে দুর্দান্ত পারফরম্য়ান্সে একের পর ঝলসে দিয়েছে কোস্টা রিকা, উরুগুয়ে, পানামা ও কিরিজিস্তান-কে। একমাত্র ড্র করেছে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে।
তারকা - মায়া ইয়োশিদা, উইয়া ওসাকো
কত দূর এগোতে পারে ভারত?
এই নিয়ে চতুর্থবার ভারত এই টুর্নামেন্টের মূলপর্বে উঠেছে। এর আগে ১৯৬৪, ১৯৮৪ ও শেষবার ২০১১ সালে এই প্রতিয়োগিতায় খেলার সুযোগ পেয়েছিল ভারত। ৬৪ সালে ৪ দলের টুর্নামেন্টে ভারত রানার-আপ হয়েছিল। ১৯৮৪তে একটিও গোল না করে একটি মাত্র ম্য়াচ ড্র করে গ্রুপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল। ২০১১-তে গোল করতে পারলেও গ্রুপের সবকটি ম্যাচেই হেরেছিল ভারত।
গত ৩ বছরে অবশ্য কোচ কনস্টানটাইনের অধীনে অনেকটাই উন্নতি করেছে ভারতীয় ফুটবল দল। বর্তমানে ফিফা ক্রমতালিরকায় ৯৭তম স্তানে রয়েছে ব্লু টাইগার্সরা। বস্তুত ভারত তাদের গ্রুপে ক্রম অনুযায়ী ইউএই-এর পরেই আছে। কিন্তু ক্রম দিয়ে তো টুর্নামেন্ট জেতা যায় না। কাজেই পরের রাউন্ডে ওঠাটা বেশ শক্ত সুনীলদের পক্ষে। থাইল্য়ান্ড ছাড়া বাকি দুটি ম্য়াচই অত্যন্ত কঠিন হতে চলেছে।
প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল যাবে পরের রাউন্ডে। আমিরশাহিকেই ভারতের গ্রুপের সেরা দল মনে করা হচ্ছে। অবশ্য ভারত তৃতীয় হলেও একটা সম্ভাবনা থাকবে শেষ ষোলয় ওঠার, কারণ সেরা ৪টি তৃতীয় স্থানাধিকারী দলও যাবে নকআউট পর্বে। তবে তার বেশি এগনো এখনই ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়।