যেতে যেতে সম্মান বজায় রাখার চেষ্টা কোস্টারিকার, শেষ ষোলয় পৌঁছল সুইৎজারল্যান্ড
লাতিন আমেরিকান শৈল্পিক ফুটবলের ঘরানায় যেন ফুল ফোঁটান কোস্টারিকানরা। কিন্তু, যে দুরন্ত, আকর্ষণীয় ফুটবলের জন্য কোস্টারিকা পরিচিত তার ছিঁটেফোঁটা এবারের বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচে দেখা যায়নি।
লাতিন আমেরিকান শৈল্পিক ফুটবলের ঘরানায় যেন ফুল ফোঁটান কোস্টারিকানরা। কিন্তু, যে দুরন্ত, আকর্ষণীয় ফুটবলের জন্য কোস্টারিকা পরিচিত তার ছিঁটেফোঁটা এবারের বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচে দেখা যায়নি। ফলে, রাশিয়া বিশ্বকাপের আসর থেকে কোস্টারিকার বিদায় ছিল নিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে বুধবারের ম্যাচ ছিল কোস্টারিকা দলের কাছে হারানো সম্মান ফিরে পাওয়ার একটা প্ল্যাটফর্ম মাত্র।
এই পরীক্ষায় ভালভাবেই উতরে গেল কোস্টারিকা। এমন ফুটবল যদি তাঁরা বিশ্বকাপে প্রথম দু'টি ম্যাচে খেলতে পারত তাহলে হয়তো এত সহজে বিদায় নিতে হত না। কিন্তু, গ্রুপ ই-র শেষ ম্যাচে কোস্টারিকা দেখিয়ে দিল তাঁদের উত্তেজনায় ভরপুর ফুটবলের নিদর্শন। কোস্টারিকা যেমন সম্মান লড়াইয়ের জান-প্রাণ দিয়ে দিল তেমনি পরিকল্পিত ফুটবল খেলে এই গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসাবে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল সুইৎজারল্যান্ড।
এদিন খেলার শুরুর মুহূর্ত থেকে আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণ শুরু করেছিল দুই দলই। গত দুটি ম্যাচে হতশ্রী পারফরম্যান্সে কোস্টারিকা ফুটবল দলের বিরুদ্ধে স্বদেশের সমর্থকরাই প্রকাশ্যে বিষেদ্গার করেছে। এমনকী, গালি-গালাজ করে কোস্টারিকার জাতীয় ফুটবল দল সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে ছেয়ে গিয়েছে। সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধেও যে কোস্টারিকা দলটি কিছু করে দেখাবে এমন আশাও বুধবার বেলা পর্যন্ত কেউ পোষণ করছিলেন না। উল্টে নানা-ধরনের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা হয় কোস্টারিকা দলটিকে নিয়ে। সুইৎজারল্যান্ড দলটি নিয়ে অবশ্যে তেমন কোনও হইচই ছিল না। ইউরোপের দলটি পরিকল্পিত ফুটবল খেলেই গ্রুপ লিগের প্রথম দুটি ম্যাচে যথেষ্ট পয়েন্ট ঝুলিতে সংগ্রহ করে রেখেছিল। এবার দরকার ছিল, অন্তত একটি ড্র। তাহলেই রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলয় যাওয়ার রাস্তা খোলা থাকত।
অবশ্য বুধবার খেলা শুরু হতেই একে অপরের বক্সে হানা দিতে থাকে। এই সময় কোস্টারিকা বেশি করে সুইজারল্যান্ডের বক্সে হানা দিলেও সুইস গোলকিপারের দুরন্ত কিপিং-এ বল জালেই ঢোকেনি। এই সময় কোস্টারিকাকে অনেকবেশি বিপজ্জনক দেখাচ্ছিল। কিন্তু ৩১ মিনিটে কোস্টারিকার জালে বল ঢুকিয়ে সুইৎজারল্যান্ডকে এগিয়ে দেন ডিজেমেইলি বি। এরপর কোস্টারিকা একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও তা স্কোরে পরিবর্তিত হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার পর ৫৬ মিনিটে কোস্টারিকার ওয়াটসন কে দুরন্ত গোল করে সমতা ফেরান। আক্রমণ ও প্রতিআক্রমণে জমে ওঠে খেলাও। ৭১ মিনিটে সুইৎজারল্যান্ডের এক ফুটবলার হলুদ কার্ডও দেখেন। ৮৮ মিনিটে গোল করে ড্রিমিক জে সুইৎজারল্যান্ডের পক্ষে ব্যবধান বাড়ান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ৯০ মিনিটে পেনাল্টি পায় কোস্টারিকা। তাদের ফুটবলার ব্রায়ান রুইজের মারা পেনাল্টিতে বলটি গোলপোস্টে লেগে ফেরার পথে সুইৎজারল্যান্ডের গোলকিপার জন সোমারের মাথায় লেগে গোলে ঢুকে যায়। ফলতই দুর্ভাগ্যবশত সুইৎজারল্যান্ডের প্রায় জেতা ম্য়াচ ড্র হয়ে যায়। কিন্তু, অন্য ম্যাচে ব্রাজিল তাদের প্রতিপক্ষ সার্বিয়াকে হারানোয় সুইৎজারল্যান্ডের শেষ ষোলয় ঢুকে পড়ার সুযোগ পেয়ে যায়।