শক্তির কাছে হার মানছে শিল্প! পরপর চারটি বিশ্বকাপে ইউরোপের দলের কাছে হেরে বিদায় ব্রাজিলের
দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শিল্প কি তবে ইউরোপের পাওয়ার ফুটবলের কাছে হেরে যাচ্ছে? এই প্রশ্নটা অবশ্য আজকের নয়।
দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শিল্প কি তবে ইউরোপের পাওয়ার ফুটবলের কাছে হেরে যাচ্ছে? এই প্রশ্নটা অবশ্য আজকের নয়। বহুদিন ধরেই ফুটবল মহলে ঘোরাফেরা করছে। ইউরোপের ফুটবল গত কয়েক দশকে যেভাবে উত্থান ঘটিয়েছে, তার সামনে অন্য মহাদেশের দলগুলি ক্রমেই যেন পিছিয়ে পড়ছে।
বিশ্বের সেরা লিগগুলি যেমন প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, সিরি এ খেলা হয় ইউরোপের দেশে। সেখানে সারা পৃথিবী থেকে সেরা ফুটবলাররা এসে জড়ো হন, ফুটবল খেলেন। বলতে গেলে ফুটবলকে এক অন্য পর্যায়ে নিয়ে যান। আর সেখানে অন্য মহাদেশগুলিতে ফুটবল লিগগুলি ততটা জনপ্রিয়তা ও উচ্চতায় পৌঁছতে পারেনি। ইউরোপের লিগে যত সংখ্যায় বিশ্বমানের খেলোয়াড়রা খেলেন তার সিকিভাগও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা বা এশিয়ার দেশগুলির বিভিন্ন ক্লাব ফুটবলে দেখা যায় না।
ফলে কারণ যাই থাকুক, ব্যবধান ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ব্রাজিলই তার হাতেগরম প্রমাণ। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা পরপর চারটি বিশ্বকাপে ইউরোপর দলগুলির কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে।
২০০৬ সালে ফ্রান্সের কাছে, ২০১০ সালে নেদারল্যান্ডসের কাছে, ২০১৪ সালে জার্মানির কাছে ও ২০১৮ সালে বেলজিয়ামের কাছে হেরে ব্রাজিলকে বিদায় নিতে হল। আর্জেন্তিনা, উরুগুয়ে, মেক্সিকো, চিলে-র মতো দলগুলির অবস্থাও একইরকম।
একটা সময়ে পেলে, জিকো, সক্রেটিসরা ফুটবল বিশ্ব মাতিয়ে রেখেছিলেন স্কিল ফুটবল দিয়ে। তারপরে মারাদোনার মতো ফুটবলার সেই স্কিলকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন একক দক্ষতায়। তবে ইউরোপের ফুটবল সার্বিকভাবে এগিয়েছে। ফলে ব্যক্তিগত স্কিল দেখতে ভালো লাগলেও টিম পারফরম্যান্সে ম্যাচ বের করে নিচ্ছে ইউরোপের টোটাল ফুটবল।
দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলি কোপা আমেরিকার বাইরে উঠতে পারছে না। ভালো খেলোয়াড়রা ইউরোপের মাটিতে খেললেও দল হিসাবে ইউরোপীয় দেশগুলির বিরুদ্ধে খেলতে নামলেই দক্ষিণ আমেরিকার ছোট ফুটবল শক্তি তো বটেই, ব্রাজিল-আর্জেন্তিনার মতো ফুটবল কৌলিন্য জড়িয়ে থাকা দলগুলিও মুখ থুবড়ে পড়ছে। তাই বারবার কোনও এক কোর্তোইস, কোনও এক এমবাপের পাওয়ার ফুটবলে মেসি-নেইমাররা হারিয়ে যাচ্ছেন দল নিয়ে। স্কিলকে ডজ করে পাওয়ার ফুটবল সিংহাসনে চড়ে বসেছে।